Index.html

<!DOCTYPE html>
<html lang="en">
<head>
    <meta charset="UTF-8">
    <meta name="viewport" content="width=device-width, initial-scale=1.0">
    <title>কুরআন-সর্বোত্তম তথ্যভাণ্ডার</title>
    <link rel="stylesheet" href="Style.css">
    <script src="script.js" defer></script>  
   <link rel="icon" href="LogoTitle.png" type="image/x-icon">
</head> 
<body>
   <div id="container">
   </div>
   <nav class="logo">
      <img src="LogoTitle.png" class="pic">
      <img src="Newlogo1.png" class="image">
      <nav><ul id="list">
         <li>    
            <div class="search-wrapper">        
            <input type="text" placeholder="কি জানতে চাচ্ছেন?" class="button" id="search0" onkeyup="search()">
            <img src="Search-icon1.svg" width="24px" height="24px" class="srch" id="srch0">
            <img src="Cross.svg" width="13px" height="13px" class="close">   
         </div>
            <div class="hr"></div>
            </li>       
         <li><a href="https://quraanshareef.org">কুরআন</a></li>
         <div class="hr"></div>
         <li><a href="https://islamqa.info/en">প্রশ্নোত্তর</a></li>
         <div class="hr"></div>
         <li><a href="mailto:armtrinity999@gmail.com" target="_blank">তথ্য সংযোজন</a></li>
         <div class="hr"></div>
         <li id="light"><abbr title="Light Mode"><a href="Index_v2.html" target="_self"><img src="Light.svg" width="24px" height="24px" alt="Light Mode"></a></abbr></li>
      </ul>
   </nav>
   <div class="menu">
   <img src="menu1.svg" class="icon" onclick="togglemenu()">
</div>
   </nav>
   </div>
   <div id="title-box"><p class="title">হাদীস কর্ণার</p></div>
   <div class="quote">
      
      <div class="line"><p>১। দুটি কালেমা এমন যা যবানে অতি হালকা অথচ মীযানে ভারী আর রহমানের(আল্লাহ্) এর নিকট খুব পছন্দনীয়;তা হলোঃ সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযীম।</p><p> [সহিহ বুখারি,মুসলিম]</p></div>
      <div class="line" id="ni"><p>২। মুসলিম ব্যাক্তির উপর যে সকল যাতনা, রোগ ব্যাধি, উদ্দেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমন কি যে কাটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহ সমুহ ক্ষমা করে দেন।</p><p> [সহিহ বুখারি,মুসলিম]</p></div>
      <div class="line" id="san"><p>৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর হবে এই অশংকা যদি না হত তা হলে আমি প্রত্যেক সালাতের সময় মিসওয়াক করতে তাদের নির্দেশ দিতাম।</p><p> [সহিহ বুখারি,মুসলিম,তিরমিযি]</p></div>
      <div class="line" id="four"><p>৪। ইযারের বা পরিধেয় বস্ত্রের যে অংশ পায়ের গোড়ালির নীচে থাকবে, সে অংশ জাহান্নামে যাবে।</p><p> [সহিহ বুখারি]</p></div>
      <div class="line" id="five"><p>৫। কুরআনের মধ্যে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে যেটি কারো পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে মাফ করে দেয়া হয়। এ সূরাটি হল তাবারাকাল্লায়ী বিয়াদিহিল মুলক।</p><p>এ সূরাটি প্রতিরোধকারী নাজাত দানকারী। এটা কবরের আযাব হতে তিলাওয়াতকারীকে নাজাত দান করে।</p><p>[তিরমিযি,মিশকাত(হাসান)]</p></div>
      <div class="line" id="six"><p>৬। তোমাদের কোন ব্যক্তি হারানো পশু পাওয়ার কারণে যে পরিমাণ খুশী হয়, তোমাদের কারোর তাওবার কারণে আল্লাহ তাআলা এর চেয়েও অধিক খুশী হন।</p><p>[সহিহ মুসলিম]</p></div>
      <div class="line" id="seven"><p>৭। যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ(সঃ) এর উপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন।</p><p>[সহিহ মুসলিম,নাসাই,তিরমিযি]</p></div>
      <div class="line" id="eight"><p>৮। সিজদার অবস্থায়ই বান্দা তার রবের অধিক নিকটবর্তী হয়ে থাকে। অতএব, তোমরা (সিজদায়) অধিক পরিমাণ দু’আ পড়বে।</p>[সহিহ মুসলিম]</div>
      <div class="line" id="nine"><p>৯। দুনিয়া মুমিনের জন্য কয়েদখানা [কারাগার] এবং কাফিরের জন্য জান্নাততুল্য।</p><p>[সহিহ মুসলিম]</p></div>
      <div class="line" id="ten"><p>১০। পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধেক অংশ। আলহামদু লিল্লা-হ’ মিযানের পরিমাপকে পরিপূর্ণ করে দিবে এবং "সুবহানাল্লা-হি ওয়াল হামদুলিল্লা-হ" আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিপূর্ণ করে দিবে।</p><p>[সহিহ মুসলিম]</p></div>
      <div class="line" id="eleven"><p>১১। যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে।</p><p>[৭ঃ২০১]</p></div>
   </div>
   <div class="quran">
      <div class="cards">
         <input type="radio" name="sld" id="c1" checked>
         <label for="c1" class="card"><div class="row"><div class="number">১</div><div class="description">যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে।[৭ঃ২০১]   
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c2">
         <label for="c2" class="card"><div class="row"><div class="number">২</div>
            <div class="description">যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে।[৭ঃ২০১]   
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c3">
         <label for="c3" class="card"><div class="row"><div class="number">৩</div>
            <div class="description">আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না [২ঃ২৮৬]   
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c4">
         <label for="c4" class="card"><div class="row"><div class="number">৪</div>
            <div class="description">ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।[২ঃ৪৫] 
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c5">
         <label for="c5" class="card"><div class="row"><div class="number">৫</div>
         <div class="description">পিতা-মাতা, আত্নীয়-স্বজন, এতীম ও দীন-দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দেবে[২ঃ৮৩] 
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c6">
         <label for="c6" class="card"><div class="row"><div class="number">৬</div>
            <div class="description"> নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।[৯৪ঃ৬]
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c7">
         <label for="c7" class="card"><div class="row"><div class="number">৭</div>
            <div class="description"> বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।[৩৯ঃ৫৩]
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c8">
         <label for="c8" class="card"><div class="row"><div class="number">৮</div>
            <div class="description"> মনে রেখো যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।[১০ঃ৬২]
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c9">
         <label for="c9" class="card"><div class="row"><div class="number">৯</div>
            <div class="description"> সুতরাং তোমরা আমাকে(আল্লাহ্‌কে) স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না।[২ঃ১৫২]
         </div>
      </div>
      </label>
      <input type="radio" name="sld" id="c10">
         <label for="c10" class="card"><div class="row"><div class="number">১০</div>
            <div class="description"> পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পরকালের আবাস পরহেযগারদের জন্যে শ্রেষ্টতর। তোমরা কি বুঝ না?[৬ঃ৩২]
         </div>
      </div>
      </label>
      </div>
   </div>
   </div>
   <ul class="accordion" id="accordion">   
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="first">
         <label for="first">আল্লাহ্‌ এর আকৃতি <div class="dsp">the,allah,er,of,shape,akriti</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            আমাদের অধিকাংশ মানুষের ধারণা এই যে আল্লাহ্‌ নিরাকার। কিন্তু এই ধারণাটি কেবল আমাদের
            জ্ঞানের অভাবের কারণেই পোষণ করে থাকি। আল্লাহ্‌ তায়ালা স্বয়ং কুরআন মাজিদে বলেছেনঃ 
         </p>
         <p class="one">
            وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ ۚ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ
         </p>
         <p class="one1">
         <u>অর্থ-</u>  তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে বোঝেনি। <span class="highlight">কেয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমান সমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে।</span> তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে। [৩৯ঃ৬৭]
         </p>
         <p class="two">
            قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَن تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ ۖ أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ الْعَالِينَ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u>আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, <span class="highlight">আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি,</span>  তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?[৩৮ঃ৭৫]
         </p>
         <p>উক্ত আয়াত দুটি হতে আমরা বুঝতে পারি যে আল্লাহ্‌ তায়ালার<span class="highlight"> দুই হাত রয়েছে।</span> অর্থাৎ তিনি নিরাকার নন। বরং তাঁর একটি নির্দিষ্ট আকৃতি রয়েছে। কিন্তু এই আকৃতি কস্মিনকালেও মানুষ কল্পনা করতে পারবে না। কেননা আল্লাহ্‌ তায়ালা সেই ক্ষমতা আমাদেরকে দেননি। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেনঃ</p>
         <p class="three">
            فَاطِرُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَمِنَ الْأَنْعَامِ أَزْوَاجًا ۖ يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ ۚ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ۖ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
         </p>
         <p class="two1">
           <u>অর্থ-</u> তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুস্পদ জন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন।<span class="highlight"> কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়।</span> তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।[৪২ঃ১১]
         </p>
         <p>
            وَلَمَّا جَاءَ مُوسَىٰ لِمِيقَاتِنَا وَكَلَّمَهُ رَبُّهُ قَالَ رَبِّ أَرِنِي أَنظُرْ إِلَيْكَ ۚ قَالَ لَن تَرَانِي وَلَـٰكِنِ انظُرْ إِلَى الْجَبَلِ فَإِنِ اسْتَقَرَّ مَكَانَهُ فَسَوْفَ تَرَانِي ۚ فَلَمَّا تَجَلَّىٰ رَبُّهُ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُ دَكًّا وَخَرَّ مُوسَىٰ صَعِقًا ۚ فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ سُبْحَانَكَ تُبْتُ إِلَيْكَ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُؤْمِنِينَ
         </p>
         <p class="one1">
           <u>অর্থ-</u> তারপর মূসা যখন আমার প্রতিশ্রুত সময় অনুযায়ী এসে হাযির হলেন এবং তাঁর সাথে তার পরওয়ারদেগার কথা বললেন, তখন তিনি বললেন, হে আমার প্রভু, তোমার দীদার আমাকে দাও, যেন আমি তোমাকে দেখতে পাই। তিনি বললেন, <span class="highlight"> আমাকে কস্মিনকালেও দেখতে পাবে না, তবে তুমি পাহাড়ের দিকে দেখতে থাক, সেটি যদি স্বস্থানে দঁড়িয়ে থাকে তবে তুমিও আমাকে দেখতে পাবে। তারপর যখন তার পরওয়ারদগার পাহাড়ের উপর আপন জ্যোতির বিকিরণ ঘটালেন, সেটিকে বিধ্বস্ত করে দিলেন এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন।</span> অতঃপর যখন তাঁর জ্ঞান ফিরে এল; বললেন, হে প্রভু! তোমার সত্তা পবিত্র, তোমার দরবারে আমি তওবা করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি।[৭ঃ১৪৩]
         </p>
         <p>
            অর্থাৎ, আল্লাহ্‌ তায়ালার একটি নির্দিষ্ট আকৃতি রয়েছে কিন্তু মানুষ তা লক্ষ করতে অথবা কল্পনা করতে অক্ষম।
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="second">
         <label for="second">আল্লাহ্‌ এর অবস্থান<div class="dsp">where,allah,is,er obosthans</div></label>
      <div class="content">
         <p>
           এই প্রশ্নেরও স্পষ্ট উত্তর রয়েছে কুরআন শরীফে। আমরা কম বেশি সকলেই মেনে থাকি যে আল্লাহ্‌ তায়ালা সকল স্থানেই বিদ্যমান। কিন্তু এই চিন্তাধারার পটভূমিটি কোথায়? এজন্য আমাদের আসমানি কিতাবের কিছু আয়াত পড়তে হবেঃ
         </p>
      <p class="one">إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ<p>
       </p>   
       <p class="two1"><u>অর্থ-</u> নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন।<span class="highlight"> অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। </span>তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক।
</p>
        <p>
         আরশ শব্দটির সহজ অর্থ হচ্ছে 'সিংহাসন'। আল্লাহ্‌ তায়ালা অনাদিকাল হতে আরশের উপর সমাসীন রয়েছেন এবং কিয়ামতের দিনেও তিনি সেখানে অবস্থান করবেন। তাহলে কিভাবে কিনি জাগতিক বিষয়াদি পরিচালনা করেন? এ সম্পর্কে আল্লাহ্‌ বলেছেনঃ
        </p>
        <p class="one">
         يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ أَلْفَ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ
        </p>
        <p class="one1">
         <span class="highlight">অর্থ- তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কর্ম পরিচালনা করেন,</span> অতঃপর তা তাঁর কাছে পৌছবে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ তোমাদের গণনায় হাজার বছরের সমান।
        </p>
        <p class="two">
         فَاطِرُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَمِنَ الْأَنْعَامِ أَزْوَاجًا ۖ يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ ۚ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ۖ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِي
        </p>
        <p class="one1">
         <u>অর্থ-</u> তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুস্পদ জন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। <span class="highlight"> সব শুনেন, সব দেখেন।</span>
        </p>
        <p class="two">
         وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ
        </p>
        <p class="two1">
         <span class="highlight">অর্থ- তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে।</span>[২ঃ২৫৫] 
        </p>
        <p>
         সুতরাং, এই প্রশ্নের জবাব স্পষ্ট যে আল্লাহ্‌ তায়ালা সাত আসমানের উপরে তাঁর আরশ তথা সিংহাসনে অবস্থান করেন,তিনি সর্বশ্রোতা,সর্বদ্রষ্টা এবং সেখান থেকেই আসমান ও জমিনের সমস্ত বিষয়াদি পরিচালনা করেন।
        </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="third">
         <label for="third">সমগ্র মানবজাতির সৃষ্টি<div class="dsp">somogro,whole manobjatir,mankind,soul,srishti,creation</div></label>
      <div class="content">
        <p>
           সর্বপ্রথম মানব হচ্ছেন আদম(আঃ)। তাঁকে আল্লাহ্‌ তায়ালা নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। এবং তাঁর থেকেই সৃষ্টি করেছেন কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষের আগমন ঘটবে তাদের সকলকে। পবিত্র কিতাবের আয়াতঃ
        </p>
        <p class="one">
         وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِن بَنِي آدَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ ۖ قَالُوا بَلَىٰ ۛ شَهِدْنَا ۛ أَن تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَـٰذَا غَافِلِينَ
        </p>
        <p class="one1">
         অর্থ- <span class="highlight">আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্টদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে</span> এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেন, আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই ? তারা বলল, অবশ্যই, আমরা অঙ্গীকার করছি। আবার না কেয়ামতের দিন বলতে শুরু কর যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।[৭ঃ১৭২]
        </p>
        <p>
           অর্থাৎ, বনী আদম তথা আদম(আঃ) এর বংশধরের পৃষ্ঠদেশ হতে সমগ্র মানবজাতির 'রূহ' বের করা হয়েছে। সমস্ত রূহ দুনিয়ায় আগমনের পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত বেহেশতে অবস্থান করে যেখানে আদম(আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল।
        </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="fourth">
         <label for="fourth">আমাদের প্রদত্ত জ্ঞান<div class="dsp">amader,our prodotto,given,gyan,knowledge</div></label>
      <div class="content">
     <p>আল্লাহ্‌ তায়ালা সর্বপ্রথম মানব আদম(আঃ) কে সমস্ত জ্ঞান দান করেছিলেন। তিনি বলেনঃ
      </p>
      <p class="one">
         وَعَلَّمَ آدَمَ الْأَسْمَاءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى الْمَلَائِكَةِ فَقَالَ أَنبِئُونِي بِأَسْمَاءِ هَـٰؤُلَاءِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
      </p>
      <p class="one1">
         <u>অর্থ-</u> আর আল্লাহ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক।
      </p>
      <p>
         قَالُوا سُبْحَانَكَ لَا عِلْمَ لَنَا إِلَّا مَا عَلَّمْتَنَا ۖ إِنَّكَ أَنتَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ
      </p>
      <p class="one1">
         <u>অর্থ-</u> তারা বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।
      </p>
      <p>
         قَالَ يَا آدَمُ أَنبِئْهُم بِأَسْمَائِهِمْ ۖ فَلَمَّا أَنبَأَهُم بِأَسْمَائِهِمْ قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ إِنِّي أَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَأَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا كُنتُمْ تَكْتُمُونَ
      </p>
      <p class="two1">
         <u>অর্থ-</u> তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সে সবের নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ কর, আর যা তোমরা গোপন কর!
      </p>
      <p>আয়াতগুলো হতে বোঝা যায় আদম(আঃ) কে আল্লাহ্‌ তায়ালা সমস্ত জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং আদম(আঃ) তাঁর সন্তানদেরকে তা শিখিয়েছিলেন।
      </p>
   </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="fifth">
         <label for="fifth">সর্বপ্রথম ধর্ম ইসলাম<div class="dsp">the,sorboprothom,first,dhormo,religion,islam</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            মুসলিম হিসেবে আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি যে আদম(আঃ) সর্বপ্রথম মানব ও আল্লাহ্‌ তায়ালা তাঁকে এবং সমগ্র মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র 
            তাঁর ইবাদতের জন্য। বলা বাহুল্য যে এক আল্লাহ্‌ এর ইবাদত করাই ইসলাম ধর্মের মূলনীতি।
         </p>
         <p class="one">
            إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ ۗ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۗ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত।[৩:১৯]
         </p>
            <p> সৃষ্টির শুরু হতে যুগে যুগে আল্লাহ্‌ তায়ালা মানুষের হেদায়াতের জন্য আমাদের মাঝে নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন।</p>
            <p> কুরআন মাজিদে বর্ণিত
            সর্বপ্রথম নবীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাম-আদম(আঃ), ইদ্রীস(আঃ), নূহ(আঃ) প্রমুখ। তন্মধ্যে নূহ(আঃ) ছিলেন সর্বপ্রথম রাসুল যার নিকট আল্লাহ্‌ প্রদত্ত 
            ইসলামিক বিধান নাযিল হয়েছিল। নূহ(আঃ) সম্পর্কে কুরআন এর কিছু আয়াতঃ
         </p>
         <p class="one">
            إِنَّا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ كَمَا أَوْحَيْنَا إِلَىٰ نُوحٍ وَالنَّبِيِّينَ مِن بَعْدِهِ ۚ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> আমি আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত নবী-রসূলের প্রতি যাঁরা তাঁর পরে প্রেরিত হয়েছেন।[৪ঃ১৬৩]
         </p>
         <p>
            لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَـٰهٍ غَيْرُهُ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি পাঠিয়েছি। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। আমি তোমাদের জন্যে একটি মহাদিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি।[৭ঃ৫৯]
         </p>
         <p>
            وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِ فَلَبِثَ فِيهِمْ أَلْفَ سَنَةٍ إِلَّا خَمْسِينَ عَامًا فَأَخَذَهُمُ الطُّوفَانُ وَهُمْ ظَالِمُونَ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন। অতঃপর তাদেরকে মহাপ্লাবণ গ্রাস করেছিল। তারা ছিল পাপী।[২৯ঃ১৪]
         </p>
         <p>
            شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ ۖ أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ ۚ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ ۚ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নিধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। আপনি মূশরেকদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আমন্ত্রণ জানান, তা তাদের কাছে দুঃসাধ্য বলে মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয়, তাকে পথ প্রদর্শন করেন।[৪২ঃ১৩]
         </p>
         <p>নূহ(আঃ) এর যুগের মহাপ্লাবনের পর নতুন করে আল্লাহ্‌ এর একত্ববাদে বিশ্বাসী এবং তাঁর ইবাদতকারি সম্প্রদায় গড়ে ওঠে। এরপর আবার মানুষ ধীরে ধীরে আল্লাহ্‌ কে ভুলে যায়। আল্লাহ্‌ এর প্রদত্ত বিধি-বিধানকে ভুলে যায়। ফলে পুনরায় পৃথিবীর বুকে আল্লাহ্‌ এর ধর্ম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার সৃষ্টি হয়।</p>
         <p> এভাবে যুগের পর যুগ আল্লাহ্‌ তায়ালা মানুষের মাঝে নবী প্রেরণ করেন তাদেরকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য যে তাদের রব একমাত্র আল্লাহ্‌ এবং তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে একমাত্র 
            তাঁরই ইবাদতের উদ্দেশ্যে। 

         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="sixth">
         <label for="sixth">কেন আমরা মুসলমান<div class="dsp">ken,amr,muslim,musol,mumi,why,are,we</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ حَقَّ جِهَادِهِ ۚ هُوَ اجْتَبَاكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ ۚ مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ ۚ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمِينَ مِن قَبْلُ وَفِي هَـٰذَا لِيَكُونَ الرَّسُولُ شَهِيدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ ۚ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَاعْتَصِمُوا بِاللَّهِ هُوَ مَوْلَاكُمْ ۖ فَنِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ
         </p>
         <p class="two1">
           অর্থ- তোমরা আল্লাহর জন্যে শ্রম স্বীকার কর যেভাবে শ্রম স্বীকার করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি।<span class="highlight"> তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে কায়েম থাক। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও, যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে। সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ কর।</span> তিনিই তোমাদের মালিক। অতএব তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।[২২ঃ৭৮]
         </p>
         <p>
            মুসলমান বা মুসলিম শব্দটির অর্থ হচ্ছে যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের অনুসরণ করে। আবার 'ইসলাম' শব্দের অর্থ হচ্ছে আত্মসমর্পণ ও আনুগত্য স্বীকার। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি এক আল্লাহ্‌ এর বিধি মোতাবেক আত্মসমর্পণ করে ও তাঁর আনুগত্য স্বীকার তথা আদেশ-নিষেধ মেনে চলে সেই 'মুসলিম'।
         </p>
         <p> 
            
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="seventh">
         <label for="seventh">সালাত কি<div class="dsp">salat,namaz ki</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            ইসলামে সর্বোত্তম ইবাদত সালাত। এই 'সালাত' শব্দটি নিয়ে অনেকেরই বিভ্রান্তি রয়েছে যারা ইসলাম এর বিষয়বস্তু নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পাননি।</p>
            <p> 'সালাত' শব্দের ব্যবহারভেদে একাধিক অর্থ 
            রয়েছে। তবে কুরআন মাজিদে এই শব্দটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে আল্লাহ্‌ এর ইবাদত অর্থে।</p>
            <p>
            আমরা যারা ভারতীয় উপমহাদেশে বাস করি তাদের মধ্যে প্রচলিত শব্দ হচ্ছে 'নামায'। এটি বাংলা শব্দ নয় আর আরবি শব্দও নয়। বরং এটি
            একটি ফারসি শব্দ। আমরা যেমন 'সাওম'-কে রোজা বলে তেমনি বলার সুবিধার্থে 'সালাত'-কে নামায বলে থাকি।</p>
            <p>
            কিছু মানুষ এই যুক্তি পেশ করে যে কুরআন এ 'নামায' বলতে কোনো শব্দ নাই। কুরআন শরীফ যেহেতু আরবী ভাষায় নাযিল হয়েছে
            তাই এখানে ফারসি শব্দ থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। বরং আমাদের খুজতে হবে এই ফারসি শব্দের মূলশব্দ। আর সেই শব্দটিই হচ্ছে 'সালাত'। আবার, এই শব্দের একাধিক অর্থ থাকায় কুরআন এ যে এটি নামায অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে তাঁর কিছু 
            প্রমাণ নিম্নরূপঃ   
         </p>
         <p class="one">
            وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> আর নামায কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাযে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।'[২ঃ৪৩]
         </p>
         <p class="two">
            وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ إِنْ خِفْتُمْ أَن يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ إِنَّ الْكَافِرِينَ كَانُوا لَكُمْ عَدُوًّا مُّبِينًا
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> যখন তোমরা কোন দেশ সফর কর, তখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।[৪ঃ১০১]
         </p>
         <p class="two">
            وَإِذَا كُنتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِّنْهُم مَّعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِن وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَىٰ لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ ۗ وَدَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ تَغْفُلُونَ عَنْ أَسْلِحَتِكُمْ وَأَمْتِعَتِكُمْ فَيَمِيلُونَ عَلَيْكُم مَّيْلَةً وَاحِدَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِن كَانَ بِكُمْ أَذًى مِّن مَّطَرٍ أَوْ كُنتُم مَّرْضَىٰ أَن تَضَعُوا أَسْلِحَتَكُمْ ۖ وَخُذُوا حِذْرَكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ أَعَدَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابًا مُّهِينًا
         </p>
         <p class="one1">
            <span class="highlight">অর্থ- যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেন, অতঃপর নামাযে দাঁড়ান, তখন যেন একদল দাঁড়ায় আপনার সাথে এবং তারা যেন স্বীয় অস্ত্র সাথে নেয়। অতঃপর যখন তারা সেজদা সম্পন্ন করে, তখন আপনার কাছ থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসে, যারা নামায পড়েনি।</span> অতঃপর তারা যেন আপনার সাথে নামায পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়। কাফেররা চায় যে, তোমরা কোন রূপে অসতর্ক থাক, যাতে তারা একযোগে তোমাদেরকে আক্রমণ করে বসে। যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও তবে স্বীয় অস্ত্র পরিত্যাগ করায় তোমাদের কোন গোনাহ নেই এবং সাথে নিয়ে নাও তোমাদের আত্নরক্ষার অস্ত্র। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের জন্যে অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।[৪:১০২]
         </p>
         <p class="two">
            فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلَاةَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمْ ۚ فَإِذَا اطْمَأْنَنتُمْ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ ۚ إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
         </p>
         <p class="one1">
           <span class="highlight">অর্থ- অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।</span>[৪ঃ১০৩]
         </p>
         <p class="two">
            يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ارْكَعُوا وَاسْجُدُوا وَاعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ۩
         </p>
         <p class="one1">
           <span class="highlight">অর্থ- হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর,</span> তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর এবং সৎকাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।[২২ঃ৭৭]
         </p>
         <p class="two">
            কিছু মানুষ এমনটাও বলে যে রুকু-সেজদা করা এটা কোনো নামায না। অথচ উপরোক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ্‌ তায়ালা স্পষ্ঠভাবে বলেছেন "নামাযে অবনত হও তাদের সাথে যারা অবনত হয়" তথা রুকু কর আর "হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর সেজদা কর"।</p>
            <p> এছাড়াও উল্লিখিত বাকি আয়াতগুলোতে আল্লাহ্‌ তায়ালা নামাযের
            আদেশ দিয়েছেন এবং সফর কিংবা বিপদে নামায হ্রাসের সুবিধাও দিয়েছেন।
         </p>
         <p>
            অতএব, সারাংশ এই যে প্রত্যেক মুসলমানের উপর নামায ফরজ তথা বাধ্যতামূলক এবং আমাদের পরম দয়াময় পালনকর্তা আমাদের জন্য সালাতকে সহজ করে দিয়েছেন।
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="eighth">
         <label for="eighth">পাঁচ ওয়াক্ত সালাত<div class="dsp">pac,sala,namaz,wak,waq,time,pray</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            কুরআন এ নামাযের অস্তিত্ব নিয়ে যেমন কিছু লোকের সন্দেহ রয়েছে তেমনি সেই নামাযের সময় নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। নামায দিনে পাঁচবার আদায় করতে হয় এটা কোথায় আছে? নিঃসন্দেহে এটা আমাদের পবিত্র গ্রন্থ 
            কুরআন শরীফেই রয়েছে। আর নামাযের সময়ের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ্‌ তায়ালা যে আয়াতসমূহ নাযিল করেছেন সেগুলো হলোঃ
         </p>
         <p class="one">
            وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِّنَ اللَّيْلِ ۚ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ۚ ذَٰلِكَ ذِكْرَىٰ لِلذَّاكِرِينَ
         </p>
         <p class="one1">
            <span class="highlight">অর্থ- আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে, এবং রাতের প্রান্তভাগে।</span> পূর্ণ কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটি এক মহা স্মারক।[১১ঃ১১৪]
         </p>
         <p>
            يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِيَسْتَأْذِنكُمُ الَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ وَالَّذِينَ لَمْ يَبْلُغُوا الْحُلُمَ مِنكُمْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ۚ مِّن قَبْلِ صَلَاةِ الْفَجْرِ وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَابَكُم مِّنَ الظَّهِيرَةِ وَمِن بَعْدِ صَلَاةِ الْعِشَاءِ ۚ ثَلَاثُ عَوْرَاتٍ لَّكُمْ ۚ لَيْسَ عَلَيْكُمْ وَلَا عَلَيْهِمْ جُنَاحٌ بَعْدَهُنَّ ۚ طَوَّافُونَ عَلَيْكُم بَعْضُكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ            
         </p>
         <p class="two1">
           <u>অর্থ-</u> হে মুমিনগণ! তোমাদের দাসদাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি<span class="highlight"> তারা যেন তিন সময়ে তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পর।</span> এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলার সময়। এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ বিবৃত করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।[২৪ঃ৫৮]
         </p>
         <p>
            أَقِمِ الصَّلَاةَ لِدُلُوكِ الشَّمْسِ إِلَىٰ غَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْآنَ الْفَجْرِ ۖ إِنَّ قُرْآنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম করুন এবং ফজরের কোরআন পাঠও। নিশ্চয় ফজরের কোরআন পাঠ মুখোমুখি হয়।[১৭ঃ৭৮]
         </p>
         <p class="three2">
            অর্থাৎ, সালাতের সময় ফজর বা ভোরবেলা,দিনের প্রথম প্রান্ত তথা দুপুর যখন সূর্য ঠিক মাথার উপর অবস্থান করে
             এবং দ্বিতীয় প্রান্ত যখন সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে ও কোনো বস্তুর ছায়া তার দৈর্ঘ্যের সমান হয়,
            সন্ধ্যা যখন সূর্য ঢলে পড়ে এবং তার লাল আভা দৃশ্যমান হয় আর রাতের প্রান্তভাগ যখন পুরোপুরি সূর্য ডুবে যায়।
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="ninth">
         <label for="ninth">সালাতের গুরুত্ব<div class="dsp">import,sala,namaz,pray,gurut</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ঈমান তথা আল্লাহ্‌ এবং তাঁর একত্ববাদে বিশ্বাস করা আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে সালাত। নিঃসন্দেহে সালাত প্রত্যেক মুসলিমের জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং দায়িত্ব। আল্লাহ্‌ আমাদের উপর সালাত ফরজ করেছেন আমাদেরকে কষ্ট দেবার জন্য নয় 
            বরং আমাদের স্বস্তির জন্য। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আমাদের উপর ফরয করা হয়েছে যেন আমরা আল্লাহ্‌ তায়ালাকে ভুলে না যাই।</p>
            <p> নিয়মিত সালাত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বান্দার অন্তর পবিত্র হয়,সময়ানুবর্তিতা লাভ হয়,বান্দা পাপকর্ম হতে বিরত থাকে।</p>
            <p> আল্লাহ্‌ তায়ালা সালাতের গুরুত্ব উল্লেখ 
            করে যে সকল আয়াত নাযিল করেছেন তার মধ্যে কয়েকটি পেশ করা হলোঃ
         </p>
         <p class="one">
            وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ نَسُوا اللَّهَ فَأَنسَاهُمْ أَنفُسَهُمْ ۚ أُولَـٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
         </p>
         <p class="two1">
           <u>অর্থ-</u> <span class="highlight">তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা আল্লাহ তা’আলাকে ভুলে গেছে।</span> ফলে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে আত্ন বিস্মৃত করে দিয়েছেন। তারাই অবাধ্য।[৫৯ঃ১৯]
         </p>
         <p>
            اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ ۖ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ ۗ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ ۗ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। <span class="highlight"> নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ।</span> আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।[২৯ঃ৪৫]
         </p>
         <p>
            وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ
         </p>
         <p class="two1">
           <u>অর্থ-</u> ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।[২ঃ৪৫]
         </p>
         <p>
            إِنَّ الْإِنسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا
            إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا
            وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا
            إِلَّا الْمُصَلِّينَ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে। যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে। আর যখন কল্যাণপ্রাপ্ত হয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়।<span class="highlight"> তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায় কারী।</span>[৭০ঃ১৯-২৩]
         </p>
         <p>
            وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ
            وَالَّذِينَ هُم بِشَهَادَاتِهِمْ قَائِمُونَ
            وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ
            أُولَـٰئِكَ فِي جَنَّاتٍ مُّكْرَمُونَ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> এবং যারা তাদের আমানত ও অঙ্গীকার রক্ষা করে এবং যারা তাদের সাক্ষ্যদানে সরল-নিষ্ঠাবান এবং<span class="highlight"> যারা তাদের নামাযে যত্নবান,তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে।</span>[৭০ঃ৩২-৩৫]
         </p>
         <p>
            كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ
            إِلَّا أَصْحَابَ الْيَمِينِ
            فِي جَنَّاتٍ يَتَسَاءَلُونَ
            عَنِ الْمُجْرِمِينَ
            مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ
            قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ
            وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِينَ
            وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ الْخَائِضِينَ
            وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّينِ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী;কিন্তু ডানদিকস্থরা,তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। অপরাধীদের সম্পর্কে বলবেঃ<span class="highlight">তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে? তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না,</span>অভাবগ্রস্তকে আহার্য্য দিতাম না,আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম।[৭৪ঃ৩৮-৪৫]
         </p>
         <p>
            এছাড়াও সালাত সম্পর্কে কিছু সহিহ হাদীসসমূহ হলোঃ
         </p>
         <p class="three">
            ১। হান্নাদ (রহঃ) ..... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ <span class="highlight">বান্দা ও কুফরের মাঝে ব্যবধান হল সালাত (নামায) পরিত্যাগ করা।</span>[সহিহ মুসলিম,তিরমিযি]
         </p>
         <p class="three">
            ২। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, <span class="highlight"> কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে সর্ব প্রথম হিসাব নেওয়া হবে সালাতের। যদি তা সঠিক বলে গণ্য হয়, তবে সে হবে কল্যাণপ্রাপ্ত ও সফলকাম। আর যদি তা সঠিক বলে গণ্য না হয়, তবে সে হবে অসফল ও ক্ষতিগ্রস্ত।</span> ফরযের মধ্যে যদি কোন ক্রটি দেখা যায়, তবে মহান প্রভু বলবেনঃ লক্ষ্য কর, আমার বান্দার কোন নফল আমল আছে কি? তা দিয়ে তার ফরযের যতটুকু ক্রটি আছে তা পূরণ করে দাও। পরে এতদনুসারেই হবে অন্যান্য সব আমলের অবস্থা।[ইবনু মাজাহ্‌,তিরমিযি]
         </p>
         <p class="three">
            ৩। আবূ আম্মার হুরায়ন ইবনু হুরায়ছ (রহঃ) ..... উম্মু ফরওয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল <span class="highlight">সবচেয়ে মর্যাদাবান আমল কোনটি? তিনি বলেছিলেন আওয়াল ওয়াক্তে(যখন সালাতের সময় শুরু) সালাত আদায় করা।</span>[সহিহ আবু দাউদ,মিশকাত,তিরমিযি]
         </p>
         <p class="three">
            ৪। আবূ বকর, মুহাম্মাদ ইাবন যানযাওয়ায়ই আল বাগদাদী (রহঃ) এবং আরো একধিক রাবী .... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ <span class="highlight">জান্নাতের চাবি হল সালাত আর সালাতের চাবি হল উযূ (ওযূ)।</span>[সহিহ তিরমিযি,মিশকাত]
         </p>
         <p class="three">
            ৫। আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন, ‘‘বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তার দেহে কোনোরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ <span class="highlight"> এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তা‘আলা (বান্দার) গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন।</span>[সহিহ বুখারি]
         </p>
         <p class="three">
            ৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেনঃ মেঘমুক্ত পূর্ণিমার রাতের চাঁদকে দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দেহ পোষণ কর? তাঁরা বললেন, না ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে কি তোমাদের কোন সন্দেহ আছে? সবাই বললেন, না। তখন তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে তোমারও আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, যে যার উপাসনা করত সে যেন তার অনুসরণ করে।
            <p class="three1">
            তাই তাদের কেউ সূর্যের অনুসরণ করবে, কেউ চন্দ্রের অনুসরণ করবে, কেউ তাগুতের অনুসরণ করবে। আর অবশিষ্ট থাকবে শুধুমাত্র এ উম্মাহ, তবে তাদের সাথে মুনাফিকরাও থাকবে। তাঁদের মাঝে এ সময় আল্লাহ্ তা’আলা শুভাগমন করবেন এবং বলবেনঃ “আমি তোমাদের রব। তখন তারা বলবে, যতক্ষণ পযন্ত আমাদের রবের শুভাগমন না হবে, ততক্ষণ আমরা এখানেই থাকব। আর তার যখন শুভাগমন হবে তখন আমরা অবশ্যই তাঁকে চিনতে পারব। তখন তাদের মাঝে মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা’আলা আগমন করবেন এবং বলবেন, “আমি তোমাদের রব।” তারা বলবে হ্যাঁ, আপনই আমাদের রব।
            </p>
            <p class="three1">
            আল্লাহ তা’আলা তাদের ডাকবেন। আর জাহান্নামের উপর একটি সেতুপথ (পুলসিরাত) স্থাপন করা হবে। রাসূল গণের মধ্যে আমিই সবার আগে আমার উম্মত নিয়ে এ পথ অতিক্রম করব। সেদিন রাসূলগণ ব্যতীত আর কেউ কথা বলবে না। আর রাসূলগণের কথা হবেঃاللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ (আল্লাহুম্মা সাল্লিম সাল্লিম) ইয়া আল্লাহ্ রক্ষা করুন, রক্ষা করুন।
            </p>
            <p class="three1">
            আর জাহান্নামে বাঁকা লোহার বহু শলাকা থাকবে; সেগুলো হবে সাদান কাঁটার মতো। তোমরা কি স’দান কাঁটা দেখেছ? তারা বলবে, হ্যাঁ দেখেছি। তিনি বলবেন, সেগুলো দেখতে সাদান কাঁটার মতোই। তবে সেগুলো কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত আর কেউ জনানে না। সে কাঁটা লোকের আমল অনুযায়ী তাদের তড়িৎ গতিতে ধরবে। তাদের কিছু রোক ধ্বংস হবে আমলের কারণে। আর কারোর পায়ে যখম হবে, কিছু লোক কাঁটায় আক্রান্ত হবে, তারপর নাজাত পেয়ে যাবে। <span class="highlight">জাহান্নামীদের থেকে যাদের প্রতি আল্লাহ্ পাক রহমত করতে ইচ্ছা করেবন, তাদের ব্যাপারে ফিরিশতাগণকে নির্দেশ দেবেন যে, যারা আল্লাহর ইবাদত করত, তাদের যেন জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হয়। ফিরিশতাগণ তাদের বের করে আনবেন এবং সিজদার চিহ্ন দেখে তাঁরা তাদের চিনতে পারবেন। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা জাহান্নামের জন্য সিজদার চিহ্নগুলো মিটিয়ে দেওয়া হারাম করে দিয়েছেন। ফলে তাদের জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে। কাজেই সিজদার চিহ্ন ছাড়া আগুন বনী আদমের সব কিছুই গ্রাস করে ফেলবে।</span>
            </p>
            <p class="three1">
            অবশেষে, তাদেরকে অঙ্গারে পরিণত অবস্থায় জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তাদের উপর 'আবে-হায়াত' ঢেলে দেওয়া হবে ফলে তারা স্রোতে বাহিত ফেনার উপর গজিয়ে উঠা উদ্ভিদের মত সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে। এরপর আল্লাহ্ তা’আলা বান্দাদের বিচার কাজ সমাপ্ত করবেন। কিন্তু একজন লোক জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে থেকে যাবে। তার মুখমণ্ডল তখনও জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। জাহান্নামবাসীদের মধ্যে জান্নাতে প্রবেশকারী সেই শেষ ব্যাক্তি। সে তখন নিবেদন করবে, হে আমার রব! জাহান্নাম থেকে আমার চেহারা ফিরিয়ে দিন। এর দূষিত হাওয়া আমাকে বিষিয়ে তুলছে, এর লেলিহান শিখা আমাকে যন্ত্রনা দিচ্ছে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, তোমার নিবেদন গ্রহণ করা হলে, তুমি এছাড়া আর কিছু চাইবেন না তো? সে বলবে, না আপনার ইজ্জতের শপথ! সে তার ইচ্ছামত আল্লাহ তা’আলাকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দিবে। কাজেই আল্লাহ্ তা’আলা তার চেহারাকে জাহান্নামের দিক ফিরিয়ে দিবেন।
            </p>
            <p class="three1">
            এরপর সে যখন জান্নাতের দিকে মুখ ফিরাবে, তখন সে জান্নাতের অপরূপ সৗন্দর্য দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছা সে চুপ করে থাকবে। তারপর সে বলবে, হে আমার রব! আপনি জান্নাতের দরজার কাছে পৌছে দিন। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে বলবেন, তুমি পূর্বে যা চেয়েছিলে, তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না বলে তুমি কি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দাওনি? তখন সে বলবে, হে আমার রব! তোমার সৃষ্টির সবচাইতে হতভাগ্য আমি হতে চাই না। আল্লাহ তাতক্ষণিক বলবেন, তোমার এটি পুরন করা হলে তুমি এ ছাড়া কিছু চাইবে না তো? সে বলবে না, আপনার ইজ্জতের কসম! এছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। এ ব্যাপারে সে তার ইচ্ছানুযাযী অঙ্গিকার ও প্রতিশ্রুতি দেবে। সে যখন জান্নাতের দরজায় পৌঁছবে তখন জান্নাতের অনাবিল সৌন্দর্য ও তার আভ্যন্তরীণ সুখ শান্তি ও আনন্দঘন পরিবেশ দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহ্ তা’আলার ইচ্ছা করবেন, সে চুপ করে থাকবে।
            </p>
            <p class="three1">
            এরপর সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও! তখন পরাক্রমলালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ হে আদম সন্তান, কি আশ্চয! তুমি কত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী! তুমি কি আমার সঙ্গে অীঙ্গকার করনি এবং প্রতিশ্রুতি দাওনি যে, তোমাকে যা দেওয়া হয়েছে, তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না? তখন সে বলবে, হে আমার রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে আমাকে সবচাইতে হতভাগ্য করবেন না। এতে আল্লাহ্ হেসে দেবেন। এরপর তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন এবং বলবেন, চাও। সে তখন চাইবে, এমন কি তার চাওয়ার আকাংখা ফুরিয়ে যাবে। তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ এটা চাও, ওটা চাও। এভাবে তার রব তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকবেন। অবশেষে যখন তার আকাংখা শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ্ বলবেনঃ এ সবই তোমার, এ সাথে আরো সমপরিমাণ (তোমাকে দেওয়া হল)।
            </p>
            <p class="three1">
            আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন যে, আল্লাহ্ তা’আলা বলবেনঃ এসবই তোমার, তার সাথে আরও দশগুণ (তোমাকে দেওয়া হল)। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুধু এ কথাটি স্মরণ রেখেছি যে, এ সবই তোমার এবং এর সাথে সমপরিমাণ। আবূ সাঈদ (রাঃ) বললেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, এসব তোমার এবং এর সাথে আরও দশগুণ।[সহিহ বুখারি ১০/৮০৬]
            </p>
         </p>
         <p class="one">
            ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ সালাত ছেড়ে দিলে তার উদাহরণ সেই চাকুরিজীবির স্বরূপ যে বিনা অনুমতিতে কোনোরকম জটিলতা বা বিপদের সম্মুখীন না হয়েই কাজে আসেনি। এর জন্য তার মালিকের তাকে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু রয়েছে? কিন্তু আল্লাহ্‌ তায়ালা আর-রহমান(অত্যন্ত মেহেরবান) তিনি চাইলে আমাদেরকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। যেহেতু আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের জন্য বিভিন্নভাবে সালাতকে সহজ করে দিয়েছেন এবং আমাদের অত্যন্ত ব্যস্ততার কথা ভেবে সালাত কাযা করার ও মিলিয়ে পরার সুযোগ করে দিয়েছেন, আমাদের উচিত তার জন্য অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
         </p>
         <p class="two">
            সুতরাং, সালাত মুমিন হিসেবে আমাদের জন্য বরকতস্বরূপ। আমাদের প্রত্যেকের এর গুরুত্ব অনুধাবণ করা এবং নিয়মিত সালাত আদায়ের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
         </p>
      </div>
      </li>     
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="tenth">
         <label for="tenth">হাদীস কী<div class="dsp">hadi,ki</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            হাদীস আরবি শব্দ। এর আক্ষরিক অর্থ "কথা" অথবা "বক্তৃতা"। ইসলামে হাদীস বলতে নবি মুহাম্মাদ(সাঃ) এর কথা,কাজ ও নীরব অনুমোদন বোঝানো হয়, যা নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের শ্রিঙ্খলের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়েছে। হাদীস হলো
            পবিত্র কুরআন এর ব্যাখ্যা স্বরূপ। কুরআন শরীফে আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেছেনঃ
         </p>
         <p class="one">
            يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ فَإِن تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ
            ذَٰلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا
         </p>
         <p class="two1">
            <span class="highlight">অর্থ- হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুলের অনুসরণ কর</span> এবং অনুসরণ তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারীদের।
            অতঃপর যদি তোমরা কোনো বিষয়ে মতবিরোধ কর, তাহলে তা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের নিকট ফিরিয়ে দাও, যদি তোমরা আল্লাহ্‌ 
            ও কেয়ামতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাক। এটাই অতি উত্তম কাজ এবং পরিণতির দিক দিয়েও এটাই উত্তম।[৪ঃ৫৯]
         </p>
         <p>
            مَّن يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ ۖ وَمَن تَوَلَّىٰ فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ), তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি।[৪:৮০]
         </p>
         <p>
            সুতরাং, আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন রাসুল(সঃ) এর আনুগত্য করা তথা তাঁকে মেনে চলার। এবং এই হাদীস মানার মাধ্যমেই আমরা নবী মুহাম্মদ(সঃ) কে মেনে চলি।
         </p>
            <p>আল্লাহ্‌ তায়ালা রাসুল(সঃ) কে আমাদের মাঝে প্রেরণ করেছেন যেন তিনি আমাদেরকে ইসলামের সম্পূর্ণ শিক্ষা দিতে পারেন। নবী মুহাম্মাদ(সঃ) নিজ থেকে কোনো নির্দেশ কিংবা উপদেশ দিতেন না যদি না আল্লাহ্‌ তায়ালা
            তাঁকে সেই জ্ঞান দান করেন।</p>
            <p>হাদীসে সংকলিত তাঁর সকল কাজ ও বাণীই আল্লাহ্‌ প্রদত্ত মানবজাতির জন্য হেদায়াত। তিনি এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন এ বলেনঃ
            </p>
            <p class="one">
               وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ
            </p>
            <p class="two1">
               নক্ষত্রের কসম, যখন অস্তমিত হয়।[৫৩ঃ১]
            </p>
            <p>
               مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ
            </p>
            <p class="two1">
               তোমাদের সংগী পথভ্রষ্ট হননি এবং বিপথগামীও হননি।[৫৩:২]
            </p>
            <p>
               وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ
            </p>
            <p class="two1">
               এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না।[৫৩ঃ৩]
            </p>
            <p>
               عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ
            </p>
            <p class="two1">
               তাঁকে শিক্ষা দান করে এক শক্তিশালী ফেরেশতা,[৫৩ঃ৫]
            </p>
            <p>
               وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ
            </p>
            <p class="two1">
               সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত,[৬৯ঃ৪৪]
            </p>
            <p>
               لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ
            </p>
            <p class="two1">
               তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম,[৬৯ঃ৪৫]
            </p>
            <p>
               ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ
            </p>
            <p class="two1">
               অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা।[৬৯ঃ৪৬]
            </p>
            <p class="three2">
               হাদীস সংকলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসসম্পাদনা:</p>
               <p class="three2">

সাহাবীগণ ইসলামের সর্বশেষ নবীর কথা ও কাজের বিবরণ অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে স্মরণ রাখতেন। আবার কেউ কেউ তার অনুমতি সাপেক্ষে কিছু কিছু হাদীস লিখে রাখতেন। এভাবে তার জীবদ্দশায় স্মৃতিপটে মুখস্থ করে রাখার সাথে সাথে কিছু হাদীস লিখিত আকারে লিপিবদ্ধ ছিল। হযরত আলী, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, হযরত আনাস ইবনে মালিক প্রমুখ সাহাবীগণ কিছু কিছু হাদীস লিপিবদ্ধ করে রাখতেন। হযরত আবূ হুরায়রা বলেন “আবদুল্লাহ ইবনে আমর ব্যতীত আর কোন সাহাবী আমার অপেক্ষা অধিক হাদীস জানতেন না। কারণ, তিনি হাদীস লিখে রাখতেন আর আমি লিখতাম না।”</p>

<p>নবীর জীবদ্দশায় ইসলামী রাষ্ট্রের প্রশাসনিক বহু কাজকর্ম লিখিতভাবে সম্পাদনা করা হতো। বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তা, সরকারী কর্মচারী এবং জনসাধারনের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে লিখিত নির্দেশ প্রদান করা হতো। তাছাড়া রোম, পারস্য প্রভৃতি প্রতিবেশী দেশসমূহের সম্রাটদের সাথে পত্র বিনিময়, ইসলামের দাওয়াত এবং বিভিন্ন গোত্র ও সম্প্রদায়ের সাথে চুক্তি ও সন্ধি লিখিতভাবে সম্পাদন করা হতো। আর ইসলামের নবীর আদেশক্রমে যা লেখা হতো তাও হাদীসের অন্তর্ভুক্ত। 
            </p>
            <p class="note"><a href="https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%B8">সংগৃহিত</a></p>
            <p class="one">
               হাদীস মূলত তিন ধরণের বর্তমান। সহিহ,হাসান এবং যঈফ(দুর্বল)। আরও রয়েছে জাল বা বানানো হাদিস যা রাসুল(সঃ) কিংবা সাহাবিগণ বলেননি এবং এর কোনো সূত্র ইতিহাসে বিদ্যমান নেই।</p>
               <p> একটি হাদীস তখনই আমলযোগ্য হবে যখন তার বর্ণনাকারীদের ধারাবাহিকতা প্রমাণিত হবে। অর্থাৎ, রাসুল(সঃ) ও সাহাবিগণ থেকে শুরু করে হাদীসটি কিতাবে সংকলন পর্যন্ত সকল বর্ণনাকারীর অস্তিত্ব,বিশ্বস্ততা,প্রখর স্মরণশক্তি প্রভৃতি প্রমাণিত হবে। এগুলোই সহিহ হাদীস।</p>
               <p> আর যে সকল হাদীসের বর্ণনাকারীদের স্মরণশক্তির কিছুটা দুর্বলতা প্রমাণিত হয় সেগুলোকে হাসান হাদীস বলা হয়।</p>
               <p> অবশেষে যঈফ বা দুর্বল হাদীসসমূহ হচ্ছে সে সকল হাদীস যাতে সহিহ ও হাসান হাদীসের গুণাবলী অনুপস্থিত। এগুলো পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাই কেউ যদি এগুলোর ভিত্তিতে আমল করে তাহলে হতে পারে তা আল্লাহ্‌ তায়ালার কাছে কবুলই হবে না। এজন্য যেকোনো হাদীস এর উপর আমল করার পূর্বে তার সত্যতা জেনে নেয়া জরুরি।         
            </p>
         </div>
      </li>
       <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="eleventh">
         <label for="eleventh">পূর্ণাঙ্গ ঈমান আনা<div class="dsp">purango,iman,complete,believe,belief,faith</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            ইসলাম সর্বমোট পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠীত। সহিহ হাদীসে রাসুল(সঃ) বলেছেনঃ
         </p>
         <p class="three">
            ইসলামের বুনিয়াদ পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত- আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করা, সালাত কায়িম করা, যাকাত দেয়া, রমাযানের সিয়াম পালন করা এবং হজ্জ করা। এক ব্যক্তি (এ ক্রম পাঁচটিতে) বলল, হজ্জ করা ও রমাযানের সিয়াম পালন করা। রাবী বললেন, না রমাযানের সিয়াম পালন করা ও হজ্জ করা এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি।[সহিহ মুসলিম,অধ্যায়-ঈমান,১৯/১৬]        </p>
         <p class="one">
            অর্থাৎ, উপোরক্ত পাঁচটি বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন এবং সেই অনুযায়ী আমল করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরজ তথা বাধ্যতামূলক। তন্মধ্যে যাকাত এবং হজ্জ কেবল নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারীর উপর ফরজ। এই পাঁচটি বিষয়ের যেকোনো একটি অস্বিকার করলে বান্দার ঈমান নষ্ট হয়ে যায়।</p>
            <p class="one">
               ঈমানের ছয়টি বিষয় সম্পর্কে মুসলিম শরীফের হাদীসঃ
         </p>
         <p class="three">
            (জিব্রীল (আঃ) মানুষের বেশে নবী(সঃ) এর নিকট তাঁর সাহাবীগণের উপস্থিতিতে হাজির হলেন) এরপর সে বললো, আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ঈমান এই যে, তুমি আল্লাহ, তার ফেরেশতাকুল, তার কিতাবসমূহ, তার প্রেরিত নবীগণ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখবে এবং তুমি তাকদীর ও এর ভালো ও মন্দের প্রতিও ঈমান রাখবে। সে বললো, আপনি সত্যই বলেছেন।[সহিহ মুসলিম,অধ্যায়-ঈমান,১/৮]
         </p>
         <p class="one">
            এই ছয়টি বিষয়ের উপর ঈমান আনা তথা বিশ্বাস স্থাপন করা হচ্ছে মুমিন হওয়ার পূর্বশর্ত। তবে কেবল বিশ্বাস স্থাপন করেই আখিরাতে পার পেয়ে যাওয়া সম্ভব না। একজন মুসলিমের জীবন এতো সহজ নয়। আল্লাহ্‌ তায়ালা দুনিয়ায় তাঁর বান্দাদেরকে পরীক্ষা করবেন কে আমল অনুযায়ী কত শ্রেয়। তিনি বলেছেনঃ
         </p>
         <p class="one">
            أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?[২৯ঃ২]
         </p>
         <p>
            أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ أَن يَسْبِقُونَا ۚ سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফয়সালা খুবই মন্দ।[২৯ঃ৪]
         </p>
         <p>
            সুতরাং, মুসলিম হিসেবে আমাদের ইসলামের বিষয়বস্তুর উপর ঈমান আনতে হবে এবং সেই অনুযায়ী আমল করতে হবে যদি আমরা আখিরাতে সফলকামদের অন্তর্ভুক্ত হতে চাই। 
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twelveth">
         <label for="twelveth">সুন্নাহ্‌</label>
      <div class="content">
         <p>
            সুন্নাহ্ বা সুন্নাত (আরবি: سُنَّة) হল একটি আরবি শব্দ যার আভিধানিক অর্থ হল "ঐতিহ্য" বা "উপায়"। ইসলামে সুন্নাহ্ হলো মুহাম্মাদ(সাঃ) দ্বারা নির্দেশিত জীবনব্যবস্থা। অর্থাৎ, তিনি যে সকল বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন,কথা ও কাজের মাধ্যমে তাই সুন্নাহ্ বা সুন্নত বলে পরিচিত।</p>
            <p>
            আমরা যখন কোনো একটি কাজ করতে চাই যা কিভাবে করতে হয় আমাদের তা জানা নেই তখন আমরা এমন কারো কাছে সে সম্পর্কে শিখতে যাই যিনি সেই বিষয়ে জ্ঞান রাখেন।</p>
            <p> একইভাবে একজন মুসলিম যেকোনো কাজ করার পূর্বে দেখবে যে রাসুল(সঃ) সে কাজটি কিভাবে করেছেন। কেননা আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের পালনকর্তা, তিনিই জানেন কোন কাজ কিভাবে করা আমাদের জন্য উত্তম আর তিনি রাসুল(সঃ) কে সেটা শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেছেনঃ
            </p>
            <p class="one">
               مَّن يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَۖ
            </p>
            <p class="three1">
               <u>অর্থ-</u> যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল।[৪:৮০]
            </p>
            <p>
               وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
            </p>
            <p class="three1">
              <u>অর্থ-</u> রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।[৫৯ঃ৭] 
            </p>
            <p>
               لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
            </p>
            <p class="two1">
               <u>অর্থ-</u>যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।[৩৩ঃ২১]
            </p>
            <p>
               আমরা হাদীসের কিতাব পাঠের মাধ্যমে রাসুল(সঃ) এর সুন্নাহ্‌ সমূহ জানতে পারি এবং সেই অনুযায়ী আমল করতে পারি। নবী মুহাম্মাদ(সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করার মাধ্যমে উত্তম মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা সম্ভব।
            </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="thirteenth">
         <label for="thirteenth">বিদআত<div class="dsp">bidaat,bidat,bidah,bidaah,innovation</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            "বিদআত" (بدعة) শব্দের অর্থ এমন কোন উদ্ভাবিত বিষয় বা বস্তু যার ইতোপূর্বে কোথাও কোন অস্তিত্ব, উল্লেখ বা পরিচিতি ছিল না। বিদআত শব্দটি ইসলামী শরিয়তে একটি বিশিষ্ট অর্থে ব্যবহৃত হয়।  ইবনুল আরবী বলেন, "নিছক বিদআত ও মুহদাস শব্দদ্বয় বা তাদের অর্থের কারণে উদ্ভাবন ও আবিষ্কার ক্রিয়া দোষারোপযোগ্য নয়, বরং নিন্দনীয় হল দীন বিষয়ক এমন উদ্ভাবন (বিদআত) যা সুন্নাহ বিরোধী এবং এমন আবিষ্কার (মুহদাস) যা বিভ্রান্তিকেই আমন্ত্রণ করে।" সকল ওলামা তার এই বক্তব্যের সাথে স্ব স্ব পুস্তকে ঐকমত্য দিয়েছেন; যেমন, ইমাম নববীর তাহযিবুল আসমা ওয়াস সিফাত কিতাবে।</p>
         <p> বিদআত হল, সুন্নাহ লঙ্ঘনকারী নতুন প্রবর্তিত বিষয় যার উপরে সাহাবীগণ এবং তাবেয়ীনদের সমর্থন নেই এবং যা আইনগত প্রমাণের চাহিদা মোতাবেক হয় না। অর্থাৎ, এমন কোন বিষয় বা বস্তু যা দলিলস্বরূপ নির্দেশকারী শরিয়তের কোন ভিত্তি ছাড়াই উদ্ভাবিত হয়েছে। আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের জন্য তাঁর দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেনঃ
         </p>
         <p class="one">
            الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ۚ 
         </p>
         <p class="two1">
           <u>অর্থ-</u> আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।[৫ঃ৪]
         </p>
         <p>
            অর্থাৎ, আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণরূপে নাযিল করেছেন এবং এতে নতুন করে কিছু যোগ করার অবকাশ নেই।
            <p>ইসলামে বিদআত খুবই ভয়ংকর একটি জিনিস। সমাজের অধিকাংশ মানুষই এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারে না। মানুষের ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা সৃষ্টি হতে পারে এই বিদআতের মাধ্যমে। বিদআতের ভয়াবহতা সম্পর্কে রাসুল(সঃ) এর কিছু হাদীসসমূহঃ
         </p>
         <p class="three">
           ১। আল্লাহ প্রত্যেক বিদআতীর তওবা ততক্ষণ পর্যন্ত স্থগিত রাখেন (গ্রহণ করেন না), যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার বিদআত বর্জন না করেছে।[সহিহ তারগীব]
         </p>
         <p class="three">
           ২। প্রত্যেক কর্মের উদ্যম(প্রবল আগ্রহ) আছে এবং প্রত্যেক উদ্যমের আছে নিরুদ্যমতা(উদাসীনতা)। সুতরাং যার নিরুদ্যমতা আমার সুন্নাহর গণ্ডির ভিতরেই থাকে, সে হেদায়াতপ্রাপ্ত হয় এবং যার নিরুদ্যমতা এ ছাড়া অন্য কিছুতে (সুন্নত বর্জনে) অতিক্রম করে, সে ধ্বংস হয়ে যায়।[সহিহ তারগীব]
         </p>
         <p class="three">
           ৩। হাওয কওসরের পানি(যে পানি একবার পান করলে কোনো ব্যাক্তি আর কখনো পিপাসার্ত হবে না) পান করার জন্য পিপাসার্ত লোক (কিয়ামতের) দিন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হবে। কিন্তু তাদেরকে নিরুদ্দেশ উট বিতাড়িত করার ন্যায় বিতাড়িত করা হবে। তিনি বলবেন, ওরা আমার দলের। (বা ওরা তো আমার উম্মত)। বলা হবে, আপনি জানেন না, আপনার বিগত হওয়ার পর ওরা কি নবরচনা করেছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলবেনঃ দূর হও, দূর হও।[সহিহ মুসলিম ৪/৪০০]
         </p>
         <p class="three">
           ৪। আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর যে গায়রুল্লাহর(আল্লাহ্‌ ব্যতিত অন্য কেউ) উদ্দেশ্যে যবেহ করে, আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর যে নিজ পিতামাতাকে অভিসম্পাত করে, <span class="highlight"> আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর যে কোন দুষ্কৃতকারী বা বিদআতীকে আশ্রয় দেয়</span> এবং আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর যে ভূমির (জমি-জায়গার) সীমা-চিহ্ন পরিবর্তন করে।[সহিহ মুসলিম]
         </p>
         <p class="three">
           ৫। তোমরা অনুসরণ কর, নতুন কিছু রচনা করো না। কারণ তোমাদের জন্য তাই যথেষ্ট। আর তোমরা পুরাতন পন্থাই অবলম্বন কর।[সহিহ সিলসিলা যয়ীফাহ]
         </p>
         <p class="one">
           উপোরক্ত হাদীসগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে লক্ষণীয় "<u>নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলবেনঃ দূর হও, দূর হও।</u>" এই কথাটির ভয়াবহতা আমরা এখন হয়তো অনেকেই টের পাচ্ছি না। কিন্তু বিচার দিবস যে কি কঠিন এক দিন সে সম্পর্কে কুরআন শরীফে বলা হয়েছেঃ
         </p>
         <p class="one">
            وَاتَّقُوا يَوْمًا لَّا تَجْزِي نَفْسٌ عَن نَّفْسٍ شَيْئًا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না।[২ঃ৪৮]
         </p>
         <p class="one">
            সেই দিন মুমিন বান্দাদের জন্য রহমত ও বরকতস্বরূপ হাজির হবেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ(সঃ)। তিনি আল্লাহ্‌ তায়ালার নিকট তাঁর সমস্ত উম্মতের জন্য সুপারিশ করবেন যেন তিনি আমাদেরকে মাফ করে দেন এবং আমাদেরকে চিরশান্তির জান্নাতে প্রবেশ করান। তাঁর এই সুপারিশ সম্পর্কে সহিহ বুখারি শরীফের একটি চমৎকার হাদীসঃ
         </p>
         <p class="three">
            রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারা তখন আমার কাছে আসবে। আমি তখন আমার রবের কাছে তার নিকটে হাযির হওয়ার অনুমতি চাইব। আমাকে তাঁর কাছে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করা হবে। তাঁর দর্শন লাভ করার সাথে সাথে আমি সিজদায় পড়ে যাবো। তিনি আমাকে সে অবস্থায় যতক্ষন রাখতে চাইবেন ততক্ষন বাখবেন।</p>
            <p class="two1"> এরপর আল্লাহ তা’আলা বলবেন, মুহাম্মাদ, মাথা ওঠান; বলুন, আপনার কথা শোনা হবে, আর শাফাআত করুন, কবুল করা হবে, চান আপনাকে দেওয়া হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তখন আমি আমার মাথা ওঠাবো। তারপর আমি আমার প্রতিপালকের এমন শ্রুতি ও প্রশংসা (হামদ ও সানা) করবো যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দিবেন। এরপর আমি সুপারিশ করবো, তবে আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারণ করা হবে। আমি বের হয়ে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো।[সহিহ বুখারি ৮৬/৭৪৩৯-৪০]
         </p>
         <p class="note"><a href="http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=7675" target="_blank">সম্পূর্ণ হাদীস</a></p>
         <p class="one">
            এটি হাদীসের কিয়দংশ মাত্র। কোন ঈমানদার বান্দা সম্পূর্ণ হাদীসটি পাঠ করলে তাঁর হৃদয় কেঁদে না উঠে পারে না। আমরা কেউই চাইবো না কেয়ামতের সেই ভয়াবহ দিবসে মহানবী(সঃ) এর সুপারিশকে হাতছাড়া করতে। বর্তমান যুগে ইন্টারনেটে খুব সহজে খুজে বের করা যায় সমাজে প্রচলিত কোন কাজগুলো বিদআত।</p>
            <p>
               সুতরাং, আমাদের সর্বোচ্চ সচেষ্ট হতে হবে যেন দৈনিক জীবনের ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতর আমল যেন কুরআন ও সুন্নাহ্ এর বহির্ভুত না হয় যদি আমরা কিয়ামতে নাযাত পেতে চাই।
            </p>
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="fourteenth">
         <label for="fourteenth">কবরের জীবন<div class="dsp">grave,life,of,death,dead,barzakh,barzaakh,kobor,jibon</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু।[৩ঃ১৮৫]
         </p>
         <p>
            প্রত্যেক মানুষেরই মৃত্যু নিশ্চিত। একটি নির্দিষ্ট হায়াত শেষ হওয়ার পর ফেরেশতা আযরাইল(আঃ) তার 'রূহ' কবয করতে আসেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেছেনঃ 
         </p>
         <p class="one">
            قُلْ يَتَوَفَّاكُم مَّلَكُ الْمَوْتِ الَّذِي وُكِّلَ بِكُمْ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ
         </p>
         <p class="two1">
            <u>অর্থ-</u> বলুন, তোমাদের প্রাণ হরণের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।[৩২ঃ১১]
         </p>
         <p>
            এভাবে একটি মানুষের মৃত্যু ঘটে এবং শুরু হয় বারযাখের(দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যবর্তী পর্যায়) জীবন। কুরআন এবং হাদীস হতে এই জীবনের যে ধারণা পাওয়া যায় যা তা কতক উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলোঃ  
         </p>
         <p class="three">
            ১। বান্দাকে যখন তার কবরে রাখা হয় এবং তাকে পিছনে রেখে তার সাথীরা চলে যায় (এতটুকু দূরে যে,) তখনও সে তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায়, এমন সময় তার কাছে দু’জন ফিরিশতা এস তাকে বসিয়ে দেন। এরপর তাঁরা প্রশ্ন করেন, এই যে মুহাম্মদ তাঁর সম্পর্কে তুমি কি বলতে? তখন সে বলবে, আমি তো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল)। তখন তাঁকে বলা হবে, জাহান্নামে তোমার অবস্থানের জায়গাটি দেখে নাও, যার পরিবর্তে আল্লাহ পাক তোমার জন্য জান্নাতে একটি স্থান নির্ধারিত করেছেন।</p>
            <p class="two1">
             তখন সে দু’টি স্থান একই সময় দেখতে পাবে। আর যারা কাফির বা মুনাফিক, তারা বলবে, আমি জানিনা। (তবে) অন্য লোকেরা যা বলতো আমিও তাই বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, না তুমি নিজে জেনেছ, না তিলাওয়াত করে শিখেছ। এরপর তার দু’ কানের মধ্যবর্তী স্থানে লোহার মুগুর দিয়ে এমন জোরে আঘাত করা হবে, এতে সে চিৎকার করে উঠবে, মানুষ ও জ্বীন ব্যতীত তার আশেপাশের সকলেই তা শুনতে পাবে।[সহিহ বুখারি ১৩৩৮]
            </p>
            <p class="two1">
             ২। আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেনঃ আপনি (হে নবী!) নিশ্চিতই মৃতদের (কোন কথা) শোনাতে পারেন না।[সহিহ বুখারি ১৩৭১]
            </p>
            <p class="one">
              ৩। وَمَا يَسْتَوِي الْأَحْيَاءُ وَلَا الْأَمْوَاتُ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُسْمِعُ مَن يَشَاءُ ۖ وَمَا أَنتَ بِمُسْمِعٍ مَّن فِي الْقُبُورِ
            </p>
            <p class="two1">
               <u>অর্থ-</u> আরও সমান নয় জীবিত ও মৃত। আল্লাহ শ্রবণ করান যাকে ইচ্ছা। আপনি কবরে শায়িতদেরকে শুনাতে সক্ষম নন।[৩৫ঃ২২]
            </p>
            <p class="two1">
              ৪। তোমাদের কেউ মারা গেলে অবশ্যই তার সামনে সকাল ও সন্ধ্যায় তার অবস্থানস্থল উপস্থাপন করা হয়। যদি সে জান্নাতী হয়, তবে (অবস্থান স্থল) জান্নাতীদের মধ্যে দেখানো হয়। আর সে জাহান্নামী হলে, তাকে জাহান্নামীদের (অবস্থান স্থল দেখানো হয়) আর তাকে বলা হয়, এ হচ্ছে তোমার অবস্থানস্থল, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ পাক তোমাকে উত্থিত করা পর্যন্ত।[সহিহ বুখারি ১৩৭৯]
            </p>
            <p class="two1">
              ৫। মৃত ব্যাক্তিকে খাটিয়ায় রেখে লোকেরা যখন কাঁধে বহন করে নিয়ে যায় তখন সে নেককার হলে বলতে থাকে, আমাকে এগিয়ে নিয়ে চল, আমাকে এগিয়ে নিয়ে চল, আর সে নেককার না হলে বলতে থাকে হায় আপসোস! এটাকে নিয়ে তোমরা কোথায় যাচ্ছ? মানুষ ব্যতিত সব কিছুই তার এ আওয়াজ শুনতে পায়। মানুষেরা তা শুনতে পেলে অবশ্যই বেহুঁশ হয়ে যেত।[সহিহ বুখারি ১৩৮০]
            </p>
            <p class="two1">
              ৬। তোমরা কি দেখ না, মানুষ যখন মারা যায় তার চোখ খোলা থেকে যায়? লোকেরা বলল, হ্যাঁ দেখেছি। তিনি বলেনঃ যখন তার চোখ তার রূহকে অনুসরণ করে তখন এ অবস্থা হয়।[সহিহ মুসলিম ৯২১]
            </p>
            <p class="two1">
               ৭। মৃত ব্যক্তিকে তার প্রতি অধিক কান্নাকাটি করার দরুন কবরে আযাব দেয়া হয়।[সহিহ মুসলিম ৯২৭]
            </p>
            <p class="two1">
               ৮। কোন মৃত ব্যক্তির ওপর যখন একদল মুসলিম যাদের একশ হবে জানাযার সালাত আদায় করে এবং সবাই তার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে, তবে তার জন্য এ সুপারিশ কবুল করা হবে।[সহিহ মুসলিম ৯৪৭]
            </p>
            <p class="two">
               হাদীসগুলো হতে আমরা অনেকটা ধারণা পাই একজন মানুষের মৃত্যুর পর কী কী ঘটে যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। নেককার ব্যাক্ততির জন্য কবরের জীবন সুখের অনথায় তা হয় আযাব দ্বারা পূর্ণ।
            </p>
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="fifteenth">
         <label for="fifteenth">কবরের নিষিদ্ধ বিষয়বস্তু<div class="dsp">forbidden,kobor,grave,innovation,things,nishiddho</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            বান্দা ইসলাম পরিপন্থী কিছু করলে সেটার শাস্তি তাকে অবশ্যই পেতে হবে। তার মৃত্যুর পরও সেই বান্দার আপনজনের প্রতি কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। খুবই আফসোসের বিষয় যে আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষই এগুলো জানে না। সহিহ হাদীস অনুসারে এদের মধ্যে উল্লাখযোগ্যঃ 
         </p>
         <p class="three">
           ১। ইয়াহূদী ও নাসারা সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহর লা’নত, তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিণত করেছে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, সে আশংকা না থাকলে তাঁর (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর) কবরকে উম্মুক্ত রাখা হত, কিন্তু আমার আশংকা যে, (খুলে দেয়া হলে) একে মসজিদে পরিণত করা হবে।[সহিহ বুখারি ১৩৩০]
         </p>
         <p class="two1">
            ২। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থতাকালে তাঁর এক সহধর্মিনী হাবশা দেশে তাঁর দেখা ’মারিয়া’ নামক একটি গীর্জার কথা আলোচনা করলেন। (উম্মাহাতুল মু’মিনীনের মধ্যে) উম্মে সালামা এবং উম্মে হাবিবা (রাঃ) হাবাশায় গিয়েছিলেন। তারা ঐ গীর্জাটির সৌন্দর্য এবং তাতে রক্ষিত চিত্রসমূহের বিবরণ দিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মাথা তুলে বললেনঃ সে সব দেশের লোকেরা তাদের কোন পূণ্যবান ব্যাক্তি মারা গেলে তাঁর সমাধিতে মসজিদ নির্মাণ করত এবং তাতে সে সব চিত্র অংকন করত। তারা হল, আল্লাহর নিকটে নিকৃষ্ট মাখলূক।[সহিহ বুখারি ১৩৪১]
         </p>
         <p class="two1">
            ৩। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর পাকা করতে, কবরের উপর বসতে ও কবরের উপর গৃহ নিৰ্মাণ করতে নিষেধ করেছেন।[সহিহ মুসলিম ৯৭০]
         </p>
         <p class="two1">
            ৪। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কখনো কবরের উপর বসবে না এবং কবরের দিকে মুখ করে সালাতও আদায় করবে না।[সহিহ মুসলিম ৯৭২]
         </p>
         <p class="three2">
            কোনো মানুষ যত সম্মানিতই হোক না কেন নবী(সঃ) এর চেয়ে সম্মানিত মানুষ কেউ নেই। মুসলমান হিসেবে আমরা তো এটা মানিই এমনকি অমুসলিমরাও বিশ্বাস করে যা রাসুল(সঃ) পৃথিবীর সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি। আর এই ব্যক্তির কবরের উপর না কোনো গীর্জা নির্মাণ করা হয়েছে,না মসজিদে পরিণত করা হয়েছে, না কেউ সেখানে গিয়ে তাঁর নিকট প্রার্থনা করে।</p>
            <p>
               অথচ আমাদের এই দেশসহ আরও বিভিন্ন দেশে যাদের ইসলামিক জ্ঞান কম এবং কোনো অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তির নিকট তারা জ্ঞানার্জন করে, সেই ব্যক্তির মৃত্যুর পর তারা তার কবরকে উপাসনালয়ে পরিণত করে। সেখানে নিজের সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। কিন্তু এটা নবীর নির্দেশের সম্পূর্ণ উল্টা কাজ। এটা বিদআত বৈ নয়। কবরের ব্যক্তি কারো কথা শুনতে পারে না এবং তার কোনো ক্ষমতাও নেই কারো দোয়া কবুল করার। আল্লাহ্‌ তায়ালাই একমাত্র দোয়া কবুলকারি।
            </p>
            <p>
               আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেছেনঃ
            </p>
            <p class="one">
               وَاسْجُدُوا لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
            </p>
            <p class="one1">
               <u>অর্থ-</u> আল্লাহকে সেজদা কর, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা নিষ্ঠার সাথে শুধুমাত্র তাঁরই এবাদত কর।[৪১ঃ৩৭]
            </p>
            <p class="one">
               وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
            </p>
            <p class="one1">
              <u>অর্থ-</u> তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে।[৪০ঃ৬০]
            </p>
            <p>
               সুতরাং, আমাদের সম্মান ও এবাদতের পার্থক্য বুঝতে হবে। মৃত ব্যক্তির জন্য আমরা কেবল আল্লাহ্‌ এর নিকট দোয়াই করতে পারি কেননা আমরা জানি না কবরে সে সুখে রয়েছে নাকি আযাব ভোগ করছে। নিঃসন্দেহে যে নিজে আল্লাহ্‌ এর রহমতের মুখাপেক্ষি সে কখনো কারো কোনো উপকার করতে পারে না।
            </p>
         </p>
         </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="sixteenth">
         <label for="sixteenth">কবরের আযাব<div class="dsp">azab,azaab,kobor,kabr,punishment,dead,barzaakh,barzakh</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            বান্দা যদি নেককার হয়,দুনিয়ায় কারো হক নষ্ট না করে আর নিজের দায়িত্বসমূহ পালন করে তাহলে তার মৃত্যুর পর কবরের জীবন হয় শান্তির। কিন্তু সে যদি পাপকর্মে লিপ্ত থাকে,অন্যের হক নষ্ট করে,নিজের দায়িত্ব অবহেলা করে,সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে তাহলে আল্লাহ্‌ তায়ালা তার শাস্তির ব্যবস্থা করে দেন। কবরের এই আযাব সম্পর্কে রাসুল(সঃ) এর হাদীসে যে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়ঃ 
         </p>
         <p class="three">নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ গত রাতে আমি দেখলাম, দু’জন লোক এসে আমার দু’হাত ধরে আমাকে পবিত্র ভূমির দিকে নিয়ে চললো। হঠাৎ দেখতে পেলাম, এক ব্যাক্তি বসে আছে আর ব্যাক্তি লোহার আকড়া হাতে দাঁড়িয়ে আছে। (ইমাম বুখারী রহ বলেন) আমাদের এক সাথি মূসা (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, দণ্ডায়মান ব্যাক্তি উপবিষ্ট ব্যাক্তির (এক পাশের) চোয়ালটা এমনভাবে আকড়া দ্বারা বিদ্ধ করছিল যে, তা (চোয়াল বিদীর্ণ করে) মস্তকের পশ্চাদভাগ পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছিল। তারপর অপর চোয়ালটিও পূর্ববৎ বিদীর্ণ করছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ কি হচ্ছে? সাথীদ্বয় বললেন, (পরে কথা হবে এখন) চলুন।</p>

<p class="three">আমরা চলতে চলতে চিৎ হয়ে শায়িত এক ব্যাক্তির পাশে এসে উপস্থিত হলাম, তার শিয়রে পাথর হাতে এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে পাথর দিয়ে তার মাথা চূর্ণ করে দিচ্ছিল। নিক্ষিপ্ত পাথর দূরে গড়িয়ে যাওয়ার ফলে তা তুলে নিয়ে শায়িত ব্যাক্তির নিকট ফিরে আসার পূর্বেই বিচূর্ণ মাথা পূর্ববৎ জোড়া লেগে যাচ্ছিল। সে পুনরায় মাথার উপরে পাথর নিক্ষেপ করছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, লোকটি কে? তাঁরা বললেন, চলুন।</p>

<p class="three">আমরা অগ্রসর হয়ে চুলার ন্যায় এক গর্তের নিকট উপস্থিত হলাম। গর্তের উপরিভাগ ছিল সংকীর্ণ ও নীচের অংশ প্রশস্থ এবং এর নীচদেশ থেকে আগুন জ্বলছিল। আগুন গর্ত মুখের নিকটবর্তী হলে সেখানের লোকগুলোও উপরে চলে আসত যেন তারা গর্ত থেকে বের হয়ে যাবে। আগুণ ক্ষীণ হয়ে গেলে তারাও (তলদেশে) ফিরে যায়। গর্তের মধ্যে বহুসংখ্যক উলঙ্গ নারী-পুরুষ ছিল। জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তাঁরা বললেন, চলুন।</p>

<p class="three">আমরা চলতে চলতে একটি রক্ত প্রবাহিত নদীর নিকট উপস্থিত হলাম। নদীর মাঝখানে এক ব্যাক্তি দাঁড়ানো ছিল, (ইমাম বুখারী রহ বলেন) ইয়াযীদ ইবনু হারূন ও ওহাব ইবনু জারীল ইবনু হাযিম (রহঃ) বর্ণনায় وعلى شط النهر رجل بين يديه حجارة রয়েছে। নদীর তীরে অপর এক ব্যাক্তি যার সামনে ছিল পাথর। নদীর মাঝখানের লোকটি নদী থেকে বের হয়ে আসার জন্য অগ্রসর হলেই তীরে দাঁড়ানো লোকটি সে ব্যাক্তির মুখ বরাবর পাথর নিক্ষেপ করত, এতে সে তাকে পূর্বস্থানে ফিরিয়ে দিত। এমনভাবে যতবার সে তীরে উঠে আসতে চেষ্টা করে ততবার সে ব্যাক্তি তার মুখ বরাবর পাথর নিক্ষেপ করে পূর্বস্থানে ফিরে যেতে বাধ্য করে। আমি জানতে চাইলাম, এ ঘটনার কারণ কি? তাঁরা বললেন, চলতে থাকুন।</p>

<p class="three">আমরা চলতে চলতে একটি সবুজ বাগানে উপস্থিত হলাম। এতে একটি বড় গাছ ছিল। গাছটির গোড়ায় একজন বয়ঃবৃদ্ধ লোক ও বেশ কিছু বালক-বালিকা ছিল। হঠাৎ দেখি যে, গাছটির সন্নিকটে এক ব্যাক্তি সামনে আগুন রেখে তা প্রজ্জলিত করছে। সাথীদ্বয় আমাকে নিয়ে গাছে আরোহণ করে এমন একটি বাড়ীতে প্রবেশ করালেন যে, এর চেয়ে সুদৃশ্য বাড়ী পূর্বে আমি কখনো দেখিনি। বাড়ীতে বহু সংখ্যক বৃদ্ধ, যুবক, নারী এবং বালক-বালিকা ছিল। এরপর তাঁরা আমাকে সেখান হতে বের করে নিয়ে গাছের আরো উপরে আরোহণ করে অপর একটি বাড়ীতে প্রবেশ করালেন। এটা পূর্বাপেক্ষা অধিক সুদৃশ্য ও সুন্দর। বাড়ীটিতে কতিপয় বৃদ্ধ ও যুবক অবস্থান করছিলেন। আমি বললাম, আজ রাতে আপনারা আমাকে (বহুদূর পর্যন্ত) ভ্রমণ করালেন। এখন বলুন, যা দেখলাম তার তাৎপর্য কী?</p>

<p class="three">তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, আপনি যে ব্যাক্তির চোয়াল বিদীর্ণ করার দৃশ্য দেখলেন সে মিথ্যাবাদী; মিথ্যা কথা বলে বেড়াতো, তার বিবৃত মিথ্যা বর্ণনা ক্রমাগত বর্ণিত হয়ে দূর দূরান্তে পৌঁছে যেতো। কিয়ামত পর্যন্ত তারা সাথে এ ব্যবহার করা হবে।</p>

<p class="three">আপনি যার মাথা চূর্ণ করতে দেখলেন, সে এমন ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ কুরআনের শিক্ষা দান করেছিলেন, কিন্তু রাতের বেলায় সে কুরআন থেকে বিরত হয়ে নিদ্রা যেতো এবং দিনের বেলায় কুরআন অনুযায়ী আমল করতো না। তার সাথে কিয়ামত পর্যন্ত এরূপই করা হবে।</p>

<p class="three">গর্তের মধ্যে যাদেরকে আপনি দেখলেন, তারা ব্যভিচারী।
</p>
<p class="three1">(রক্ত প্রবাহিত) নদীতে আপনি যাকে দেখলেন, সে সুদখোর।
</p>
<p class="three1">গাছের গোড়ায় যে বৃদ্ধ ছিলেন তিনি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর চারপাশের বালক-বালিকারা মানুষের সন্তান।
</p>
<p class="three1">যিনি আগুন জ্বালাচ্ছিলেন তিনি হলেন, জাহান্নামের খাযিন মালিক নামক ফিরিশতা।
</p>
<p class="two1">প্রথম যে বাড়ীতে আপনি প্রবেশ করলেন তা সাধারণ মু’মিনদের বাসস্থান। আর এ বাড়ীটি হল শহীদগণের আবাস।
</p>
<p class="two1">আমি (হলাম) জিবরীল আর ইনি হলেন মীকাঈল। (এরপর জিবরীল আমাকে বললেন) আপনার মাথা উপরে উঠান। আমি উঠিয়ে মেঘমালার ন্যায় কিছু দেখতে পেলাম। তাঁরা বললেন, এটাই হল আপনার আবাসস্থল। আমি বললাম, আমাকে ছেড়ে দিন আমি আমার আবাসস্থলে প্রবেশ করি। তাঁরা বললেন, এখনো আপনার হায়াতের কিছু সময় অবশিষ্ট রয়ে গেছে যা পূর্ণ হয়নি। অবশিষ্ট সময় পূর্ণ হলে অবশ্যই আপনি নিজ আবাসে চলে আসবেন।[সহিহ বুখারি ১৩৮৬]</p>
    <p class="one">
      উক্ত হাদীসটিতে খুবই চমৎকারভাবে কবরের সমস্ত আযাবকে উপস্থাপন করা হয়েছে।</p>
      <p>
         অতএব, যেসব কারণে কবরের এই আযাব দেওয়া হয় আমাদের উচিত সেগুলো পরিহার করে চলা। কবরের আযাব হতে রক্ষা পাওয়ার একটি আমল রয়েছেঃ
      </p>  
      <p class="three">
         কুরআনের মধ্যে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে যেটি কারো পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে মাফ করে দেয়া হয়। এ সূরাটি হল তাবারাকাল্লায়ী বিয়াদিহিল মুলক।</p><p class="one1">এ সূরাটি প্রতিরোধকারী নাজাত দানকারী। এটা কবরের আযাব হতে তিলাওয়াতকারীকে নাজাত দান করে।[তিরমিযি,মিশকাত(হাসান)]
      </p>   
</div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="seventeenth">
         <label for="seventeenth">কবর যিয়ারতের নিয়ম<div class="dsp">kobor,kabr,ziyarat,ziyarot,jiyarat,niyom,rul</div></label>
      <div class="content">
          <p>
            কবর যিয়ারতের আমাদের অনেকের কিছু বিদআত নিয়ম জানা থাকলেও সুন্নাহ্ পদ্ধতি জানা নেই। এই বিদআতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সূরা ফাতিহা পাঠ করা,আয়াতুল কুরসি তিলাওয়াত করা, সূরা ইখলাস পাঠ করা ইত্যাদি। অথচ কোনো সহিহ হাদীসে এগুলো পাওয়া যায়নি। বরং কুরআন হতে তিলাওয়াত করা সরাসরি রাসুল(সঃ) নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি বলেছেনঃ
          </p>
          <p class="three">
            “তোমরা তোমাদের গৃহকে কবরস্থান বানিও না। যেহেতু শয়তান সেই গৃহ হতে পলায়ন করে; যে গৃহে সূরা বাক্বারাহ পাঠ করা হয়।” (মুসলিম)</p>

          <p class="one">উক্ত হাদীসে ইঙ্গিত রয়েছে যে, কবরস্থান কুরআন পাঠের স্থান নয়। পক্ষান্তরে গৃহে কুরআন পাঠ করতে হয়। প্রকাশ যে, কবরস্থানে বা কবরের পাশে কুরআন পাঠের ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলি সহীহ নয়।
          </p>
          <p>
            কবরস্থানে প্রবেশের সময় মৃত ব্যক্তিদের জন্য সালাম ও দুআ করা সুন্নত। রসূল (সাঃ) তাঁর সাহাবাকে এই সালাম ও দুআ পড়তে শিখিয়েছেন।
          </p>
          <p class="one">
             السَّلامُ عَلَيكُمْ أَهْل الدِّيارِ مِنَ المُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ أَسْأَلُ اللَّه لَنَا وَلَكُمُ العافِيَةَ
          </p>
          <p>
           আসালা-মু আলইকুম আহলাদ দিয়া-রি মিনাল মু'মিনীন, অইন্না ইনশাআল্লা-হু বিকুম লালা-হিন, আসআলুল্লা-হা লানা আলাকুমুল আ-ফিয়াহ।
          </p>
          <p class="three1">
           <u>অর্থ-</u> তোমাদের উপর শান্তি বর্ষণ হোক, হে কবরবাসী মুমিনগণ! আল্লাহ চাইলে আমরা তোমাদের সহিত মিলিত হব। আমি আমাদের এবং তোমাদের জন্য (আযাব হতে) নিরাপত্তা কামনা করি।[সহিহ মুসলিম]
          </p>
          <p>
            এতটুকুই যথেষ্ঠ কবর যিয়ারতের জন্য। এর বেশি কোনো কিছু করার নির্দেশ রাসুল(সঃ) আমাদেরকে দেননি।
          </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="eighteenth">
         <label for="eighteenth">শির্‌ক<div class="dsp">shirk,shirok</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            শির্‌ক হলো আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে উপাস্য হিসেবে নির্ধারিত করা বা তার উপাসনা করা। শাব্দিকভাবে এর দ্বারা এক বা একাধিক কোন কিছুকে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব ও কর্তৃত্বের অংশীদার সাব্যস্ত করাকে বুঝায়। এটি তাওহিদের পরিপন্থী একটি বিষয়। ইসলামে শির্‌ক হলো একটি অমার্জনীয় অপরাধ যদি না মৃত্যু নিকটবর্তী হবার পূর্বে আল্লাহ্‌র নিকট এই অপরাধের জন্যে ক্ষমা চেয়ে না নেয়া হয়। ইসলামের নির্ভরযোগ্য তথ্য অনুসারে, আল্লাহ্ তায়ালার কাছে ক্ষমা না চাইলেও মৃত্যুর পর নিজের বিচার অনুসারে তার ইবাদতকারীদের যে কোনো ভুল ক্ষমা করতে পারেন, কিন্তু শিরকের অপরাধী দুনিয়াতে ক্ষমা না চাইলে কখনোই ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেনঃ</p>
            <p class="one">
               إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا
            </p>
            <p class="three1">
              <u>অর্থ-</u> নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল।[৪ঃ৩৮]
            </p>
            <p>
              মক্কার মুশরিকরা আল্লাহ্‌র অস্তিত্ব ও প্রতিপালকত্বে বিশ্বাস করতো। একইসাথে তারা বিভিন্ন মূর্তি, পাথর, গাছ, নক্ষত্র, ফেরেশতা, জিন, মৃতব্যক্তি ইত্যাদি বস্তু ও জীবের ইবাদত বা উপাসনা করতো। আল্লাহ্ ছাড়াও ঐসব দেবদেবীকে ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খার সাথে ডাকা, বিপদে তাদের কাছে সাহায্য, আশ্রয়, উদ্ধার প্রার্থনা করা এবং তাদের নামে জবাই ও মানত করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিরক করতো। 
         </p>
         <p>
            কিন্তু এগুলো ছারাও এমন কিছু কাজের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ এর সাথে শির্‌ক করা হয় যা আমরা সাধারণভাবে চিন্তা করতে পারি না। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে এই শির্‌ক এর পাপ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। আমরা অনেকে নিজের অজান্তেই শির্‌কের পাপে লিপ্ত হয়ে পরি। 
         </p>
         <p>
            মৃতব্যক্তির নিকট হতে মদদ ও সাহায্য ভিক্ষা করা শির্কে আকবর; যদিও তিনি নবী (সা.) অথবা অলী হন। কারণ আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
         </p>
         <p class="one">
           وَلَا تَدْعُ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ ۖ فَإِن فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِّنَ الظَّالِمِينَ
         </p>
         <p class="one1">
           <u>অর্থ-</u> তুমি আল্লাহর পরিবর্তে তাদেরকে আহবান করো না; যারা তোমার উপকার করতে পারে না এবং অপকারও করতে পারে না। করলে তুমি সীমালংঘনকারী (মুশরিকদের) শ্রেণীভুক্ত হবে।[১০ঃ১০৬]
         </p>
         <p>
            এছাড়াও ভাগ্য নির্ধারণকারী রাশি,তাবিয,কোনো মাজারের বস্তু ইত্যাদি কারো কোনো উপকার বা ক্ষতি করতে পারে এরূপ বিশ্বাস করা শির্‌কের অন্তর্ভুক্ত। 
         </p>
         <p>
            শির্‌কই একমাত্র পাপ যা আল্লাহ্‌ তায়ালা হাশরের ময়দানে ক্ষমা করবেন না। 
         </p>
         <p>
            সুতরাং, আমাদের এই বিষয়টিতে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="nineteenth">
         <label for="nineteenth">সালাতের পূর্বপ্রস্তুতি<div class="dsp">salat,salah,namaz,things,before,wud,ozu,oju</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            সালাত আদায়ের পূর্বে কিছু জরুরী কাজ রয়েছে যা না করলে সালাত কবুল হয় না। এগুলো হলোঃ
         </p>
         <p>
            ১। ওযূ করা
         </p>
         <p>
            ২। সালাতের নিয়ত করা
         </p>
         <p>
            ৩। কিবলামুখী হওয়া
         </p>
         <p>
            ৪। সতর বা অবয়ব ঢাকা
         </p>
         <p>
            ৫। শরীর,কাপড় ও নামাযের স্থানে অপবিত্র বস্তু না থাকা
         </p>
         <p class="two">
            রাসুল(সঃ) বলেছেনঃ
         </p>
         <p class="three1">
            তোমাদের কারো ওযু নষ্ট হলে পুনরায় ওযু না করা পর্যন্ত তার সালাত কবুল হয় না।[সহিহ মুসলিম ২/২২৫]
         </p>
         <p class="two">
            ওযূ করার নিয়ম সম্পর্কে উসমান ইবনু আফফান (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
         </p><div class="subtopic">বিসমিল্লাহ্‌ বলা</div>
         <p class="three">
         ১। ঐ ব্যক্তির সালাত হয় না যে (সঠিকভাবে) অযু করে না এবং ঐ ব্যক্তির অযু হয় না যে তাতে আল্লাহর নাম(বিসমিল্লাহ্‌) নেয় না।
         </p>
         <p class="one1">
            যে ব্যাক্তি উযূ (ওযূ) ও গোসলের সময়- নামাযের উযূর বা অপবিত্রতার গোসলের নিয়াত করে না- তার উযূ ও গোসল হয় না।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/১০১-১০২]
         </p>
         <p class="three">
         ২। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানায় প্রবেশ কালে বলতেনঃ
         </p>
         <p class="one">
         اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ
         </p>
         <p>
         আল্লাহুম্মা ইন্নি আ'উযুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খবাইস
         </p>
         <p class="one1">
         <u>অর্থ-</u> হে আল্লাহ! শয়তান,জ্বিন ও সকল কষ্টদায়ক প্রাণী থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি।[সহিহ তিরমিযি ১/৫]
         </p>
         <div class="subtopic">অঙ্গসমূহ ধোয়া</div>
         <p class="three">
         ৩। তিনি উসমান (রাযিঃ) <span class="highlight">তিনবার তার হাতের কজি পর্যন্ত ধুলেন, এরপর কুলি করলেন এবং নাক ঝাড়লেন। এরপর তিনবার তার মুখমণ্ডল ধুলেন এবং ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর বাম হাত অনুরূপভাবে ধুলেন। অতঃপর তিনি মাথা মাসাহ করলেন। এরপর তার ডান পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধুলেন- অতঃপর তদ্রুপভাবে বাম পা ধুলেন</span> তারপর বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার এ ওয়ূর করার ন্যায় ওযু করতে দেখেছি এবং ওযু শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, <span class="highlight">যে ব্যক্তি আমার এ ওযুর ন্যায় ওযু করবে এবং একান্ত মনোযোগের সাথে দু’ রাকাআত সালাত আদায় করবে, সে ব্যক্তির পিছনের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।</span>[সহিহ মুসলিম ২/২২৬]
         </p>
         <p class="exp">
         ( ওযূ করার পর দুই রাকাত সালাত আদায় করা সুন্নত। একে তাহ্যিয়াতুল ওযূ এর নামায বলা হয়। )
         </p>
         <p class="three">
         ৪। যুহায়র ইবনু হারব এবং ইসহাক (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আমরা মক্কা থেকে মদিনার দিকে ফিরছিলাম। রাস্তায় এক যায়গায় পানি ছিল। তখন কিছু লোক জলদী আসরের সময়ে এগিয়ে গেল এবং তাড়াহুড়া করে উযূ (ওযূ) করল। অতঃপর আমরা যখন তাদের নিকট গিয়ে পৌছিলাম, দেখলাম তাদের পায়ের গোড়ালি এমনভাবে প্রকাশ পাচ্ছে যে, তাতে পানি পৌছেনি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ <span class="highlight">আফসোস ঐ গোড়ালিগুলোর জন্য যেগুলোর ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অতএব পূর্ণভাবে উযূ সম্পাদন কর।</span>[সহিহ মুসলিম ২/২৪১] 
         </p>
         <div class="subtopic">মাথা ও কান মাসেহ্‌ করা</div>
         <p class="three">
         ৫। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাতে মাথা মাসেহ করেছেন। উভয় হাতকে সামনে ও পিছনে নিয়েছেন। <span class="highlight">মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে হাত দুটি মাথার পিছন দিকে নিয়ে গেছেন। এরপর হাত দুটি আবার যে স্থান থেকে শুরু করেছিলেন সেস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন।</span>[সহিহ তিরমিযি ১/৩২]
         </p>
         <p class="one1">
         ৬। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদমতে উযূর পানি পেশ করা হলে তিনি উযূ (ওযূ) করেন। অতঃপর তিনি উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত তিনবার এবং মুখমণ্ডল তিনবার ধৌত করেন। পরে তিনি দুই হাতের কনুই সমেত তিনবার করে ধৌত করেন। অতঃপর তিনি তিনবার কুলি করেন এবং তিনবার নাকে পানি দেন। পরে <span class="highlight">তিনি তাঁর মাথা এবং উভয় কানের আভ্যন্তরীণ ও বহির্ভাগ মাসেহ্ করেন।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/১২১,ইবনু মাজাহ্‌]  
         </p>
         <div class="subtopic">ওযূ শেষে দোয়া পাঠ করা</div>
         <p class="three">
         ৬। তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি উত্তম ও পূর্ণরূপে ওযু করে এ দু’আ পড়বে-<span class="highlight">"আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয় আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু"।</span> তার জন্যে জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যাবে এবং যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।[সহিহ মুসলিম ২/২৩৪]
         </p>
         <div class="three">প্রয়োজনে মোজার উপর মাসেহ্‌ করা</div>
         <p class="three">
         ৭। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ নুমায়র (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সফরে এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, “তোমার সাথে কি পানি আছে”? আমি বললাম, হ্যাঁ। আমি বদনা থেকে তাঁকে পানি ঢেলে দিলাম তিনি তাঁর মুখমণ্ডল ধুইলেন। তারপর তাঁর উভয় বাহু ধুইলেন এবং মাথা মাসেহ করলেন। আমি তাঁর উভয় মোযা খুলে দিতে চাইলাম কিন্তু (বাধা দিয়ে) তিনি বললেন, ওভাবেই থাকতে দাও। কারণ আমি ও দুটি পবিত্র অবস্থায় পায়ে দিয়েছি। (এই বলে) তিনি তার উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।
         <p class="one1">
         নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওযূ) করার সময় কাপড়ের মোযা ও চপ্পলের উপর মাসেহ করছেন।[সহিহ মুসলিম ২/২৭৪,তিরমিযি ১/৯৯]
         </p>
         <p class="exp">
         ( হাদীসটি হতে বোঝা যায় যে, কেউ যদি পবিত্র অবস্থায় তথা ওযূ করার পর মোযা পড়ে থাকে তাহলে সে পুনরায় ওযূ করার সময় পা না ভিজিয়ে তার উপর দিয়েই মাসেহ করতে পারবে। তবে এটি সূতি মোযার জন্য প্রযোজ্য নয়। আলেমগনের অভিমত অনুযায়ী চামড়ার মোযা বা জুতা পড়ে তার উপর মাসেহ্‌ করা যায় কেননা সেসময় নবী(সঃ) তাই পরিধান করেছিলেন। )
         </p>
         </p>
         <div class="subtopic">সকল সালাতের জন্য একবার ওযূই যথেষ্ট</div>
         <p class="three">
         ৮। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ও মূসা’দ্দাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাতের সময় উযূ (ওযূ) করতেন। আমি বললামঃ আপনারা কিরূপ করতেন? তিনি বললেনঃ <span class="highlight">হাদস (উযূ ভঙ্গের কারন) না হওয়া পর্যন্ত আমাদের (পূর্বের) উযূই যথেষ্ট হত।</span>[সহিহ বুখারি ৪/২১৪]
         </p>
         <p class="three">
         ৯। সুওয়াইদ ইবনু নু‘মান (রাযি.) হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে আসরের সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে তিনি খাবার আনতে বললেন। ছাতু ব্যতীত আর কিছুই আনা হল না। আমরা তা খেলাম এবং পান করলাম। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের জন্য দাঁড়ালেন, অতঃপর কুলি করলেন; অতঃপর আমাদের নিয়ে মাগরিবের সালাত আদায় করলেন অথচ তিনি (নতুন) উযূ করলেন না।[সহিহ বুখারি ৪/২১৫]
         </p>
         <div class="subtopic">পানি ছাড়া তায়াম্মুম করা</div>
         <p class="three">
         ১০। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উসায়েদ ইবনু হুদায়েরের সাথে আরো কয়েকজনকে আয়িশা (রাঃ) এর হারানো হার অনুসন্ধানের জন্য পাঠান। এমন সময় নামাযের ওয়াক্ত হওয়ায় তারা বিনা উযূ তে নামায আদায় করেন। অতঃপর তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদমতে হাযির হয়ে এ বিষয়ে তাকে অবহিত করেন। <span class="highlight">তখন তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল হয়।</span> এ সময় উসায়েদ (রাঃ) আয়িশা (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেন, আপনি মনঃক্ষুন্ন হয়েছেন, তার ফলশ্রুতিতে আল্লাহ্ তা’আলা আপনার এবং গোটা মুসলিম মিল্লাতের জন্য পথ সুপ্রশস্ত করে দিয়েছেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/৩১৭]
         </p>
         <p class="one1">
         আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, আম্মার (রাঃ) উমার (রাঃ)-কে যা বলেছিলেন তা কি আপনি অবগত আছেন? তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে একটি কাজে প্রেরণ করেন। সে সময় আমি অপবিত্র হই, কিন্তু পবিত্রতা অর্জনের জন্য সেখানে পানি না পাওয়ায় আমি চতুষ্পদ জন্তুর মত মাটিতে গড়াগড়ি দেই। অতঃপর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদমতে উপস্থিত হয়ে উক্ত ঘটনা বিস্তারিত বর্ণনা করি।
         নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ <span class="highlight">তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট ছিল। এই বলে তিনি নিজের হাত মাটিতে মারেন, অতঃপর তাতে ফুঁ দিয়ে মুখমণ্ডল এবং দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসেহ্ করেন।</span>[সহিহ বুখারি ৭/৩৪৭,সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/৩২১,৩২৪] 
         </p>
         <p class="exp">
         ( একাধিক সহীহ হাদীসে কনুই ও বগল পর্যন্ত মাসেহ্‌ করার কথা বলা হয়েছে। তবে অধিকতর গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে কব্জি পর্যন্ত মাসেহ্‌ করা। )
         </p>
         <div class="subtopic">পানি পাওয়া গেলে ওযূ করা</div>
         <p class="three">
         ১১। আমর ইবনু আওন ..... আমর ইবনু বুজদান থেকে আবূ যার (রাঃ) এর সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট গনীমতের মাল (বকরীর পাল) জমায়েত হয়। তিনি বলেন, হে আবূ যার! তুমি এগুলো মাঠে নিয়ে যাও। তখন আমি সেগুলিকে রাবাযা নামক স্থানে নিয়ে যাই। সেখানে আমি অপবিত্র হয়ে পড়ি। এমতাবস্থায় সেখানে আমি ৫/৬ দিন (গোসল ব্যতীত) অবস্থান করি। অতঃপর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদমতে প্রত্যাবর্তন করি। তখন তিনি আমাকে বলেনঃ হে আবূ যার! এ সময় আমি (লজ্জায়) নিশ্চুপ থাকি। তিনি পুনরায় বলেনঃ তোমার মাতা তোমার জন্য ক্রন্দন করুক এবং তোমার মাতার জন্য আফসোস।
         </p>
         <p class="one1">
         তিনি সাওদা নাম্নী দাসীকে ডেকে পানি আনার নির্দেশ দেন। সে পানি ভর্তি একটি বড় পাত্র আমার সম্মুখে হাযির করে এবং সে একটি কাপড়ের পর্দার দ্বারা একদিকে আমাকে আঁড়াল করে এবং অপর দিকে আমি উটের পিঠের আসন রেখে পর্দা করি। অতঃপর আমি গোসল করি। এ সময় আমার মনে হয় যেন আমার কাঁধ হতে একটি পর্বত পরিমাণ বোঝা অপসারণ করলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ <span class="highlight">পবিত্র মাটি মুসলিমদের জন্য (পানির দুস্প্রাপ্যতার সময়) পানির সমতুল্য (পবিত্রতা অর্জনের জন্যে)। যদি দশ বৎসরকালও পানি দুস্প্রাপ্য হয় তবে এ সময় পবিত্রতা অর্জনে পাক মাটই যথেষ্ট।</span> অতঃপর যখন পানি পাবে, তখন গোসল করবে। কেননা এটাই উত্তম ব্যবস্থা।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/৩৩২]   
         </p>
         <p class="three">
         ১২। মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক ..... আতা (রহঃ) থেকে আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) এর সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা দুই ব্যক্তি সফরে বের হয় পথিমধ্যে নামাযের সময় উপনীত হওয়ায় <span class="highlight">তারা পানি না পাওয়ায় তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে। অতঃপর উক্ত নামাযের সময়ের মধ্যে পানি প্রাপ্ত হওয়ায় তাদের একজন উযূ করে পুনরায় নামায আদায় করল এবং অপর ব্যক্তি নামায আদায় করা হতে বিরত থাকে।</span> অতঃপর উভয়েই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদমতে হাযির হয়ে এই ঘটনা বর্ণনা করল। তিনি বলেনঃ তোমাদের <span class="highlight">যে ব্যক্তি নামায পুনরায় আদায় করেনি সে সুন্নাত মোতাবেক কাজ করেছে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট আর যে ব্যক্তি উযূ করে পুনরায় নামায আদায় করেছে তার সম্পর্কে বলেনঃ তুমি দ্বিগুণ সওয়াবের অধিকারী হয়েছ।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/৩৩৮]
         </p>
         <div class="subtopic">অপবিত্রতার গোসল</div>
         <p class="three">
         ১৩। মুহাম্মাদ ইবন আমার আস-সাওওয়াক আল-বালখী ও মাহদূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) ..... আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মযী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ <span class="highlight">মযী বের হলে উযূ (ওযূ) করতে হবে আর মনী বের হলে গোসল করতে হবে।</span>[ইবনু মাজাহ্‌ ৫০৪, তিরমিযি ১/১১৪]   
         <p class="exp">
         ( মনী হলো হালকা হলদে বা সাদা তরল বস্তু যা পুরুষ ও নারীর যৌনাঙ্গ হতে নির্গত হয়। আর মযী হচ্ছে স্বচ্ছ আঠালো বস্তু। এটি পুরুষের চেয়ে সাধারণত মহিলাদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায়। )
         </p>
         </p>
         <p class="three">
         ১৪। <span class="highlight">কেউ ঘুম থেকে জেগে (তার শরীরে বা কাপড়ে) বীর্যের আর্দ্রতা দেখতে পেল কিন্তু স্বপ্নদোষ হয়েছে বলে তার মনে পড়ে না তার সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ তাকে গোসল করতে হবে।</span> এমনিভবে কারো যদি স্বপ্নদোষের কথা মনে পড়ে কিন্তু জেগে কোনরূপ আর্দ্রতা দেখতে না পায় তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে গোসল করতে হবে না। উম্মু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা তখন বললেনঃ <span class="highlight">হে আল্লাহর রাসূল! মেয়েদের কেউ যদি এই ধরনের কিছু দেখে তবে তাদেরও কি গোসল করতে হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ,মেয়েরা তো পুরুষেরই অংশ।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২৩৪, তিরমিযি ১/১১৩]  
         </p>
         <p class="one1">
         আবূ মূসা মুহাম্মাদ ইবনুল মুছান্না .... আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন যে, <span class="highlight">মিলন-কালে স্বামী-স্ত্রীর খাতনা করার স্থানটুকু অতিক্রম হলেই গোসল ফরয হয়।</span> আমার ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাঝে এরূপ হয়েছে। তখন আমরা গোসল করেছি। [ইবনু মাজাহ্‌ ৬০৮,সহিহ মুসলিম, তিরমিযি ১/১০৮]
            </p>
         <div class="subtopic">গোসলের পদ্ধতি</div>
         <p class="three">
         ১৫। হান্নাদ (রহঃ) .... মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য গোসলের পনি রাখলাম। তিনি জানাবতের(বীর্যপাত) গোসল করলেন। প্রথমে বাম হাতে পানি রাখা পাত্রটি কাত করে ডান হাতের উপর পানি ঢাললেন এবং উভয় হাত কবজা পর্যন্ত ধৌত করলেন। পরে পাত্রে হাত ঢুকিয়ে পানি নিয়ে লজ্জাস্থানে পানি ঢাললেন এবং দেয়ালে কিংবা মাটিতে হাত দু’টি ঘষে ধুইলেন। এরপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, চেহারা ও দুই হাত ধৌত করলেন। পরে মাথায় তিনবার পানি ঢাললেন, তারপর সারা শরীরে পনি ঢেলে দিলেন। এরপর কিছুটা সরে দুই পা ধুইলেন।[ইবনু মাজাহ্‌ ৫৭৩,সহিহ বুখারি ও মুসলিম, তিরমিযি ১/১০৩]
         <p class="one1">
         নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম <span class="highlight">গোসলের পর উযূ করতেন না।</span>[ইবনু মাজাহ্‌ ৫৭৯,সহিহ তিরমিযি ১/১০৭]
         </p>
         </p>
         <p class="three">
         ১৫। পুরুষ লোক অপবিত্রতার গোসলের সময় এমনভাবে চুল ছেড়ে দিয়ে গোসল করবে- যেন তার প্রতিটি চুলের গোড়ায় পানি পৌছে। অপরপক্ষে <span class="highlight">মহিলাদের জন্য গোসলের সময় চুল ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। তারা অপিবত্রতার গোসলের সময় উভয় হাতে তিনবার তিন কোষ পানি মাথার উপর ঢালবে।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৫৫] 
         </p>
         <p class="one">
         ওযূ পরিপূর্ণরূপে সম্পন্ন করার পর নামাযের স্থানে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নামাযের নিয়ত করতে হবে। এ সম্পর্কে সহিহ হাদীসঃ
         </p>
         <p class="three">
         ১। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিবলামুখী হও তাকবীর বল।[সহিহ বুখারি ৮/৩৯৯]
         </p>
         <p class="three">
         ২। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সাওয়ারীর উপর (নফল) সালাত (নামায) আদায় করতেন—সওয়ারী তাঁকে নিয়ে যে দিকেই মুখ করত না কেন। কিন্তু যখন ফরয সালাত আদায়ের ইচ্ছা করতেন, তখন নেমে পড়তেন এবং কিবলার দিকে মুখ করতেন।[সহিহ বুখারি ৮/৪০০]
         নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ার থাকাবস্থায় কিবলা ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে নফল সালাত (নামায) আদায় করেছেন।[সহিহ বুখারি ১৮/১০৯৪]
         </p>
         <p class="exp">
         ( যেকোনো অবস্থায় ফরয সালাত কিবলামুখী হয়ে আদায় করা জরুরী। কিন্ত নফল নামাযে কিবলামুখী হওয়া সম্ভব না হলে তা যেকোনো দিকে ফিরেই আদায় করা যায়। )
         </p>
         <p class="three">
         ৩। যে কোনো আমলের জন্য নিয়ত জরুরী। নিয়ত ছাড়া কোন ইবাদত বা আমল শুদ্ধ হয় না। মহানবী (ﷺ) বলেন, “আমলসমূহ তো নিয়তের উপরেই নির্ভরশীল।”[সহিহ বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১]
         </p>
         <p class="one">
         এই সংকল্প করার জন্য নির্দিষ্ট কোন শব্দ শরীয়তে বর্ণিত হয় নি। আরবীতে বাঁধা মনগড়া নিয়ত বা নিজ ভাষায় কোন নির্দিষ্ট শব্দাবলী দ্বারা রচিত নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বা আওড়ানো বিদআত। নিয়ত করা জরুরী, কিন্তু পড়া বিদআত।
         </p>
         <p>
         ইবনুল কাইয়েম (রহঃ) বলেন, নবী (ﷺ) যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন। এর পূর্বে তিনি কিছু বলতেন না এবং মোটেই নিয়ত মুখে উচ্চারণ করতেন না। তিনি এ কথাও বলতেন না যে, (নাওয়াইতু আন) ‘উসাল্লী লিল্লাহি সালাতান---, আল্লাহর উদ্দেশ্যে অমুক নামায, কেবলাহ্‌ মুখে, চার রাকআত, ইমাম বা মুক্তাদী হয়ে পড়ছি।’ আর না তিনি আদায়, কাযা বা বর্তমান ফরযের কথা উল্লেখ করতেন। উক্ত ১০ প্রকার বিদআতগুলির কোন একটি শব্দও তাঁর নিকট হতে কেউই বর্ণনা করেন নি; না সহীহ সনদ দ্বারা, না যয়ীফ দ্বারা, না মুসনাদ রুপে, আর না-ই মুরসাল রুপে। বরং তাঁর কোন সাহাবী হতেও ঐ নিয়তের কথা বর্ণিত হয়নি। কোন তাবেয়ীও তা বলা উত্তম মনে করেন নি, আর না-ই চার ইমামের কেউ।[যাদুল মাআদ ১/২০১]
         </p>
         <p>
         নিয়ত হল কোন কাজ করার জন্য সংকল্প করার নাম মাত্র। এটা যে কেউ যেকোনো ভাষায় করতে পারে। তার শুধু এই খেয়াল থাকা দরকার যে সে কোন ওয়াক্তের কত রাকাত ফরয,সুন্নত বা নফল নামায আদায় করছে। 
         </p>
         <p class="one">
         এরপর অবয়ব ঢাকা অর্থাৎ সালাতের পোশাক সম্পর্কে হাদীসঃ
         </p>
         <div class="subtopic">মহিলাদের সতর</div>
         <p class="three">
         ১। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফযরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন আর তাঁর সঙ্গে অনেক মু’মিন মহিলা চাদর দিয়ে গা ঢেকে শরীক হতো।
         </p>
         <p class="three">
         যদি একটি কাপড়ে মহিলার সমস্ত শরীর ঢেকে যায় তবে তাতেই সালাত জায়েয হবে।[সহিহ বুখারি ৮/৩৭২]
         </p>
         <p class="three1">
         ২। আল্লাহ্ তা’আলা প্রাথমিক যুগের মুহাজির মহিলাদের উপর রহম করুন, যখন আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত <span class="highlight">"তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন ওড়না দ্বারা আবৃত করে"</span> নাযিল করলেন, তখন তারা নিজ চাদর ছিঁড়ে ওড়না হিসাবে ব্যবহার করল।[সহিহ বুখারি ৫২/৪৭৫৮] 
         </p>
         <p class="three1">
         ৩। একদা আসমা বিনতু আবূ বকর (রাঃ) পাতলা কাপড় পরিহিত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে নিজের মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললেনঃ হে আসমা! <span class="highlight">মেয়েরা যখন সাবালিকা হয় তখন এই দু’টো অঙ্গ ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গ প্রকাশ করা তার জন্য সংগত নয়, এ বলে তিনি তাঁর চেহারা ও দু’ হাতের কব্জির দিকে ইশারা করেন।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২৭/৪১০৪] 
         </p>
         <p class="three1">
         ৪। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নামবাসী দু’ প্রকার মানুষ, আমি যাদের (এ পর্যন্ত) দেখিনি। একদল মানুষ, যাদের সঙ্গে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, তা দ্বারা তারা লোকজনকে মারবে এবং <span class="highlight">এক দল স্ত্রী লোক, যারা কাপড় পরিহিত উলঙ্গ, যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের মতো। ওরা জান্নাতে যেতে পারবে না, এমনকি তার সুগন্ধিও পাবে না অথচ এত এত দূর হতে তার সুঘ্ৰাণ পাওয়া যায়।</span>[সহিহ মুসলিম ৩৮/২১২৮] 
         </p>
         <div class="subtopic">পুরুষের সতর</div>
         <p class="three">
         ৫। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাগানের এমন এক জায়গায় বসা ছিলেন যেখানে পানি ছিল এবং তাঁর হাঁটু অথবা এক হাঁটুর উপর অতিরিক্ত ছিলনা। যখন উসমান (রাঃ) আসলেন তখন হাঁটু কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেললেন।[সহিহ বুখারি ৫০/৩৬৯৫]
         </p>
         <p class="three1">
         ৬। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট বসলেন, তখন আমার উরুদেশ অনাবৃত ছিলো। তিনি বললেনঃ <span class="highlight">তুমি কি জানো না যে, উরুদেশ গোপন অঙ্গ?</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২৬/৪০১৪]
         </p>
         <p class="three1">
         ৭। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ <span class="highlight">মুসলিমের পরিধেয় লুঙ্গি-পায়জামা</span> নলার মধ্যভাগ পর্যন্ত থাকবে, তবে টাখনুদ্বয় পর্যন্ত রাখলেও কোনো গুনাহ হবে না। কিন্তু <span class="highlight">টাখনুদ্বয়ের নীচে গেলে তা জাহান্নামের আগুনে যাবে। যে অহংকারবশত নিজের লুঙ্গি হেঁচড়িয়ে চলে, আল্লাহ তার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করবেন না।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২৭/৪০৯৩]
         </p>
         <p class="three1">
         ৮। তোমাদের কেউ এক কাপড়ে পরে এমনভাবে যেন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় না করে যে, তার উভয় কাঁধে এর কোন অংশ নেই।[সহিহ বুখারি ৮/৩৫৯]
         </p>
         <p class="three1">
         ৯। ইবন ’আব্বাস, জারহাদ ও মুহাম্মদ ইবন জাহশ (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, <span class="highlight">ঊরু সতরের অন্তর্ভুক্ত।</span> আর আনাস (রাঃ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঊরু থেকে কাপড় সরিয়েছিলেন [আবূ ’আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ)] সনদের দিক থেকে আনাস (রাঃ)-এর হাদীস অধিক সহীহ আর জারহাদ (রাঃ)-এর হাদীস অধিকতর সতর্কতামূলক।[সহিহ বুখারি ৮/৩৭১]
         </p>
         <p class="one">
         অতএব, সারাংশ এই যে, পুরুষের জন্য সালাতের সময় দুই কাঁধ এবং তার লজ্জাস্থানসহ হাঁটু পর্যন্ত ঢাকার নির্দেশ রয়েছে। 
         </p>
         <p>
         আর কোনো নারীর ক্ষেত্রে তার মুখ ও দু'হাতের কব্জি ব্যতিত সম্পূর্ণ শরীর এমনভাবে ঢাকার নির্দেশ রয়েছে যেন তার দেহের গঠন বোঝা না যায়। অর্থাৎ, টাইট ফিটিং কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে। আবার উল্লিখিত ৯নং হাদীস অনুযায়ী চুল যেন এমনভাবে না বাঁধা হয় যে তা উটের পীঠের মতো একদিকে হেলে থাকে।
         </p>
         <p class="one">
         অবশেষে নিজ পোশাকের পরিচ্ছন্নতা ও নামাযের স্থান সম্পর্কে যা বলা হয়েছেঃ
         </p>
         <p class="three">
            ১। একবার এক ব্যাক্তি আয়িশা (রাঃ) এর মেহমান হল। অতঃপর সকালে সে তার কাপড় ধুতে লাগল। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেন, <span class="highlight">তুমি যদি (কাপড়ে) তা (বীর্য) দেখতে পাও তবে তোমার জন্য শুধু সে জায়গাটা ধুয়ে ফেলাই যথেষ্ট হবে। আর যদি তা না দেখ তবে তার আশে পাশে পানি ছিটিয়ে দিবে। আমি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে তা নখ দিয়ে ভাল করে আঁচড়ে ফেলতাম।</span> অতঃপর তিনি তা পরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।[সহিহ মুসলিম ২/২৮৮]
         </p>
         <p class="three">
            ২। রাবী বলেন, তিনি (উম্মু কায়স) আমাকে জানান যে, তিনি একবার তার এক পূত্রকে যে তখনো খাবার গ্রহণের বয়সে পৌছেনি তাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে এলেন। উবায়দুল্লাহ বলেন, তিনি আমাকে জানান যে, তার সে পুত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোলে পেশাব করে দিল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি আনিয়ে তাঁর কাপড়ের ওপর ছিটিয়ে দিলেন, এবং তা ভাল করে ধুলেন না।[সহিহ মুসলিম ২/২৮৭]
         </p>
         <p class="three">
            ৩। এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমাদের কারো কাপড়ে হায়েযের রক্ত লেগে গেলে সে কি করবে? তিনি বললেন, (প্রথমে) তা নখ দিয়ে আঁচড়ে ফেলবে। এরপর পানি দিযে রগড়িয়ে ফেলবে, তারপর ধুয়ে ফেলবে, তারপর তাতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।[সহিহ মুসলিম ২/২৯১]
         </p>
         <p class="three">
            ৪। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি বললেন, জেনে রাখ এ <span class="highlight">কবরবাসীদ্বয়কে আযাব দেয়া হচ্ছিল</span> তবে কোন কঠিন (কাজের) দরুন তাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছেনা। তাদের একজন চোগলখুরী করত। আর অপরজন <span class="highlight">তার পেশাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না।</span>[সহিহ মুসলিম ২/২৯২]
         </p>
         <p class="three">
            ৫। হান্নাদ ..... শাকীক থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বলেছেনঃ খালি পায়ে রাস্তা পদদলিত করা সত্বেও আমরা উযূ (ওযূ) করতাম না এবং <span class="highlight">আমাদের চুল ও কাপড় নামাযের মধ্যে গুটিয়ে রাখতাম না।</span>[সহিহ তিরমিযি ১/২০৪]
         </p>
         <p class="three">
            ৬। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ গোসলখানা ও কবরস্থান ব্যতীত সমস্ত জমীনই মসজিদ হিসাবে গণ্য (অর্থাৎ যে কোন স্থানে নামায পড়া যায়)।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৪৯২,ইবনু মাজাহ্‌, তিরমিযি]
         </p>
         <p class="three">
            ৭। উট রাখার স্থানে সালাত আদায় করবে না।[সহিহ তিরমিযি ২/৩৪৮, ইবনু মাজাহ্‌ ৭৬৮]
         </p>
         <p class="three">
            ৮। মাহমুদ ইবন খালিদ (রহঃ) ...... আতা ইবন আবু রাবাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেন, মহিলাগন যানবাহনের উপর নামায পড়তে পারবে কি? তিনি বলেন, স্বাভাবিক অথবা অস্বাভাবিক কোন অবস্থাতেই তাদের জন্য এর অনুমতি নাই। রাবী মুহাম্মদ ইবন শুআয়ব (রহঃ) বলেন, এই নির্দেশ কেবলমাত্র ফরয নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২২৮]
         </p>
         উপোরক্ত এই শর্তগুলো পূরণ করার পর সালাতের জন্য দাঁড়ানো যাবে।
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twenteeth">
         <label for="twenteeth">ওযূ এর সুন্নাহ্‌<div class="dsp">oju,ozu,wud,wuz,sunnah,sunnot,sunnat,er</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            সালাতের পূর্বে ওযূ করা অত্যাবশ্যক। আর এই ওযূ এর কিছু সুন্নত রয়েছে যা আদায়ের অনেকরকম পুরষ্কারের কথা হাদীসে বলা হয়েছেঃ
         </p>
         <p class="three">
            ১। তোমদের কেউ যখন ওযু করে তখন যেন নাকের ভেতর পানি প্রবেশ করায় এবং নাক ঝেড়ে সাফ করে।[সহিহ মুসলিম ২/২৩৭]
         </p>
         <p class="three">
            ২। যখন তোমাদের কেউ ঘুম থেকে উঠবে সে যেন নাকে পানি দিয়ে তিনবার নাক ঝেড়ে নেয়। কেননা, শয়তান তার নাকের ভেতর রাত্রি যাপন করে।[সহিহ মুসলিম ২/২৩৮]
         </p>
         <p class="three">
            ৩। ওযু করার সময় পায়ের গোড়ালি যে সব স্থানে পানি পৌছেনি সেগুলোর জন্য জাহান্নাম।[সহিহ মুসলিম ২/২৪১]
         </p>
         <p class="three">
            ৪। কোন মুসলিম কিংবা মু’মিন বান্দা (রাবীর সন্দেহ) ওযুর সময় যখন মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলে তখন তার চোখ দিয়ে অর্জিত গুনাহ পানির সাথে অথবা (তিনি বলেছেন) পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় এবং যখন সে দু’টি হাত ধৌত করে তখন তার দু’হাতের স্পর্শের মাধ্যমে সব গুনাহ পানির অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে যায়। অতঃপর যখন সে পা দুটি ধৌত করে, তখন তার দু’পা দিয়ে হাটার মাধ্যমে অর্জিত সব গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে যায়, এমনকি সে যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়।[সহিহ মুসলিম ২/২৪৪]
         </p>
         <p class="three">
            ৫। পূর্ণাঙ্গরূপে ওযু করার কারণে কিয়ামতের দিন তোমাদের মুখমণ্ডল, হাত ও পায়ের ওযুর স্থান জ্যোতির্ময় হবে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা সক্ষম তারা যেন নিজ নিজ মুখমণ্ডল, হাত ও পায়ের জ্যোতি বাড়িয়ে নেয়।[সহিহ মুসলিম ২/২৪৬]
         </p>
         <p class="three">
            ৬। আমার উম্মতের কিছুলোক কিয়ামতের দিন আমার কাছে হাওযে কাওসারে উপস্থিত হবে। আর আমি তাদেরকে তা থেকে এমনভাবে বিতাড়িত করব, যেভাবে কোন ব্যক্তি তার উটের পাল থেকে অন্যের উটকে বিতাড়িত করে থাকে। (এ কথা শুনে) লোকেরা জিজ্ঞেস করলঃ আল্লাহর নবী! আপনি কি আমাদেরকে চিনতে পারবেন? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ। তোমাদের এমন এক চিহ্ন হবে যা অন্য কারোর হবে না। ওযুর প্রভাবে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত-পায়ের দীপ্তি ও উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে পড়বে। উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত অবস্থায় তোমরা আমার নিকট আসবে।[সহিহ মুসলিম ২/২৪৭]
         </p>
         <p class="three">
            ৭। আমার উম্মতের জন্যে যদি কষ্টসাধ্য না হতো, তাহলে অবশ্যই তাদেরকে প্রত্যেক সালাতের সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।[সহহ মুসলিম ২/২৫২]
         </p>
         <p class="three">
            ৮। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দাড়ি খিলাল করতেন।[ইবনু মাজাহ্‌ ৪৩০, তিরমিযি ৩১]
         </p>
         <p class="three">
            ৯। যে মুসলিম সুন্দর রুপে উযূ (ওযূ) করে তারপর দাঁড়িয়ে দেহ ও মনকে পুরোপুরি তার প্রতি নিবদ্ধ রেখে দুই রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।[সহিহ মুসলিম ২/২৩৪]
         </p>
         <p class="three">
            ১০। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সা’ (৪ মুদ*) থেকে পাঁচ মুদ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করতেন এবং উযূ (ওযূ) করতেন এক মুদ দিয়ে।[সহিহ বুখারি ৪/২০১]
         <p class="exp">
            ( চার মুদ = ১ সা, প্রায় ৮৩০ গ্রাম। )
         </p>
         </p>
         <p class="three">
             ১১। একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধ পান করলেন। তারপর কুলি করলেন এবং বললেনঃ এতে তৈলাক্ত পদার্থ রয়েছে (এজন্য কুলি করা ভাল)।[সহিহ বুখারি ৪/২১১]
         </p>
         
         <p class="one">
            এই হলো উল্লাখযোগ্য ওযূ করার কিছু সুন্নত।
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twentyone">
         <label for="twentyone">মহিলাদের নামায‌<div class="dsp">women,woman,mohila,nari,namaz,salat,salah</div></label>
      <div class="content">
         <p class="two1">
            নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছ সেভাবে সালাত আদায় করবে।[সহিহ বুখারি ১০/৬৩১]
         </p>
         <p>
            পুরুষ এবং মুহিলাদের সালাতে কোনো পার্থক্য নেই। তবে হাদীসে কিছু বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে যেখানে মহিলাদের জন্য বিধান আলাদা। এগুলো হলোঃ
         </p>
         <p class="three">
           ১। কোনো মহিলা সালাত আদায়ের সময় তার দু'হাত কাধ বরাবর তুলবে এমনভাবে যেন তার কাপড় হতে হাত বেরিয়ে না যায়।[মাজমা আল-যাওয়া'ইদ]
         </p>
         <p class="two1">
           ২। রাসুল(সঃ) নিষেধ করেছেন যেন তারা সেজদায় কুকুরের মতো হাত বিছিয়ে না দেয়।[সহিহ মুসলিম]</p> 
         <p class="two1">
           কোনো মহিলা সেজদায় গেলে তার উরু ও উদর পরস্পর সংলগ্ন রাখা উচিত এবং সে যেন পুরুষের মতো বাহু ছড়িয়ে না দেয়।[আল মুসান্নাফ লি-আব্দির্‌ রায্‌যাক]
           </p>
         <p class="one">
           মূলত এই বিষয়সমূহই পুরুষ ও নারীর সালাতের মধ্যে আলাদা। উল্লেখ্য যে দ্বিতীয় হাদীসটির পরের অঙ্গশের বিশুদ্ধতা সন্দেহজনক। এছাড়া জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে ইমামতি ও কেরাতের ব্যাপারে কিছু বিধান রয়েছেঃ 
         </p>
         <p class="three">
            ১। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমাদের ঘরে আমি ও একটি ইয়াতিম ছেলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায) আদায় করলাম। আর <span class="highlight">আমার মা উম্মে সুলাইম (রাঃ) আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৭২৭]
         </p>
         <p class="exp">
            ( পুরুষ ও মহিলার জামাআতে সর্বদা পুরুষ ইমামতি করবে এবং মহিলা পিছনের কাতারে দাঁড়াবে তা একজনের কাতার হলেও। )
         </p>
         <p class="three">
            ২। নামাযের মধ্যে ইমামের কোনরূপ ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে পুরুষেরা “সুবহানাল্লাহ” বলবে এবং <span class="highlight">স্ত্রীলোকেরা হাতের উপর হাত তালি মেরে শব্দ করবে। স্ত্রীলোকদের জন্য হাতে হাত মেরে শব্দ করার পদ্ধতি এই যে, তারা ডান হাতের আংগুলি দ্বারা বাম হাতের তালুতে মারবে।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৯৩৯,৯৪২, বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ, তিরমিযি, ইবনে মাজাহ্‌]
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twentytwo">
         <label for="twentytwo">মুহাম্মাদ (সঃ)‌ এর সালাত<div class="dsp">muham,moham,salat,namaz,salah,sunn</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            ইসলামে মূলত ৪ জনের প্রণীত শিক্ষাব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়। ইমাম আবু হানিফা,ইমাম মালিক,ইমাম শাফই এবং ইমাম আহমাদ ইবনে হামবাল। যেহেতু একজন সাধারণ ব্যক্তির জন্য ইসলামের সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করা কষ্টসাধ্য তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ৪ জন এর দ্বারা গঠিত শিক্ষাব্যবস্থাকে অনুসরণ করা হয় শিক্ষার্থীদেরকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য। 
         </p>
         <p>
            হাজারো হাদীসের মধ্যে এমন অনেক হাদীস আছে যারা পরস্পরবিরোধী। কোনটি রেখে কোনটি অনুসরণ করা উচিত এই ভেবে মানুষ বিভ্রান্ত হতে পারে। এজন্য ইসলামের মাযহাবগুলো একটি নির্দিষ্ট হাদীসের ধারা মেনে চলে যেন মানুষ সহজে ইসলাম শিক্ষা অর্জন করতে পারে। 
         </p>
         <p class="three2">
            তবে এখানে আলোচনার বিষয় হচ্ছে সহিহ হাদীস অনুযায়ী নবী মুহাম্মাদ(সঃ) কিভাবে সালাত আদায় করতেন। একজন সচেতন মুমিন হিসেবে আমাদের উচিত সর্বোচ্চ মাত্রায় রাসুল(সঃ) কে অনুসরণ করার চেষ্টা করা। আর এজন্য সহিহ হাদীসের বিকল্প নেই। শেখ আস্‌সিম আল হাকীম এই প্রসঙ্গে একটি ভিডিওতে শিখিয়েছেন কিভাবে সহিহ হাদীস অনুযায়ী নবী(সঃ) নামায পড়তেন।
         </p>
         <div class="vid">
            <iframe width="730px" class="mob-vid" height="300px" src="https://www.youtube.com/embed/vx1rz-28HNk?si=auCpe6VHCczdV03f" title="YouTube video player" frameborder="0" allow="accelerometer; autoplay; clipboard-write; encrypted-media; gyroscope; picture-in-picture; web-share" referrerpolicy="strict-origin-when-cross-origin" allowfullscreen></iframe>
         </div>
         <p class="one">
            ধাপে ধাপে নিম্নে বিভিন্ন সহিহ হাদীস উল্লেখপূর্বক সালাতের সুন্নাহ পদ্ধতি ব্যাখা করা হলোঃ
         </p>
            <h2><span  class="topic">১। তাকবীর⇒</span></h2>
            <p class="three1">
             ১। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দেখেছি- যখন তিনি সালাত শুরু করতেন তখন উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন।[সহিহ মুসলিম ৪/৩৯০]
            </p>
            <p class="three1">
             ২। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকবীর বলতেন, কান পর্যন্ত উভয় হাত উত্তোলন করতেন।[সহিহ মুসলিম ৪/৩৯১]
            </p>
            <p>
             সুতরাং, তাকবীর বলার সময় দুই হাত হয় কাঁধ না হয় কান বরাবর তোলা উচিত।
            </p>
            <h2><span  class="topic">২। হাত বাঁধা⇒</span></h2>
            <p class="three1">
             ১। লোকদের নির্দেশ দেওয়া হত যে, সালাতে প্রত্যেক ডান হাত বাম বাহুর উপর রাখবে।[সহিহ বুখারি ৮/৭৪০]
            </p>
            <p class="three1">
             ২। সুওয়ায়দ ইবনু নাসর (রহঃ) ... ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি তার ডান হাত রাখলেন বাম হাতের উপর অর্থাৎ এক কব্জি অন্য কব্জির ওপর কিংবা এক হাত অন্য হাতের উপর রাখলেন।[সহিহ আন-নাসাঈ ১১/৮৯২]  
            </p>
            <p class="three">
             ৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বেঁধে রাখতেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৭৫৯]
            </p>
            <p class="one">
               অর্থাৎ, তাকবীরের পর বাম হাতের উপর ডান হাত স্থাপন করে বুকে বাঁধাতে হবে।
            </p>
            <h2><span  class="topic">২। সানা পাঠ⇒</span></h2>
            <p class="three1">
               ১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শুরু করার পর বলতেনঃ
            </p>
            <p class="one">
               سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ
            </p>
            <p class="one1">
               হে আল্লাহ, পবিত্রতা এবং প্রশংসা আপনারই; বরকতময় আপনার নাম; অতি উচ্চ আপনার মর্যাদা, আর কোন ইলাহ নেই আপনি ছাড়া।
               [সহিহ তিরমিযি ২/২৪২-২৪৩, ইবনে মাজাহ্‌]
            </p>
            <p class="three1">
               ২। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শুরু করলে তাকবীরে তাহরীমা বলে কিরআত শুরু করার আগে কিছুক্ষণ চুপ থাকতেন। এ দেখে আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আপনি সালাতের তাকবীরে তাহরীমা ও কিরআতের মাঝে যখন চুপ থাকেন তখন কি পড়েন? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তখন বলিঃ
            </p>   
            <p class="one">
               اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَاىَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنْ خَطَايَاىَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ اللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَاىَ بِالثَّلْجِ وَالْمَاءِ وَالْبَرَدِ
            </p>
            <p class="one1">
               আল্ল-হুম্মা বা-ইদ বায়নী ওয়াবায়না খত্বা-ইয়া-ইয়া কামা- বা-আদতা বায়নাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিব, আল্ল-হুম্মা নাক্কিনী মিন খতা-ইয়া-ইয়া কামা- ইউনাক্কাস সাওবুল আবইয়াযু মিনাদ দানাস, আল্লহুম্মাগ সিলনী মিন খত-ইয়া-ইয়া বিস্‌সালজি ওয়াল মা-য়ি ওয়াল বারাদ
            </p>
            <p class="three">
               <u>অর্থ-</u> হে আল্লাহ আমার ও আমার পাপের মাঝে এতটা দূরত্ব সৃষ্টি করে দাও পশ্চিম ও পূর্বের মধ্যে তুমি যে পরিমাণ দূরত্ব রেখেছ। হে আল্লাহ! আমাকে আমার পাপ থেকে এমনভাবে পরিষ্কার করে দাও যেমনভাবে সাদা কাপড় থেকে ময়লা পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ! তুমি আমার পাপসমূহ বরফ, পানি ও তুষারের শুভ্রতা দ্বারা ধুয়ে পরিষ্কার করে দাও।[সহিহ মুসলিম ৫/৫৯৮]
            </p>
            <p class="one">
               উপোরক্ত যেকোনোটিই পাঠ করে সালাত শুরু করা যাবে। সানা পড়া সুন্নত। তাই এটা ছেড়ে দিলেও নামায হয়ে যাবে।
            </p>
            <h2><span  class="topic">৩। কিরআত⇒</span></h2>            
            <div class="subtopic">আউযুবিল্লাহ্‌ পাঠ</div>
            <p class="three">
               ১। <span class="verse">
                فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
               </span>
            <p class="one1">
               <u>অর্থ-</u> অতএব, যখন আপনি কোরআন পাঠ করেন তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করুন।[১৬ঃ৯৮]
            </p>
            <p class="three">
               অর্থাৎ, কুরআন তিলাওয়াতের পূর্বে  
               <span class="verse"> أعوذُ بِٱللَّهِ مِنَ ٱلشَّيۡطَٰنِ ٱلرَّجِيمِ
               </span>পাঠ করা।
            </p>  
            </p>
            <div class="subtopic">সূরা ফতিহা পাঠ</div>
            <p class="three">
               ২। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর (রাঃ) এবং উমর (রাঃ)<span class="verse">
                الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِين </span>দিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ <span class="highlight">যে ব্যাক্তি সালাতে সূরা ফাতিহা পড়ল না তার সালাত (নামায/নামাজ) হল না।</span> যদি তোমরা সূরা ফাতিহার চাইতে বেশী না পড়, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় হয়ে যাবে। আর যদি বেশী পড় তা উত্তম।[সহিহ বুখারি ১০/৭৪৩,৭৫৬,৭৭২]
            </p>
            <p class="three">
               ৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ <span class="highlight">ইমাম যখন ’আমীন’ বলেন, তখন তোমারও 'আমীন' বলো।</span> কেননা, যারা 'আমীন' (বলা) ও ফিরিশতাদের 'আমীন' (বলা) এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।[সহিহ বুখারি ১০/৭৮০]
            </p>
            <p class="three">
               ৪। আবূল ওয়ালীদ ও মুহাম্মাদ ইবনু কাছীর .... ইমরান ইবনু হুসাইয়েন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের নামায পড়াচ্ছিলেন। এক ব্যক্তি এসে তাঁর পিছনে ইকতিদা করে সূরা “সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা” পাঠ করে। নামায শেষে <span class="highlight">নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করেন, তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি সূরা পাঠ করেছে?</span> জবাবে তারা বলেন, এক ব্যক্তি।
               আবূল ওয়ালীদ তাঁর বর্ণিত হাদীছে শোবার সূত্রে উল্লেখ করেছেন যে, অতঃপর আমি (শোবা) কাতাদাকে বলি, সাঈদ বলেননি যে, “কুরআন পাঠকালে নীরব থাক?” তিনি বলেনঃ <span class="highlight">যে নামাযে কিরাআত উচ্চস্বরে পঠিত হয়, তার জন্যই এই হুকুম।</span> ইমাম ইবনু কাছীর তাঁর হাদীছে বলেনঃ অতঃপর আমি কাতাদাকে বলি, সম্ভবত কিরাআত পাঠ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন অপছন্দ করেছেন। তখন তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি অপছন্দ করতেন তবে কিরাআত পাঠ করতে নিষেধ করতেন।
               কেউ যদি সালাতে উম্মুল কুরআন (সুরা ফাতিহা) না পড়ে, তবে তার সালাত হবে না। কিন্তু ইমামের পিছনে হলে ভিন্ন কথা।
               [সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮২৮, সহিহ তিরমিযি ২/৩১৩]
            </p>
            <div class="subtopic">কিরাআত ও তাসবীহ পাঠের সময় ঠোট নাড়ানো</div>           
            <p class="three">
               ৫। উমর ইবনু হাফস্ (রহঃ) ... আবূ মা’মার (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যুহর ও আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনারা কি করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাঁড়ির (মুবারকের) নড়াচড়ায়।[সহিহ বুখারি ১০/৭৬০]
            </p>
            <p class="three">
               ৬। তোমার যবান যেন সব সময় আল্লাহর যিকিরে আর্দ্র থাকে।[সহিহ তিরমিযি ৫১/৩৩৭৫]
            </p>
            <p class="exp">
               ( ইমামের পিছনে নামায পড়লে যখন উচ্চস্বরে তিলাওয়াত হয় তখন মুসল্লিদের কিরআত পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে নিরবে তিলাওয়াত হলে নিঃশব্দে ঠোট নাড়ানো সুন্নত। )
            </p>
            <p class="one">
               সুতরাং, সালাতের শুরুতে সূরা ফাতিহা পড়া বাধ্যতামূলক এবং অতিরিক্ত কুরআন তিলাওয়াত সুন্নত। ফাতিহা পাঠের আগে আঊযুবিল্লাহ্‌, বিসমিল্লাহ্‌ বলাও সুন্নত। 
            </p>
            <h2><span  class="topic">৪। রুকু ও সিজদাহ⇒</span></h2>
            <div class="subtopic">হাত উঠানো</div>
            <p class="three">
               ১। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করতেন, তখন উভয় হাত তাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর <span class="highlight">রুকুতে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলতেন এবং যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপভাবে দু’হাত উঠাতেন</span> এবং<span class="verse"> سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ </span>ও <span class="verse">رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ </span>বলতেন। কিন্তু সিজদার সময় এরূপ করতেন না।আর সিজদার থেকে মাথা উঠাবার সময়ও এরূপ করতেন না।[সহিহ বুখারি ১০/৭৩৫,৭৩৮]
               <p class="one1">
               হান্নাদ (রহঃ) ..... আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি একদিন উপস্থিত লোকদের বললেন আমি কি তোমাদের নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাতের মত সালাত পড়ব? এরপর তিনি সালাত পড়লেন এবং তাতে প্রথমবার অর্থাৎ তাকবীরে তাহরীমা ব্যতীত অন্য কোন সময় হাত তুললেন না।[তিরমিযি ২/২৫৭(হাসান), মিশকাত ৮০৯]
               </p>
            </p>
            <p class="exp">
               ( এখানে রুকু তে হাত তোলা ও না তোলা দুই রিওয়ায়াতই রয়েছে। তবে প্রথমটিই সহিহ এবং অধিক গ্রহণযোগ্য। )
            </p>
            <div class="subtopic">রুকুর পদ্ধতি</div>
            <p class="three">
               ২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... মুসআব ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি আমার পিতার পাশে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। এবং (রুকু’র সময়) দু’হাত জোড় করে উভয় উরুর মাঝে রাখলাম। আমার পিতা আমাকে এরূপ করতে নিষেধ করলেন এবং বললেন, পূর্বে আমরা এরূপ করতাম; পরে আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে এবং <span class="highlight">হাত হাঁটুর উপর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৭৯০]
            </p>
            <p class="three">
               ৩। যখন তুমি সালাতে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। তারপর কুরআন থেকে যতটুকু তোমার পক্ষে সহজ ততটুকু পড়বে। এরপর রুকূ’তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ’ আদায় করবে। তারপর রুকূ’ থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। এরপর সিজদা থেকে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদায় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদা করবে। তারপর পূর্ণ সালাত এভাবে আদায় করবে। তিনি(রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সালাতর বেজোড় রাকাআতে (সিজদা থেকে) উঠে না বসে দাঁড়াতেন না। <span class="highlight">যখন রুকূ’ করতেন তখন দু’ হাত দিয়ে হাঁটু শক্ত করে ধরতেন এবং পিঠ সমান করে রাখতেন।</span> তারপর রুকূ’ থেকে মাথা উঠিয়ে <span class="highlight">সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যাতে মেরুদন্ডের হাড়গুলো স্ব-স্ব স্থানে ফিরে আসত।</span>[সহিহ বুখারি (১০/৭৯৩,৮২২,৮২৮), সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৭৩১]
            </p>
            <p class="three">
               ৪। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... সাবিত (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আমাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাতের বর্ণনা দিলেন। তারপর তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে দেখালেন। তিনি যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, তখন (এতক্ষণ) দাঁড়িয়ে রইলেন যে, আমরা মনে করলাম, তিনি (সিজদার কথা) ভুলে গেছেন।[সহিহ বুখারি ১০/৮০০]
            </p>
            <div class="subtopic">রুকু ও সিজদাহ্‌র তাসবীহ</div>
            <p class="three">
               ৪। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকুর মধ্যে “সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম” এবং সিজদায় “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পড়তেন।
               [সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮৭১, মুসলিম, নাসাঈ]
            </p>
            <p class="three">
               ৫। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ’ ও সিজদায় এ দু’আ পড়তেন
               <p class="one">
               سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي 
               </p>
               হে আমাদের রব আল্লাহ্! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ্! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
               <p class="one1">
               নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই সিজদার মাঝে নিম্নের দু’আ পাঠ করতেন। “আল্লাহুম্মাগফির লী, ওয়ারহামনী, ওয়া আফিনী, ওয়াহদিনী, ওয়ারযুকনী”।
               [সহিহ বুখারি ১০/৭৯৪,সুনান আবু-দাউদ ২/৮৫০,ইবনু মাজাহ্‌, তিরমিযি]              
               </p>
            </p>            
            <p class="three">
               ৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম যখন <span class="verse">
               سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ  </span>
               বলেন, তখন তোমরা <span class="verse">
               اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ </span>
               বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফিরিশতাগণের সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।[সহিহ বুখারি ১০/৭৯৬]
            </p>
            <p class="three">
               ৭। আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... রিফা’আ ইবনু রাফি’ যুরাকী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সালাত (নামায) আদায় করলাম। তিনি যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠিয়ে<span class="verse"> سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ </span>বললেন, তখন পিছন থেকে <span class="highlight">এক সাহাবী <span class="verse">رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ، حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ </span>বললেন।</span> সালাত শেষ করে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কে এরূপ বলেছিল? সে সাহাবী বললেন, আমি। তখন তিনি বললেনঃ আমি দেখলাম <span class="highlight">ত্রিশ জনের বেশী ফিরিশতা এর সাওয়াব কে আগে লিখবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছেন।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৭৯৯]
            </p>
            <div class="subtopic">সিজদাহ্‌র পদ্ধতি</div>
            <p class="three">
               ৮। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা করতে এবং চুল কাপড় না গুটাতে আদিষ্ট হয়েছিলেন। (অঙ্গ সাতটি হল) কপাল, দু’হাত, দু’হাঁটু ও দু’পা। তিনি হাত দিয়ে নাকের প্রতি ইশারা করে এর অন্তর্ভুক্ত করেন, আর দু’হাত,  দু’পায়ের আঙ্গুলসমূহ দ্বারা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ <span class="highlight">তোমরা সিজদা করার সময় উটের ন্যায় বসবে না এবং সিজদায় যেতে মাটিতে হাঁটু রাখার পূর্বে হাত রাখবে।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৮০৯,৮১২, সুনান আবু-দাউদ ২/৮৪০]
            </p>
            <p class="three">
               ৯। সালামা ইবনু শাবীব, আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর, আহমদ ইবনু ইবরাহীম আদ দাওরাকী, হাসান ইবনু আলী আল হুলওয়ানী এবং আরো একধিক রাবী (রহঃ) ..... ওয়াইল ইবনু হুজর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন আমি রাসূল কে দেখেছি, তিনি যখন সিজদা করছিলেন তখন দুই হাত রাখার আগে দুই হাটু রাখছিলেন।[তিরমিযি ২/২৬৮, ইবনে মাজাহ্‌্‌ ৮৮২(যঈফ)]
               <p class="exp">
               ( উক্ত হাদীসটি যঈফ তথা দুর্বল। সহিহ আভিমত হচ্ছে সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত রাখা। )
               </p>
            </p>
            <p class="three">
               ১০। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সিজদায় (অঙ্গ প্রত্যঙ্গের) সামঞ্জস্য রক্ষা কর এবং তোমাদের মধ্যে <span class="highlight">কেউ যেন দু’হাত বিছিয়ে না দেয় যেমন কুকুর বিছিয়ে দেয়।</span>
               নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন, তখন তিনি তাঁর হস্তদ্বয়কে এত দূরে রাখতেন যে, কোন বকরীর বাচ্চা ইচ্ছা করলে এর নীচ দিয়ে চলে যেতে পারত। 
               <p class="one1">
               যখন সিজদা করতেন তখন <span class="highlight">তাঁর উভয় পায়ের আঙ্গুলীর মাথা কেবলামুখী করে দিতেন।</span>[সহিহ বুখারি (১০/৮২২,৮২৮), সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮৯৮, মুসলিম, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ্‌্‌]
            </p>
            <p class="three">
               ১১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, <span class="highlight">তিনি আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) কে সালাতে আসন পিড়ি করে বসতে দেখেছেন।</span> আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি সে সময় অল্প বয়স্ক ছিলাম। আমিও সেরূপ করলাম। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) আমাকে নিষেধ করলেন এবং তিনি বললেন, <span class="highlight">সালাতে (বসার) সুন্নাত তরীকা হল তুমি ডান পা খাড়া করবে এবং বাঁ পা বিছিয়ে রাখবে।</span> তখন আমি বললাম, আপনি কি এরূপ করেন? তিনি বললেন, <span class="highlight">আমার দু’পা আমার ভার বহন করতে পারে না।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৮২৭]
            </p>
            <p class="three">
               ১২। কুতায়বা (রহঃ) .... আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন আমি বারা ইবনু আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, <span class="highlight">সিজদার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর চেহারা কোথায় রাখতেন? তিনি বললেন দুই হাতের মাঝে।</span>[সহিহ তিরমিযি ২/২৭১, মুসলিম ২/১৩]
            </p>
            <p class="three">
               ১৩। ইয়াহ্ইয়া ইবনু মুঈন ..... ইবনু জুরায়েজ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ জুবায়ের-তাউস হতে শ্রবণ করে আমাকে বলেছেনঃ আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে ইকআ (গোড়ালির উপর পাছা রেখে বসা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। জবাবে তিনি বলেনঃ তা সুন্নাত।
               তাঁর(নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) <span class="highlight">দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময়টুকু সিজদার সময়ের সমপরিমাণ ছিল, এবং এস্থানে তিনি “রাব্বিগফিরলি” পাঠ করেন।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮৪৫,৮৭৪]
            </p>
            <p class="exp">
               ( সহিহ রিওয়ায়াত অনুযায়ী উক্ত তাসবীহটি দুই বার পাঠ করার কথা বলা হয়েছে। )
            </p>
            <p class="three">
               ১৪। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সিজদা কালীন সময়ে বান্দা আল্লাহ তায়ালার সর্বাধিক নৈকট্য প্রাপ্ত হয়। অতএব তোমরা এ সময় অধিক দোয়া পাঠ করবে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম <span class="highlight">রুকু ও সিজদায় এই দোয়াটি অধিক পাঠ করতেনঃ “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগফিরলি”।</span>
               <p class="one1"> 
               মুসাদ্দাদ (রহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। <span class="highlight">রুকু আর সিজদা কালীন সময়ে আমাকে কিরাত পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮৭৫-৮৭৭, মুসলিম, নাসাঈ]
            </p>
            <p class="three">
               ১৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ..... সাদী (রহঃ) থেকে তাঁর পিতা অথবা চাচার সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নামাযরত অবস্থায় দেখেছি। তিনি রুকু ও সিজদার মধ্যে “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি” তিনবার পাঠ করার সমপরিমাণ সময় অবস্থান করতেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮৮৫]
            </p>            
            <h2><span  class="topic">৪। তাশাহ্‌হুদ⇒</span></h2>
            <p class="three">
               ১। আল্লাহ্ নিজেই তো সালাম, তাই যখন তোমরা কেউ সালাত (নামায) আদায় করবে, তখন সে যেন বলেঃ
               <p class="one">
               التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ
               </p>
               সমস্ত মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর প্রত্যেক বান্দার কাছে তা পৌঁছে যাবে।
               <p class="three1">
               এরপর বলবে,
               </p>
               <p class="one">
               أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ 
               </p>
               আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন মাবূদ নাই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
               <p class="one1">
               [সহিহ বুখারি ১০/৮৩৫]
            </p>
            <p class="three">
               ২। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহ্হুদের জন্য বসেছিলেন তখন <span class="highlight">বাম পা বিছিয়ে দিয়েছিলেন এবং ডান পায়ের অগ্রভাগ (আঙ্গুলিসমূহ) কিবলার দিকে স্থাপন করেছিলেন।</span>
               তাশাহ্হুদ নিঃশব্দে পাঠ করা(শুধু ঠোট নাড়ানো) হলো সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত।
               তাশাহুদ পাঠের সময় <span class="highlight">শাহাদাত আংগুল দ্বারা ইশারা করতেন।</span>[সহিহ তিরমিযি ২/২৯৩,২৯১, সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৭২৩,৯০৬,৭৩৪]
            </p>
            <p class="three">
               ৩। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে বসতেন তার ডান হাত তার উরুর উপর রাখতেন ও বন্ধ করে দিতেন অর্থাৎ তার সমস্ত অঙ্গূলি, এবং বৃদ্ধাঙ্গলির সংলগ্ন অঙ্গুল (তজর্নি) দ্বরা ইশারা করতেন আর তাঁর বাম হাত তাঁর বাম উরুর উপর রাখতেন।[সহিহ আন-নাসাঈ ১৩/১২৭০]
            </p>
            <h2><span  class="topic">৫। শেষ বৈঠক⇒</span></h2>
            <p class="three">
             যখন শেষ রাকাআতে বসতেন তখন বাঁ পা এগিয়ে দিয়ে ডান পা খাড়া করে নিতম্বের উপর বসতেন। তিনি যখন চতুর্থ রাকাতের পর বসতেন, তখন তিনি নিজের উভয় পা ডান দিকে বের করে দিতেন এবং বাম পাশের পাছার উপর ভর দিয়ে বসতেন। তিনি যখন চতুর্থ রাকাতের পর বসতেন, তখন তিনি নিজের উভয় পা ডান দিকে বের করে দিতেন এবং বাম পাশের পাছার উপর ভর দিয়ে বসতেন।[সহিহ বুখারি ১০/৮২৮, সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৭৩১]
            </p>
            <p class="exp">
               ( উক্ত হাদীসটি দুই রাকাত সালাতের যেমন ফজরের সালাতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তখন দ্বিতীয় রাকাতই শেষ রাকাত। )
            </p>
            <h2><span  class="topic">৬। দুরূদ ও দোয়া⇒</span></h2>
            <p class="three">
               ১। কায়স ইবনু হাফস ও মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আবদুর রাহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতর উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব।
               তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বলঃ
            </p>
            <p class="one">
               اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيূদ
            </p>
            <p class="one1">
               হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইব্‌রাহীম (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রাহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইব্‌রাহীম (আলাইহিস সালাম) এবং ইব্‌রাহীম (আলাইহিস সালাম) এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদায় অধিকারী।[সহিহ বুখারি ৫০/৩৩৭০]
            </p>
            <p class="exp">
               ( সর্বশেষ রাকাতে বসা অবস্থায় তাশাহ্‌হুদ ও দরূদ পাঠের সময়সহ সম্পূর্ণ সময় নবী(সঃ) আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতেন। )
            </p>
            <p class="three">
               ২। কুতাইবা ইবনু সায়ীদ (রহঃ) ... আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরয করলেন, আমাকে সালাতে পাঠ করার জন্য একটি দু’আ শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন, এ দু’আটি বলবেঃ
            </p>
               <p class="one">
               اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
               </p>
            <p class="three">
               হে আল্লাহ্! আমি নিজের উপর অধিক যুলুম করেছি। আপনি ছাড়া সে অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই। আপনার পক্ষ থেকে আমাকে তা ক্ষমা করে দিন এবং আমার উপর রহমত বর্ষণ করুন। নিশ্চই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
            </p>
            <p class="three">
               ৩।  আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... উরওয়া ইবনু যুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) তাঁকে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বলে দু’আ করতেনঃ
            </p>
            <p class="one">
               اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
            </p>
            <p>
               আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা বিকা মিন আজাবিল কাবার, অয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসিহ দাজ্জাল, অয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহিয়া অয়া ফিতনাতিল মামাত। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনল মাসামি ওয়াল মাগরাম
            </p>
            <p class="one1">
               <u>অর্থ-</u> কবরের আযাব থেকে, মসীহে দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে ইয় আল্লাহ! আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ইয়া আল্লাহ্! গুনাহ্ ও ঋণগ্রস্থতা থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাই।
            </p>
            <p class="three">
               ৪। উবায়দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) ..... মুআয ইব্‌ন জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত ধরে বলেন, হে মুআয! আল্লাহর শপথ, আমি তোমাকে ভালবাসি। অতঃপর তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে কিছু ওসয়িত করতে চাই; তুমি নামায পাঠের পর এটা কোন সময় ত্যাগ করবে না। তা হলঃ
            </p>
               <p class="one">   
               “আল্লাহুম্মা আইন্নী আলা যিক্‌রিকা ওয়া শুক্‌রিকা ওয়া হুস্‌নি ইবাদাতিক।”
               </p>
            <p class="one1">
               <u>অর্থ-</u> হে আল্লাহ্‌! আমাকে সাহায্য কর তোমাকে স্মরণ করতে আর তোমার শুকরিয়াদায় করতে এবং উত্তমরূপে তোমার ইবাদত করতে।
            </p>
            <p class="exp">
               ( দোয়াটি সালাম ফিরানোর পূর্বে তাশাহ্‌হুদ,দরূদ পাঠের পর করা উত্তম। কেননা আল্লাহ্‌ তায়ালা সেই সময় দোয়া কবুল করেন। )
            </p>
            <h2><span  class="topic">৬। সালাম ফিরানো⇒</span></h2>
            <p class="three">
               ১। (সালাতের বৈঠকে) উরুর ওপর হাত রেখে ডানে-বামে অবস্থিত তোমাদের ভাইকে (মুখ ফিরিয়ে) ’আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতূল্লাহ’ বলাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট।[সহিহ মুসলিম ৪/৪৩১]
            </p>
            <p class="three">
               ২। মুহাম্মাদ ইবন কাছীর (রহঃ) ...... আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম <span class="highlight">প্রথমে ডান দিকে এবং পরে বাম দিকে এমনভাবে মুখ ঘুরিয়ে সালাম ফিরাতেন যে, তাঁর মুখমণ্ডলের শুভ্র অংশটি পরিলক্ষিত হত</span> এবং তিনি আসসালামু আলায়কুম ওয়া রহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরাতেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৯৯৬, তিরমিযি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ্‌]
            </p>
            এই হলো সালাতের সাধারণ নিয়ম। সালাতে মুহাম্মাদ(সঃ) যা করেন নাই সেটা আমাদের বাতিল করতে হবে। আমাদের উচিত সর্বোচ্চ সুন্নাহ্‌ পদ্ধতি অনুসরণ করা। কিন্তু কোনো কিছুর যঈফ হাদীসও বিদ্যমান থাকলে সেটার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করা উচিত নয়।


            <p class="one">
            যেসব কারণে কোনো ব্যক্তির সালাত নষ্ট হয় তা হলোঃ
            </p>
            <p class="three1">
               ১। নামাযীর নামায ঐ সময় নষ্ট হয়-যখন তার সামনে উটের পিঠের হাওদার পিছন ভাগের কাঠের মতো কোন কিছু না থাকে (অর্থাৎ সুত্‌রা না থাকে) এবং তার সামনে দিয়ে গাধা, কাল কুকুর এবং স্ত্রীলোক গমন করে। কাল কুকুর হল শয়তান।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৭০২,মুসলিম, তিরমিযি, নাসাঈ]
            </p>
            <p class="three">
               ২। একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত আদায়কালে একটি ছাগলছানা তাঁর সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে চাইলে তিনি সেটিকে বাধা দিলেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৭০৯]
            </p> 
            <p class="three">
               ৩। ঐ ব্যক্তির সালাত হয় না যে (সঠিকভাবে) অযু করে না এবং ঐ ব্যক্তির অযু হয় না যে তাতে আল্লাহর নাম(বিসমিল্লাহ্‌) নেয় না।
            </p>
            <p class="one1">
               যে ব্যাক্তি উযূ (ওযূ) ও গোসলের সময়- নামাযের উযূর বা অপবিত্রতার গোসলের নিয়াত করে না- তার উযূ ও গোসল হয় না।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/১০১-১০২]
            </p>
            <p class="exp">
               ( যেসব কারণে ওযূ ভেঙ্গে যায় সেসব কারণেই সালাত নষ্ট হয়ে যায়। )
            </p>
            <p class="three">
               ৪। يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنتُمْ سُكَارَىٰ حَتَّىٰ تَعْلَمُوا مَا تَقُولُو
               <p class="one1">
                  <u>অর্থ-</u> হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন নামাযের ধারে-কাছেও যেওনা, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ,[৪ঃ৪৩]
               </p>
               <p class="three1">
                  নেশা উদ্রেককারী প্রতিটি বস্তু মদের অন্তর্ভুক্ত। আর নেশা সৃষ্টিকারী প্রতিটি বস্তু হারাম। যে ব্যক্তি একবার <span class="highlight">নেশা উদ্রেককারী জিনিস পান করলো সে তার চল্লিশ দিনের সালাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো।</span> সে যদি তওবা করে আল্লাহ তার তওবা কবূল করতে পারেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২১/৩৬৭২,৩৬৮০, ইবনে মাজাহ্‌্‌ ৩৩৭৭]
               </p>
            </p>
            <p class="three">
               ৫।ইবরাহিম ইবনু মূসা (রহঃ) ... যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে সালাত (নামায/নামাজ)-এর মধ্যে কথা বলতাম। আমাদের যে কেউ তার সঙ্গীর সাথে নিজ দরকারী বিষয়ে কথা বলত। অবশেষে এ আয়াত নাযিল হল-
               <p>
               حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ
               </p>
               <p class="one1">
               <u>অর্থ-</u> তোমরা তোমাদের সালাত সমূহকে সংরক্ষণ কর ও নিয়মানুবর্তিতা রক্ষা কর; বিশেষত মধ্যবর্তী (আসর) সালাতে, আর তোমরা (সালাতে) আল্লাহর উদ্দেশ্যে একাগ্রচিত্ত হও।[সূরা বাকারা ২ঃ২৩৮]</p>
               <p class="one1">
               এরপর থেকে আমরা সালাতে নিরব থাকতে আদিষ্ট হলাম।
            </p>
            <p class="three">
               ৬। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লোকদের কি হল যে, তারা সালাতে আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকায়? এ ব্যাপারে তিনি কঠোর বক্তব্য রাখলেন; এমনকি তিনি বললেনঃ যেন তারা অবশ্যই এ থেকে বিরত থাকে, অন্যথায় অবশ্যই তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেওয়া হবে।[সহিহ বুখারি ১০/৭৫০]
               </p>
               <p class="three1">
               মূসা’দ্দাদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাতে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ এটা এক ধরণের ছিনতাই, যার মাধ্যমে শয়তান বান্দার সালাত (নামায/নামাজ) থেকে অংশ বিশেষ কেড়ে নেয়।[সহিহ বুখারি ১০/৭৫১ ]
            </p>
            <p class="exp">
               ( এখানে সালাত নষ্ট হওয়ার কথা বলা হয়নি। তবে এতে করে সালাতের সওয়াব কম হয়। এবং অতিরিক্ত মাত্রায় গেলে সালাত নষ্ট হয়ে যায় যখন নামাযীর আর মনযোগ থাকে না। )
            </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twentythree">
         <label for="twentythree">জামাআতের সাথে সালাত ও সুন্নাহ্‌সমূহ<div class="dsp">congr,jamat,jamaat,salat,namaz,sala,sunn</div></label>
      <div class="content">
      <p>
         জামাআতে সালাত আদায়ের সম্পর্কে যে সকল হাদীস পাওয়া যায়ঃ
      </p>
      <div class="subtopic">ফযীলত</div>
      <p class="three">
         ১। জামা’আতে সালাতের ফযীলত একাকী আদায়কৃত সালাত থেকে সাতাশ’ গুণ বেশি।[সহিহ বুখারি ১০/৬৪৪]
      </p>
      <p class="three">
         ২। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তির জামা’আতের সাথে সালাতের সাওয়াব, তাঁর নিজের ঘরে বাজারে আদায়কৃত সালাতের সাওয়াব দ্বিগুণ করে ২৫ গুন বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর কারণে এই যে, সে যখন উত্তমরূপে উযূ করল, তারপর একমাত্র সালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে রওয়ানা করল তখন তাঁর প্রতি কদমের বিনিময়ে একটি মর্তবা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। সালাত (নামায) আদায়ের পর সে যতক্ষণ নিজ সালাতের স্থানে থাকে, ফিরিশতাগণ তার জন্য এ বলে দু’আ করতে থাকেন- "হে আল্লাহ! আপনি তার উপর রহমত বর্ষণ করুণ এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুণ।" আর তোমাদের কেউ যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সে সালাতরত বলে গণ্য হয়।[সহিহ বুখারি ১০/৬৪৭]
      </p>
      <p class="three">
         ৩। ইশা ও ফজরের জামা’আতের কি মর্তবা তা যদি তারা জানত তাহলে হামাগুঁড়ি দিয়ে হলেও তাতে উপস্থিত হত এবং সামনের কাতারের কী ফযিলত তা যদি জানত, তাহলে এর জন্য তারা কুরআ(লটারি) ব্যবহার করত।[সহিহ বুখারি ১০/৭২০-৭২১] 
      </p>
      <div class="subtopic">কাতার সোজা করা</div>
      <p class="three">
         ৪। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নাও। কেননা, আমি আমার পেছনের দিক থেকেও তোমাদের দেখতে পাই। [আনাস (রাঃ) বলেন] <span class="highlight">আমাদের প্রত্যেকেই তার পাশ্ববর্তী ব্যাক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৭২৫]
      </p>
      <p class="exp">
         ( উক্ত হাদীস হতে এটা বোঝা যায় যে সালাতে দাঁড়ানোর সময় দুই পা ব্যক্তির দুই কাঁধ বরাবর দুরত্বে রাখা উচিত। )
      </p>
      <p class="three">
         ৫। তোমরা কাতারের মধ্যে শয়তানের দন্ডায়মান হওয়ার জন্য ফাঁক রাখবে না। যারা কাতারের মধ্যে পরস্পর মিলিত হয়ে দাঁড়াবে আল্লাহ্ তাদেরকে তাঁর রহমতের অন্তর্ভূক্ত করবেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৬৬৬]
      </p>
      <p class="one1">
         তোমরা কাতারের মধ্যে পরস্পর মিলে মিশে দাঁড়াও। এক কাতার অপর কাতারের নিকটে কর এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াও। যার হাতে আমার জীবন, তাঁর শপথ! আমি শয়তানকে নামাযের কাতারের মধ্যে বকরীর ন্যায় প্রবেশ করতে দেখেছি।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৬৬৭, নাসাঈ]
      </p>
      <div class="subtopic">দুইজনের জামাআত</div>
      <p class="three">
         ৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আসলেন এবং চার রাকাআত সালাত আদায় করে শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর উঠে সালাতে দাঁড়ালেন। তখন আমিও তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমাকে তাঁর ডানপাশে নিয়ে নিলেন এবং পাঁচ রাকাআত সালাত আদায় করলেন।[সহিহ বুখারি ১০/৬৯৭]
      </p>
      <p class="three">
         ৭। কুতায়বা (রহঃ) ...... ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, একরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আমি সালাত আদায় করেছিলাম। আমি তাঁর পাশে দাড়িয়েছিলাম। তখন তিনি আমার পিছন দিয়ে মাথায় ধরে আমাকে তাঁর ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন। [সহিহ সুনান আবু-দাউদ (২/৬২৩,১২৩৩), বুখারি ও মুসলিম, তিরমিযি ২/২৩২]
      </p>
      <p class="exp">
         ( এখানে ঠিক ইমামের ডান দিকে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে। সামান্য পিছনে গিয়ে দাঁড়ানো সঠিক নয়। )
      </p>
      <div class="subtopic">পুরুষ ও মহিলার জামাআত</div>
      <p class="three">
         ৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমাদের ঘরে আমি ও একটি ইয়াতিম ছেলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায) আদায় করলাম। আর আমার মা উম্মে সুলাইম (রাঃ) আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।[সহিহ বুখারি ১০/৭২৭]
      </p>
      <p class="exp">
         ( পুরুষ ও মহিলার জামাআতে সর্বদা পুরুষ ইমামতি করবে এবং মহিলা পিছনের কাতারে দাঁড়াবে তা একজনের কাতার হলেও। )
      </p>
      <p class="three">
         ৯। নামাযের মধ্যে ইমামের কোনরূপ ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে পুরুষেরা “সুবহানাল্লাহ” বলবে এবং স্ত্রীলোকেরা হাতের উপর হাত তালি মেরে শব্দ করবে। স্ত্রীলোকদের জন্য হাতে হাত মেরে শব্দ করার পদ্ধতি এই যে, তারা ডান হাতের আংগুলি দ্বারা বাম হাতের তালুতে মারবে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৯৩৯,৯৪২, বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ, তিরমিযি, ইবনে মাজাহ্‌]
      </p>
      <div class="subtopic">ইমামের অনুসরণ ও কিরাআত</div>
      <p class="three">
         ১০। ইমাম নির্ধারন করা হয় তাঁর অনুসরণের জন্য। তাই যখন তিনি তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, যখন তিনি রুকু করেন তখন তোমরাও রুকু করবে। তিনি যখন
         سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ 
         বলবে তখন তোমরা
         رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলবে। আর তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। যখন তিনি বসে সালাত (নামায) আদায় করেন তখন তোমরাও বসে সালাত আদায় করবে।[সহিহ বুখারি ১০/৭৩৪]
      </p>
      <p class="exp">
         ( অনেকের ধারণা রয়েছে যে জামাআতে সালাত আদায় করলে মুখে তাকবীর বলতে হয় না। এটা সম্পূর্ণ ভুল। তাকবীর না বললে নামায হবে না। একাকী ও জামাআতে উভয় অবস্থাতেই তাকবীর বলতে হবে। )
      </p>
      <p class="three">
         ১১। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের আগে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তহন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা’লা তাঁর মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তাঁর আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন।[সহিহ বুখারি ১০/৬৯১]
         </p>
         <p class="one1">
         রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলার পর যতক্ষণ পর্যন্ত সিজদায় না যেতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ বাঁকা করতেন না। তিনি সিজদায় যাওয়ার পর আমরা সিজদায় যেতাম।[সহিহ বুখারি ১০/৬৯০]      
      </p>
      <p class="exp">
         ( হাদীসটির মর্ম এই যে, সালাতে সর্বদা ইমামের অনুসরণ করতে হবে এবং ইমামের আগে কোনো কিছু করা যাবে না। )
      </p>
      <p class="three">
         ১২। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠের মাধ্যমে নামায আদায়ের পর জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাদের কেউ এখন আমার সাথে (নামাযের মধ্যে) কিরাআত পাঠ করেছে কি? জবাবে এক ব্যক্তি বলেন হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এজন্যই আমার কুরআন পাঠের সময় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
         </p><p class="one1">
         রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এরূপ শোনার পর সাহাবায়ে কিরাম <span class="highlight">উচ্চস্বরে কিরাআত পঠিত নামাযে তাঁর পিছনে কিরাআত পাঠ করা হতে বিরত থাকেন।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮২৬,তিরমিযি,নাসাঈ,ইবনু মাজাহ্‌]
      </p>
      <div class="subtopic">মসজিদের সুন্নতসমূহ</div>
      <p class="three">
         ১৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ কালে সর্বপ্রথম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর সালাম, পাঠাবে, অতঃপর এই দুআ পড়বে,
         </p>
         <p>
         اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ 
         </p>
         <p class="two">
         আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রহমতিকা
         </p>
         <p class="one1">
         <u>অর্থ-</u> ইয়া আল্লাহ! আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দাও।
         </p>
         <p class="one1">
         অতঃপর যখন কেউ মসজিদ হতে বের হবে তখন এই দুআ পাঠ করবেঃ
         <p class="two">
         اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ 
         </p>
         <p>
         আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা মিন ফাদলিক
         </p>
         <p class="one1">
         <u>অর্থ-</u> ইয়া আল্লাহ! আমি তোমার করুণা কামনা করি। [সুনান আবু-দাউদ ২/৪৬৫, মুসলিম, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, তিরমিযি]
      </p>
      <p class="three">
         ১৪। তিনি (নবী) যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেনঃ
      </p>
      <p class="two">
         أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
      </p>
      <p class="one1">   
         <u>অর্থ-</u> আমি মহান আল্লাহর নিকট তাঁর করুণাসিক্ত জাত ও চির পরাক্রমাশালী শক্তির মাধ্যমে-অনিষ্টকারী শয়তান হতে আত্মরক্ষার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করছি।
      </p>
      <p class="one1">
         যখন কেউ এই দুআ পাঠ করে তখন শয়তান বলে, এই ব্যক্তি আজ সারা দিনের জন্য আমার অনিষ্ট হতে রক্ষা পেল।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৪৬৬]
      </p>
      <p class="three">
         ১৫। তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার পূর্বে দু’রাকাত সালাত (নামায) আদায় করে নেয়।[সহিহ বুখারি ৮/৪৪৪, আবু-দাউদ ২/৪৬৭, মুসলিম, নাসাঈ, তিরমিযি, ইবনু মাজাহ্‌]
      </p>
      <p class="three">
         ১৬। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ফেরেশতাগণ তোমাদের কারো জন্য ততক্ষণ দুআ করতে থাকে যতক্ষণ তোমাদের কেউ জায়নামাযে নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকে এবং তার উযূ (ওজু) নষ্ট না হয় বা সে ব্যক্তি ঐ স্থান ত্যাগ না করে। ফেরেশতাদের দু’আঃ 
         “ইয়া আল্লাহ্! আপনি তাকে ক্ষমা করুন। ইয়া আল্লাহ্! আপনি তার প্রতি সদয় হোন”।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৪৬৯,বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ, তিরমিযী ইবনু মাজাহ]
      </p>
      <p class="three">
         ১৭। সালাত (নামায) আদায়কারী ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাতায়াতকারী এতে কি গুনাহ হয়, যদি জানতো তাহলে সে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারীর সামনে দিয়ে যাতায়াত অপেক্ষা চল্লিশ..... পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে করতো। এ হাদীসের বর্ণনাকারী আবূ নাযর বলেন, ঊর্ধ্বতন রাবী চল্লিশ দিন অথবা চল্লিশ মাস অথবা চল্লিশ বছর বলেছেন তা আমার মনে নেই।[সহিহ বুখারি ৫১০, সহিহ মুসলিম ৫০৭, আবু-দাউদ ২/৭০১, নাসাঈ ৭৫৬, তিরমিযি ৩৩৬, মিশকাত ৪/৭৭৬]
      </p>
      <p class="three">
         ১৮। যে ব্যাক্তি রসুন অথবা পিয়াজ খায় সে যেন আমাদের থেকে দূরে থাকে অথবা বলেছেন, সে যেন আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে আর নিজ ঘরে বসে থাকে।[সহিহ বুখারি ১০/৮৫৫]
      </p>
      <p class="three">
         ১৯। আবূ হাফস আমর ইবনু আলী (রহঃ) .... জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। ঐ সময় একদিন আমরা খুব বৃষ্টির সম্মুখীন হই। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা দিয়ে বললেন, যার ইচ্ছা নিজ নিজ স্থানে সালাত (নামায) আদায় করতে পারে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৯৭৬, তিরমিযি ২/৪০৯]
      </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twentyfour">
         <label for="twentyfour">কসর ও কাযা সালাত আদায়</label>
      <div class="content">
         <p class="one">
            فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلَاةَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمْ ۚ فَإِذَا اطْمَأْنَنتُمْ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ ۚ إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
         </p>
         <p class="one1">
            অর্থ- অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। <span class="highlight">নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।</span>[৪ঃ১০৩]
         </p>
         <p>
            মানুষকে আল্লাহ্‌ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। কিন্তু দুনিয়াতে মানুষের রয়েছে নানা ব্যস্ততা। বেঁচে থাকার তাগিদে আমাদের কাজ করতে হয়,সফর করতে হয়,বিশ্রাম নিতে হয়। ফলে বিভিন্ন সময় আশংকা থাকে সালাত ছুটে যাওয়ার। মানুষ হিসেবে আমাদের মধ্যে ত্রুটি রয়েছে এবং তা আল্লাহ্‌ তায়ালা এর চেয়ে ভালো কেউ জানে না। তিনি বলেছেনঃ
         </p>
         <p class="one">
            ۚالْآنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفًا 
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> এখন বোঝা হালকা করে দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর এবং তিনি জেনে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্য দূর্বলতা রয়েছে।[৮ঃ৬৬]
         </p>
         <p>
            যখন কোনো মুমিনের জন্য সালাত আদায় করা কষ্টসাধ্য হয়ে পরে তখন তার জন্য আল্লাহ্‌ তায়ালা সালাতকে সহজ করে দিয়েছেন। রাসুল(সঃ) এর কতিপয় হাদীসসমূহের মাধ্যমে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়ঃ
         </p>
         <div class="subtopic">কসর করা</div>
         <p class="three">
            ১। আবূ বকর ইবনু শায়বাহ, আবূ কুরায়ব, যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ..... ইয়া’লা ইবনু উমাইয়্যাহ (রাঘিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাবকে জিজ্ঞেস করলাম যে, আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ "কাফিররা তোমাদেরকে কষ্ট দিবে এ আশঙ্কা থাকলে সালাত কসর করে আদায় করতে তোমাদের কোন দোষ হবে না।"[সূরাহ আন নিসা ৪ঃ১০১]। কিন্তু এখন তো লোকেরা নিরাপত্তা লাভ করেছেন। (সুতরাং এখন কসর সালাত আদায় করার প্রয়োজন কী?) এ কথা শুনে উমার ইবনুল খাত্তাব বললেনঃ তুমি যে কারণে বিস্মিত হয়েছ আমিও ঠিক একই কারণে বিস্মিত হয়েছিলাম (অর্থাৎ আমিও কসর সালাত আদায়ের কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছিলাম না)। তাই উক্ত বিষয়ে আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ এটি তোমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সাদাকা বা দান। সুতরাং তোমরা তার দেয়া সাদাকা গ্রহণ কর।[সহিহ মুসলিম ৫/৬৮৬]
         </p>
         <p class="three">
            ২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, সাঈদ ইবনু মানসূর, আবুর রাবি ও কুতায়বাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... ’আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের নবীর জবানীতে আল্লাহ তা’আলা <span class="highlight">বাড়ীতে অবস্থানকালীন সালাত চার রাকাআত, সফরের সালাত দু’ রাকাআত এবং ভীতিকর অবস্থানকালীন সালাত এক রাকাআত ফারয (ফরয) করেছেন।</span>[সহিহ মুসলিম ৫/৬৮৭]
         </p>
         <p class="three">
            ৩। কুতায়বাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... হাফস্ ইবনু আসিম থেকে (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আমি সফরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গী হয়েছি। কিন্তু কখনো তাকে নফল সালাত আদায় করতে দেখিনি। আর আমি যদি সফরে সুন্নাত সালাত আদায় করতাম তাহলে ফারয (ফরয) সালাতও পূর্ণ করে আদায় করতাম। মহান আল্লাহ বলেছেনঃ "আল্লাহর রসূলের জীবনে তোমাদের অনুসরণের উত্তম নমুনা রয়েছে"[সূরাহ আল আহযাব ৩৩ঃ২১][সহিহ মুসলিম ৫/৬৮৯]
         </p>
         <p class="three">
            ৪। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি, সফরে যখনই তাঁর ব্যস্ততার কারণ ঘটেছে, তখন তিনি <span class="highlight">মাগরিবের সালাত</span> (দেরী করে) আদায় করেছেন এবং তা <span class="highlight">তিন রাকা’আতই আদায় করেছেন।</span>[সহিহ বুখারি ১৮/১০৯২]
         </p>
         <p class="three">
            ৫। সফরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের দু’ রাকা’আত (সুন্নাত) আদায় করেছেন।[সহিহ বুখারি ১৮/১১০৩]
         </p>
         <div class="subtopic">কখন কসর করতে হবে</div>
         <p class="three">
            ৬। মুহাম্মাদ ইবনুল আলা এবং উসমান ইবন আবু শায়বা (রহঃ) ..... ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে সতের দিন অবস্থানকালে নামায কসর করেন। ইবন আব্বাস (রাঃ) আরও বলেন, যে ব্যাক্তি কোথাও সতের দিন অবস্থান করবে সে যেন নামায “কসর” করে এবং যে ব্যাক্তি এর অধিক দিন কোন স্থানে অবস্থান করবে, তাঁকে পুরা নামায আদায় করতে হবে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২৩০, বুখারি, তিরমিযি, ইবন মাজাহ্‌]
         </p>
         <p class="three">
            ৭।  ইবন বাশশার (রহঃ) .... ইয়াহইয়া ইবন ইয়াযিদ আল হানানি (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবন মালিক (রাঃ)-কে সফরের সময় নামায "কসর" পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন মাইল অথবা তিন ফারসাখ দূরত্ব অতিক্রম করতেন, তখন তিনি চার রাকাত ফরয নামাযের পরিবর্তে দুই রাকাত নামায পড়তেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২০১, মুসলিম]
         </p>
         <p class="exp">
            ( অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি সফরের উদ্দেশ্যে ১৭ দিনের কম সময়ের জন্য বের হলে সেই সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত ৪ রাকাত সালাত ২ রাকাত করে আদায় করতে পারবে। আর কোনো নফল নামায না পড়ে কসর আদায় করাই রাসুল(সঃ) এর সুন্নত। )
         </p>
         <div class="subtopic">দুই ওয়াক্ত নামায একত্রে পড়া</div>
         <p class="three">
            ৮। সফরে দ্রুত চলার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম <span class="highlight">যুহ্‌র ও আসরের সালাত (নামায) একত্রে আদায় করতেন আর মাগরিব ইশা একত্রে আদায় করতেন।</span> তখন ইকামতের পর মাগরিব তিন রাকা’আত আদায় করতেন এবং সালাম ফিরাতেন। তারপর অল্প সময় অপেক্ষা করেই ইশা-এর ইকামাত দিয়ে তা দু’রাকা’আত আদায় করে সালাম ফিরাতেন। এ দু’য়ের মাঝে কোন নফল সালাত আদায় করতেন না এবং ইশার পরেও না।[সহিহ বুখারি ১৮/১১০৬,১১০৯]
         </p>
         <p class="three">
            ৯। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলে পড়ার আগে সফর শুরু করলে আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত (পূর্ব পর্যন্ত) যুহ্‌র বিলম্বিত করতেন এবং উভয় সালাত (নামায/নামাজ) একত্রে আদায় করতেন। আর (সফর শুরু করার আগেই) সূর্য ঢলে গেলে যুহর আদায় করে নিতেন। এরপর (সফরের উদ্দেশ্যে) আরোহণ করতেন।
            তিনি অনুরূপ পশ্চিমাকাশে লালিমা দূরীভূত হওয়ার পর মাগরিব ও ইশার নামায একত্রে আদায় করেছেন।[সহিহ বুখারি ১৮/১১১১, সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২১৯, মুসলিম, নাসাঈ]
         </p>
         <p class="three">
            ১০। কুতায়বা ইবন সাইদ (রহঃ) .... মুআয ইবন জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুক অভিযান কালে দ্বিপ্রহরের পূর্বে মনযিল ত্যাগ করলে যুহরের নামায বিলম্বিত করে যুহর ও আসর একত্রে আদায় করতেন। তিনি দিপ্রহরের পরে (কোন মনযিল হতে) রওয়ানা হলে যুহর ও আসর একত্রে আদায় করে রওয়ানা হতেন। তিনি (কোন মনযিল হতে) মাগরিবের পূর্বে রওয়ানা হলে মাগরিবের নামাযে বিলম্ব করে মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করতেন। যেদিন তিনি মাগরিবের পরে রওয়ানা হতেন সেদিন তিনি ইশার নামায এগিয়ে এনে মাগরিবের সাথে তা একত্রে পড়তেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২২০, তিরমিযি]
         </p>
         <div class="subtopic">সফর ছাড়াও দুই সালাত একত্র করা</div>
         <p class="three">
            ১১। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভয়ভীতি ও সফরকালীন সময় ছাড়াও যুহর ও আসর এবং মাগরিব ও এশার নামায একত্রে আদায় করেছেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২১০]
         </p>
         <p class="three">
            ১২। সুলায়মান ইবন হারব ও আমর ইবন আওন (রহঃ) ..... ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনাতে অবস্থানকালে যুহরের (শেষ সময়) চার রাকাত এবং আসরের (প্রথম সময়ে) চার রাকাত মোট আট রাকাত এবং মাগরিব ও ইশার নামায ঐরূপে একত্রে সাত রাকাত আদায় করেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২১৪, বুখারি, মুসলিম, নাসাই]
         </p>
         <p class="one1">
         অন্য এক বর্ণনায় উল্লেখ আছে যে, ঐ সময় বৃষ্টি না থাকা সত্ত্বেও তিনি এরূপে দুই নামায একত্রে আদায় করেন।
         </p>
      <p class="three">
         ১৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় অবস্থানকালে ভয়ভীতি ও বৃষ্টি জনিত কারন ছাড়াই যুহর ও আসর এবং মাগরিব ও এশার নামায একত্রে আদায় করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তাঁর উম্মাত যাতে অসুবিধার সম্মুখীন না হয় সেজন্য তিনি এরূপ করেছিলেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২১১, মুসলিম, তিরমিযি, নাসাঈ]
      </p>
      <p class="exp">
         ( সুতরাং, কেউ যখন সফরে বের হয় তখন তার জন্য সালাতে কসর করা সুন্নত। আর সময়ে সালাত না আদায় করতে পারার আশংকা থাকলে কিংবা লম্বা রাস্তা যাত্রা করলে সে ২ ওয়াক্তের সালাত একত্রে আদায় করতে পারবে। এছাড়াও যেকোনো অসুবিধার সম্মুখীন হলে নিজ এলাকায় অবস্থানকালীন ২ ওয়াক্ত নামায একত্রে পড়ার অনুমতি রয়েছে। )
      </p>
      <div class="subtopic">কাযা সালাত আদায়</div>
      <p class="three">
         ১৪। হারমালাহ ইবনু ইয়াহইয়া আত তুজায়বী (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার যুদ্ধ শেষে ফিরে আসার সময় রাতে সফররত ছিলেন। এক সময় রাতের শেষভাগে তাকে তন্দ্রায় পেয়ে বসলে তিনি সেখানেই অবতরণ করলেন। আর বিলালকে বললেনঃ “তুমি আজ রাতে আমাদের পাহারার কাজ করো। সুতরাং বিলাল যতটা সম্ভব রাতের বেলায় সালাত আদায় করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণ ঘুমিয়ে পড়লেন। কিন্তু ফজরের সময় ঘনিয়ে আসলে বিলাল পূর্ব দিকে মুখ করে তার উটের সাথে হেলান দিলেন। এ সময় ঘুমে বিলালের দু’চোখ বন্ধ হয়ে আসলো। এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, বিলাল কিংবা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণের কারোরই নিদ্রা ভঙ্গ হলো না। এ অবস্থায় তাদের গায়ে সূর্যের আলো এসে পড়ল। প্রথমে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই ঘুম থেকে জেগে উঠলেন। তিনি জেগে উঠে বিলালকে ডাকলেন, হে বিলাল! বিলাল বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি যে কারণে জাগতে পারেননি আমিও ঐ একই কারণে জগতে পারিনি।
      </p>
      <p class="one1">
         তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুকুম দিলেন তাড়াতাড়ি যাত্রা করো। সুতরাং সবাই উটগুলো হাকিয়ে কিছু দূরে নিয়ে গেলে এবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করলেন এবং বিলালকে সালাতের জন্য আদেশ করলেন। বিলাল সালাতের ইকামাত দিলে তিনি তাদের সবাইকে সাথে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ <span class="highlight">কেউ সালাত আদায় করতে ভুলে গেলে যখনই স্মরণ হবে তখনই তা আদায় করে নিবে।</span> কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেছেন- "আমার স্মরণের জন্য সালাত আদায় করো"[২০ঃ ১৪][সহিহ মুসলিম ৫/৬৮০]
      </p>
      <p class="three">
         ১৫। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ তার (রাতের বেলার) অযীফাহ্ বা করণীয় কাজ কিংবা তার কিছু অংশ করতে ভুলে গেলে তা যদি সে ফাজর ও যুহরের সালাতের মধ্যবর্তী কোন এক সময়ে আদায় করে নেয় তাহলে তা এমনভাবে তার জন্য লিখে নেয়া হবে যেন সে তা রাতের বেলায়ই সম্পন্ন করেছে।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৪৭]
      </p>
      <p class="exp">
         ( জীবনে কখন কি হয়ে যায় আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ বলতে পারে না। কারো নামায ছুটে যেতে পারে হরেক রকম কারণে। এমনকি ঘুম বা ভুলে যাওয়ার কারণে। এমন সময় তার উচিত যখনই তার জ্ঞান হবে সাথে সাথে সালাত আদায় করে ফেলা। ইচ্ছাকৃতভাবে যে সালাত ছেড়ে দেয় তার কোনো কাযা হয় না। তবে তা বেশি বেশি নফল নামায দ্বারা পূরণ করা যায়। )
      </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twentyfive">
         <label for="twentyfive">সালাতের সুন্নাহ্‌সমূহ<div class="dsp">sunn,sala,namaz</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            সালাতের পূর্বে,মধ্যে এবং সালাত শেষে কিছু সুন্নত কাজ রয়েছে। এগুলো হলোঃ
         </p>
         <div class="subtopic">ওযূর পর ও মসজিদে বসার পুর্বে দুই রাকাত সালাত আদায়</div>
         <p class="three">
            ১। যে মুসলিম সুন্দর রুপে উযূ করে তারপর দাঁড়িয়ে দেহ ও মনকে পুরোপুরি তার প্রতি নিবদ্ধ রেখে দুই রাকআত সালাত (নামায) আদায় করে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।[সহিহ মুসলিম ২/২৩৪]
         </p>
         <p class="three">
            ২। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ফজরের সালাতের সময় বিলাল (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে বিলাল! ইসলাম গ্রহণের পর সর্বাধিক আশাব্যঞ্জক যে আমল তুমি করেছ, তার কথা আমার নিকট ব্যক্ত কর। কেননা, জান্নাতে আমি আমার সামনে তোমর পাদুকার আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। বিলাল (রাঃ) বললেন, দিন রাতের যে কোন প্রহরে আমি তাহারাত ও পবিত্রতা অর্জন(ওযূ) করেছি, তখনই সে তাহারাত দ্বারা সালাত (নামায) আদায় করেছি, যে পরিমাণ সালাত আদায় করা আমার তাকদীরে লেখা ছিল। আমার কাছে এর চাইতে (অধিক) আশাব্যঞ্জক হয়, এম কোন বিশেষ আমল আমি করিনি।[সহিহ বুখারি ১৯/১১৪৯]
         </p>
         <p class="three">
            ৩। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে দু’ রাকা’আত সালাত (নামায) (তাহিয়্যাতুল-মাসজিদ) আদায় করার আগে বসবে না।[সহিহ বুখারি ১৯/১১৬৩]
         </p>
         <div class="subtopic">যথাসম্ভব সুন্দরভাবে কিরাআত</div>
         <p class="three">
            ৪। একদা যখন আমরা কিরাআত পাঠে মগ্ন ছিলাম, তখন হঠাৎ সেখানে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করেন এবং এ সময় আমাদের মধ্যে আরব বেদুইন ও অনারব লোকেরা ছিল। তিনি বলেনঃ তোমরা পাঠ কর, সকলেই উত্তম। কেননা অদুর ভবিষ্যতে এমন সম্প্রদায় নির্গত হবে, যারা কুরআনকে তীরের মত ঠিক করবে (অর্থাৎ তাজবীদ নিয়ে অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করবে), তা দ্রুত গতিতে পাঠ করবে, ধীরস্থিরভাবে পড়বে না।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৮৩০]
         </p>
         <p class="three">
            ৫। সূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সালাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কিরআত পড়া হয় সে সালাতই সর্বোত্তম সালাত।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৫৬]
         </p>
         <p class="three">
            ৬। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সামর্থ অনুযায়ী নামায আদায় করবে এবং যখন ক্লান্তি বোধ করবে, তখন বিশ্রাম গ্রহণ করবে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১৩১২, বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ]
         </p>
         <div class="subtopic">সুন্নত ও নফল সালাত</div>
         <p class="three">
            ৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি প্রতিদিন নিয়মিত বার রাক’আত সুন্নাত আদায় করবে, আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর বানিয়ে দিবেনঃ যোহরের পূর্বে চার রাকআত, এরপর দু’রাকআত, মাগরিবের পর দু’রাকআত এশার পর দু’রাকআত, ফজরের পূর্বে দু’রাকআত।
            [ইবনু মাজাহ ১১৪০, তিরমিযি ২/৪১৪]
         </p>
         <p class="three">
            ৭। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি যোহরের পূর্বে চার রাকআত এবং এর পর চার রাকআত সুন্নাত আদায় করবে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।[ইবনু মাজাহ ১১৬০, সহিহ তিরমিযি ৪২৭]
         </p>
         <p class="one1">
            নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ দিন ও রাতের (নফল) নামায দুই দুই রাকাত।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২৯৫, তিরমিযি, নাসাঈ, ইবন মাজাহ্‌]
         <p class="exp">
           ( উক্ত হাদীসটির অর্থ এই যে নফল নামায ৪ রাকাত হলে ২ রাকাত আদায় করে সালাম ফিরানো উচিত। এরপর আবার দাঁড়িয়ে বাকি ২ রাকাত আদায় করা উচিত। )
            </p>
         <p class="three">
            ৮। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের পূর্বে চার রাকআত (সুন্নাত) আদায় করতেন।[তিরমিযি ২/৪২৯(হাসান)]
         </p>
         <p class="three">
            ৯।  আবদুল্লাহ‌ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) ... মারসা’দ ইবনু আবদুল্লাহ‌ ইয়াযানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উক্‌বা ইবনু জুহানী (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তাঁকে বললাম, আবূ তামীম (রহঃ) সম্পর্কে এ কথা বলে কি আমি আপনাকে বিস্মিত করে দিব না যে, তিনি মাগরিবের (ফরয) সালাতের আগে দু’ রাকা’আত (নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে থাকেন। উক্‌বা (রাঃ) বললেন, (এতে বিস্মিত হওয়ার কি আছে?) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে তো আমরা তা আদায় করতাম। আমি প্রশ্ন করলাম, তাহলে এখন কিসে আপনাকে বিরত রাখছে? তিনি বললেন, কর্মব্যস্ততা।[সহিহ বুখারি ১৯/১১৮৪]
         </p>
         <p class="three">
            ১০। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিটি দিন শুরু হওয়ার সাথে সাথে তোমাদের প্রত্যেকের প্রতিটি অস্থি-বন্ধনী ও গিটের উপর সাদাকা ওয়াজিব হয়। সুতরাং প্রতিটি তাসবীহ অর্থাৎ সুবহানাল্ল-হ’ বলা সাদাকা হিসেবে গণ্য হয়। প্রতিটি তাহমীদ অর্থাৎ আলহমদুলিল্লা-হ’ বলা তার জন্য সাদাকা হিসেবে গণ্য হয়। প্রতিটি 'আল্ল-হু আকবার' তার জন্য এবং নাহী আলিন মুনকার অর্থাৎ খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখার প্রতিটি প্রয়াসও তার জন্য অনুরূপ সাদাকা বলে গণ্য হয়। তবে 'যুহা' বা চাশ্‌তের মাত্র দু’ রাকাআত সালাত যদি সে আদায় করে তাহলে তা এ সবগুলো সমকক্ষ হতে পারে।[সহিহ মুসলিম ৬/৭২০]
         </p>
         <p class="three">
            ১১। শায়বান ইবনু ফাররূখ (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার বন্ধু (অর্থাৎ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজ করতে উপদেশ দিয়েছেন। সেগুলো হলো- প্রতি মাসে তিনটি করে সওম (রোযা) পালন করতে, "যুহা" বা চাশতের দু’রাকাআত সালাত আদায় করতে এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করতে।[সহিহ মুসলিম ৬/৭২১]
         </p>
         <p class="one1">
            ইবন নুফায়েল (রহঃ) ..... সিমাক (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবের ইবন সামুরা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাস করি, আপনি কি অধিক সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে থাকতেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি বহু সময় তাঁর সাথে থাকতাম। তিনি ফজরের নামাজের পর ঐ স্থানে সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে থাকতেন। অতঃপর সূর্য উপরে উঠলে তিনি ইশরাকের নামায আদায় করতেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২৯৪, মুসলিম, নাসাঈ]
         </p>
         <p class="three">
            ১২। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ফজরের দু’রাকআত সালাত (নামায) দুনিয়া এবং সবকিছু থেকে উত্তম।
            নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের (ফারয (ফরয) সালাতের) পূর্বের দু রাকাআত সুন্নাত আদায় করার প্রতি যত কঠোরভাবে খেয়াল রাখতেন অন্য কোন নফল সালাতের প্রতি ততখানি রাখতেন না।[সহিহ মুসলিম (৬/৭২৪,৭২৫), তিরমিযি ২/৪১৬] 
         </p>
         <p class="three">
            ১৩। মাহমূদ ইবনু গায়লান ও আবূ আম্মার ..... ইবনু উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ আমি একমাস পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে লক্ষ্য করেছি। তিনি ফজরের পূর্বের দু’রাক’আতে ’কুল ইয়া আয়্যূহাল কাফিরূন’ এবং ’কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পাঠ করতেন। [ইবনু মাজাহ ১১৪৯, সহিহ তিরমিযি ২/৪১৭]
         </p>
         <div class="subtopic">সুন্নত নামায ছুটে গেলে</div>
         <p class="three">
            ১৪। মুহাম্মাদ ইবনু আমর আস্-সাওয়াক (রহঃ) .... কায়স রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হয়ে এলেন। সালাতের ইকামত দেওয়া হলো, আমিও তাঁর সঙ্গে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। সালাত থেকে ফিরে তিনি আমাকে সালাতরত দেখতে পেলেন। বললেনঃ হে কায়স! থাম, এইই সাথে দুই সালাত পড়ছ! আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি ফজরের দু’রাকআত সুন্নাত পড়তে পাড়িনি। তিনি বললেনঃ তা হলে অসুবিধা নেই। অপর এক বর্ণনায়, তাঁর কথায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরব থাকেন।
            <p class="one1">
            রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের পূর্বে চার রাকআত (সুন্নাত) আদায় না করতে পারলে যোহরের পর তা আদায় করতেন।
            [ইবনু মাজাহ ১১৫১, সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১২৬৭, সহিহ  তিরমিযি ২/৪২২,৪২৬]
         </p>
         <div class="subtopic">বিতর সালাত</div>
         <p class="three">
            ১৫। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শেষ রাতে জাগতে পারবে না বলে কারো আশঙ্কা হলে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই (ইশার সালাতের পর) বিতর আদায় করে নেয়। আর কেউ যদি শেষ রাতে জাগতে আগ্রহী থাকে (অর্থাৎ শেষ রাতে জগতে পারবে বলে নিশ্চিত হতে পারে) তাহলে সে যেন শেষভাগে বিতর আদায় করে নেয়। কেননা শেষ রাতের সালাতে (মালাকগণের) উপস্থিতি থাকে। আর এটাই সর্বোত্তম ব্যবস্থা।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৫৫]
         </p>
         <p class="three">
            ১৬। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রাতের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রাতের সালাত দু’ দু’ রাকাআত করে আদায় করবে। যখন তোর হওয়ার সম্ভাবনা দেখবে তখন এক রাক’আত সালাত আদায় করে নিবে। যে সালাত সে আদায় করেছে এভাবে তা বিতরে পরিণত হবে।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৪৯]
         </p>
         <p class="three">
            ১৭। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা যে সালাত আদায় করতেন তাতে সর্বশেষে আদায় করতেন বিতর সালাত।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৪০]
         </p>
         <p class="three">
            ১৮। যে ব্যক্তি রাতের বেলায় নফল সালাত আদায় করবে সে যেন বিতর সালাত সর্বশেষে আদায় করবে। কেননা, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই সালাত আদায় করতে আদেশ করতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের রাতের সালাত বিতর দিয়ে শেষ কর।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৫১]
         </p>
         <p class="three">
            ১৯। রাতের এক বেলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ রাকাআত সালাত আদায় করতেন। আর এক রাকাআত বিতর এবং দু’ রাকাআত ফজরের সুন্নাতসহ মোট তের রাকাআত সালাত আদায় করতেন।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৩৮]
            </p>
            <p class="one1">
            রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতিরের নামাযে সূরা সাব্বিহ্ ইসমা রব্বিকাল আলা, কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরূন এবং সূরা ইখলাস পাঠ করতেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১৪২৩, নাসাঈ, ইবন মাজাহ্‌]
         </p>
         <p class="three">
            ২০। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা তের রাকাআত সালাত আদায় করতেন। এর মধ্যে পাঁচ রাক’আত আদায় করতেন বিতর এবং এতে <span class="highlight">একেবারে শেষে ছাড়া কোন বৈঠক করতেন না।</span></p>
            <p class="one1"> 
            রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বিতিরের নামাযের পর বলতেনঃ সুবহানাল্ মালিকিল্ কুদ্দূস।[সহিহ মুসলিম ৬/৭৩৭,সুনান আবু-দাউদ ২/১৪৩০, নাসাঈ]
         </p>
         <p class="exp">
            ( যে ব্যক্তি প্রথম রাত্রেই বেতরের  নামাজ পড়েছে। অতঃপর সে যদি আবার শেষ রাত্রে নামাজ পড়ার ইচ্ছা করে, তাহলে সে নিজের ইচ্ছা মত যত পারবে দুই দুই রাকাআত করে নামাজ পড়বে। আর শেষ রাত্রে বেতরের  নামাজ পুনরায় পড়ার দরকার নেই। বেতরের  নামাজের সময় হলো, এশার নামাজ পড়ে নেওয়ার পর থেকে নিয়ে ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত। যেহেতু আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “ফজর হওয়ার পূর্বে তোমরা বেতরের  নামাজ পড়ে নিবে”। )
         </p>
         <div class="subtopic">যিক্‌র ও দুআ</div>
         <p class="three">
            ২১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত অন্তে যখন ফিরতেন তখন তিনি তিনবার ইস্তিগফার করতেন ও পরে বলতেনঃ
            </p>
            <p class="two verse">
            اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
            </p>
            <p class="one1"> 
            হে আল্লাহ! আপনিই শান্তি, আপনার থেকেই শান্তি আগমন করে। হে আল্লাহ! আপনি মঙ্গলময়, আপনি অতি মহান হে প্রতাপশালী ও করুণার সাগর।
            </p>
            <p class="one1">
            তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর তেত্রিশ বার করে তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ) তাহ মীদ (আলহামদু লিল্লাহ) এবং তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পাঠ করবে।
            </p>
            <p class="two verse">
            سُبْحَانَ اللَّهِ،  وَالْحَمْدُ لِلَّهِ،  وَاللَّهُ أَكْبَرُ 
            </p>
            <p class="one1">
            বলবে, যাতে সবগুলোই তেত্রিশ বার করে হয়ে যায়।
            </p>
         <p class="one1">
         রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি প্রত্যেক সালাতের পর সুবহানাল্লাহ তেত্রিশবার, আলহামদুলিল্লাহ তেত্রিশবার ও আল্লাহু আকবার তেত্রিশবার বলবে এই হল নিরানব্বই-আর একশত পূর্ণ করার জন্য বলবেঃ
         </p>
         <p class="two verse">
         لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
         </p>
         <p class="one1">
         তার পাপ সমুহ মাফ হয়ে যাবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মত হয়।
         [সহিহ তিরমিযি (২/২৯৮,৩০০),  সহিহ বুখারি ১০/৮৪৩, সহিহ মুসলিম ৫/৫৯৭]
         </p>
         <p class="three">
            ২২। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত দুআ কখনই প্রত্যাখ্যাত হয়না।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/৫২১, তিরমিযি, নাসাঈ]
         </p>
         <p class="three">
            ২৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি প্রত্যেক (ফরজ) নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, মৃত্যু ব্যতীত কোনো কিছু তার জান্নাতে প্রবেশে বাধা দিতে পারবে না।"[নাসাঈ, সুনানুল কুবরা ৬/৩০, আলবানি, সহিহুত তারগিব ১৫৯৫ (সহিহ)]
         </p>
         <p class="three">
            ২৪। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মাইমূন (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর সানাদে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলার এক গ্রুপ ভ্রাম্যমান বর্ধিত ফেরেশতা রয়েছে। তারা যিকরের বৈঠকসমূহ সন্ধান করে বেড়ায়। তারা যখন কোন যিকরের বৈঠক পায় তখন সেখানে তাদের (যিকরকারীদের) সাথে বসে যায়। আর পরস্পর একে অপরকে বাহু দ্বারা ঘিরে ফেলেন। এমনকি তারা তাদের মাঝে ও নিকটতম আকাশের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে ফেলে।

            আল্লাহর যিকরকারীগণ যখন পৃথক হয়ে যায় তখন তারা আকাশমণ্ডলীতে আরোহণ করে। তিনি বলেন, তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা’আলা তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কোথকে আসছে? অথচ তিনি তাদের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী অবহিত। তখন তারা বলতে থাকেন, আমরা ভূমণ্ডলে অবস্থানকারী আপনার বান্দাদের কাছ হতে আসছি, যারা আপনার তাসবীহ পড়ে, তাকবীর পড়ে, তাহলীল বলে (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’-এর) যিকর করে, আপনার প্রশংসা করে এবং আপনার নিকট তাদের প্রত্যাশিত বিষয় প্রার্থনা করে।
            
            তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দারা আমার নিকট কি প্রার্থনা করে? তারা বলেন, তারা আপনার নিকট আপনার জান্নাত প্রত্যাশা করে। তিনি বলেন, তারা কি আমার জান্নাত প্রত্যক্ষ করেছে? তারা বলেন, না; হে আমাদের প্রভু! তিনি বলেন, তারা যদি আমার জান্নাত প্রত্যক্ষ করত তাহলে তারা কী করত? তারা বলেন, তারা আপনার নিকট আশ্রয় চায়। তিনি বলেন, কি বিষয় হতে তারা আমার নিকট আশ্রয় চায়? তারা বলেন, হে আমাদের প্রভু! আপনার জাহান্নাম হতে (মুক্তির জন্য)। তিনি বলেন, তারা কি আমার জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করেছে? তারা বলেন, না; তারা প্রত্যক্ষ করেনি।
            
            তিনি বলেন, তারা যদি আমার জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করত তাহলে কী করত? তারা বলেন, তারা আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে। তিনি বলেন, তখন আল্লাহ বলবেন, আমি তাদের মার্জনা করে দিলাম এবং তারা যা প্রার্থনা করছিল আমি তা তাদের প্রদান করলাম। আর তারা যা হতে আশ্রয় চেয়েছিল আমি তা থেকে তাদের মুক্তি দিলাম। অতঃপর তারা বলবে, হে আমাদের রব! তাদের মাঝে তো অমুক পাপী বান্দা ছিল, যে তাদের সাথে বৈঠকের নিকট দিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে বসেছিল। তিনি বলেন, তখন আল্লাহ বলবেন, আমি তাকেও মাফ করে দিলাম। তারা তো এমন একটি কওম যাদের সঙ্গীরা দুর্ভাগা হয় না।[সহিহ মুসলিম ৪৯/২৬৮৯]
         </p>
         <p class="three">
            ২৫। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আবদুল আযীয ইবনু সুহায়ব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কাতাদাহ্ আনাস (রাযিঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন দুআ সর্বাধিক পড়তেন? তিনি বললেন, তিনি যে দু’আ দ্বারা সর্বাধিক দু’আ করতেন তাতে বলতেনঃ 
            </p><p class="two verse">
            "আল্ল-হুম্মা আ-তিনা- ফিদ্‌দুনইয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আ-খিরতি হাসানাতাও ওয়াকিনা- ’আযা-বান না-র"
            </p><p class="one1">
            "হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়ায় কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতে কল্যাণ দান কর। আর আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে বঁচিয়ে রাখো।"[সহিহ মুসলিম ৪৯/২৬৯০]
         </p>
         <p class="three">
            ২৬। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
            <p class="two verse">
            "লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলাকুল্লি শাইয়্যিন কদীর।"
            </p><p class="one1">
            "আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই; তিনি অদ্বিতীয়, তার কোন অংশীদার নেই, তারই রাজত্ব, তারই যাবতীয় প্রশংসা; তিনিই সব বিষয়ের উপর শক্তিধর।"
            <p class="three1">
            যে লোক এ দু’আ প্রতিদিনে একশ’ বার পাঠ করে সে দশজন গোলাম মুক্ত করার পুণ্য অর্জন হয়, তার (আমলনামায়) একশ’ নেকী লেখা হয় এবং তার হতে একশ’ পাপ মিটিয়ে দেয়া হয়। আর তা ঐ দিন বিকাল পর্যন্ত শাইতান (শয়তান) (তার কুমন্ত্রণা) হতে তার জন্যে রক্ষাকারী হয়ে যায়। সেদিন সে যা পুণ্য অর্জন করেছে তার চেয়ে বেশি পুণ্যবান কেউ হবে না। তবে কেউ তার চাইতে বেশি ’আমল করলে তার কথা আলাদা।
            </p><p class="one1">
            আর যে লোক দিনে একশ বার 
            <p class="two verse">
            "সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবিহামদিহী।"
            </p>
            <p class="one1">
            "আমি আল্লাহর সপ্রশংসা সহ তার পবিত্রতা বর্ণনা করছি" পাঠ করবে, তার সমস্ত পাপ মিটিয়ে দেয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়।
         </p>
         <p class="three">
            ২৬। তোমাদের মাঝে কেউ কি প্রতিদিন এক হাজার পুণ্য হাসিল করতে অপারগ হয়ে যাবে? তখন সেখানে বসে থাকাদের মধ্য থেকে এক প্রশ্নকারী প্রশ্ন করল, আমাদের কেউ কিভাবে এক হাজার পুণ্য হাসিল করবে? তিনি বললেন, সে <span class="highlight">একশ’ তাসবীহ (সুবহানাল্লা-হ) পাঠ করলে তার জন্যে এক হাজার পুণ্য লিখিত হবে এবং তার (আমলনামা) হতে এক হাজার পাপ মুছে দেয়া হবে।</span>[সহিহ মুসলিম ৪৯/২৬৫৮]
         </p>
         <p class="three">
            ২৭। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার অন্তরে কখনো কখনো অলসতা দেখা দেয়, তাই <span class="highlight">আমি দৈনিক একশ বার আল্লাহর নিকট ক্ষমা(আস্তাগ্‌ফিরুল্লাহ্‌) প্রার্থনা করে থাকি।</span>[সহিহ মুসলিম ৪৯/২৭০১]
         </p>
         <p class="three">
            ২৮। আলী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে (আল্লাহর বাণী) ... সালাতে স্বর উচ্চ করবে না এবং অতিশয় ক্ষীণও করবে না ...। (সূরা আল-ইসরাঃ ১১০)” এ আয়াতটি দুআ সম্পর্কেই নাযিল করা হয়েছে।[সহিহ বুখারি ৬৭/৬৩২৭]
         </p>
         <p class="three">
            ২৯। ইসহাক (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। গরীব সাহাবীগণ বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! ধনশীল লোকেরা তো উচ্চমর্যাদা ও চিরস্থায়ী নিয়ামত নিয়ে আমাদের থেকে এগিয়ে গেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তা কেমন করে? তারা বললেনঃ আমরা যে রকম সালাত আদায় করি, তারাও সে রকম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। আমরা সে রূপ জিহাদ করি, তারাও সেরূপ জিহাদ করেন এবং তারা তাদের অতিরিক্ত মাল দিয়ে সাদাকা-খায়রাত করেন; কিন্তু আমাদের কাছে সম্পদ নেই। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের একটি আমল বাতলে দেবনা, যে আমল দ্বারা তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের মর্যাদা অর্জন করতে পারবে, আর তোমাদের পরবর্তীদের চাইতে এগিয়ে যেতে পারবে, আর তোমাদের অনুরূপ আমল কেউ করতে পরেবে না, কেবলমাত্র যারা তোমাদের ন্যায় আমল করবে তারা ব্যতীত। সে আমল হলো <span class="highlight">তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর ১০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০ বার আলহামদুলিল্লাহ্‌ এবং ১০ বার আল্লাহ আকবর পাঠ করবে।</span>[সহিহ বুখারি ৬৭/৬৩২২৯]
         </p>
         <p class="three">
            ৩০। ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ..... জুওয়াইরিয়াহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভোরবেলা ফজরের সালাত আদায় করে তার নিকট থেকে বের হলেন। ঐ সময় তিনি সালাতের স্থানে বসাছিলেন। এরপর তিনি চাশতের পরে ফিরে আসলেন। এমতাবস্থায়ও তিনি উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি বললেন, আমি তোমাকে যে অবস্থায় ছেড়ে গিয়েছিলাম তুমি সে অবস্থায়ই আছ। তিনি বললেন, হ্যাঁ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমার নিকট হতে রওনার পর চারটি কালিমাহ তিনবার পড়েছি। আজকে তুমি এ পর্যন্ত যা বলেছ তার সাথে ওযন করা হলে এ কালিমাহ চারটির ওযনই ভারী হবে। কালিমাগুলো এই—
            <p class="two verse">
            سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
            </p>
            <p class="verse">
            "সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহি আদাদা খল্‌কিহি ওয়া রিযা- নাফসিহি ওয়াযিনাতা আরশিহি ওয়ামি দা-দা কালিমা-তিহি"
            </p><p class="one1">
            "আমি আল্লাহর প্রশংসার সাথে তার পবিত্রতা বর্ণনা করছি তার মাখলুকের সংখ্যার পরিমাণ, তার সন্তুষ্টির পরিমণ, তার আরশের ওযন পরিমাণ ও তার কালিমাসমূহের সংখ্যার পরিমাণ।"[সহিহ মুসলিম ৪৯/২৭২৬]
         </p>
         <p class="three">
            ৩১। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দু’আ পড়াঃ
            <p class="two verse">
            اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
            </p><p class="verse">
            “আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্‌দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আ’উযুবিকা মিন শার্‌রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্‌ফির্‌লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্‌যুনূবা ইল্লা আনতা”
            </p><p class="one1">
            "হে আল্লাহ তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।"
            </p><p class="three1">
            যে ব্যাক্তি দিনের (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধা হওয়ার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে। আর যে ব্যাক্তি রাতের (প্রথম) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ দু’আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হওয়ার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে।[সহিহ বুখারি ৬৭/৬৩০৬]
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twentysix">
         <label for="twentysix">সালাতে ভুল হলে<div class="dsp">salah,salat,namaz,mistake,sahu,sijda,sezda,sejda,sijda,vul</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            সালাত সর্বদা শুদ্ধরূপে আদায় করা কারো পক্ষেই সম্ভব না। এমনকি স্বয়ং রাসুল(সঃ)-ও সালাতে ভুল করেছেন। তবে এরূপ ভুল সংশোধনের উপায় রয়েছে। আর সেটি হলো সাহু সেজদা দেওয়া। এ সম্পর্কে হাদীসসমূহঃ
         </p>
         <p class="three">
            ১। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’রাকাআত আদায় করে সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে ফেললেন। যুল-ইয়াদাইন তাঁকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সালাত কি কম করা হয়েছে? না আপনি ভুলে গেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (অন্যদের লক্ষ করে) বললেনঃ যুল-ইয়াদাইন কি ঠিকই বলছে? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং আরও দু’রাকাআত সালাত আদায় করলেন, <span class="
            highlight">তারপর সালাম ফিরালেন এবং তাকবীর বলে স্বাভাবিক সিজদার মত অথবা তার চাইতে দীর্ঘ সিজদা করলেন।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৭১৪]
         </p>
         <p class="three">
            ২। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের নিয়ে যুহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি প্রথম দু’ রাকাআত পড়ার পর না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। মুকতাদীগণ তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবে সালাতের শেষভাগে মুকতাদীগণ সালামের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসাবস্থায় তাকবীর বললেন এবং <span class="highlight">সালাম ফিরানের পূর্বে দু’বার সিজদা করলেন, পরে সালাম ফিরালেন।</span>[সহিহ বুখারি ১০/৮২৯]
         </p>
         <p class="three">
            ৩। একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের সালাত পাঁচ রাকআত পড়ে ফেললে তাঁকে বলা হ’ল, সালাতে কি বৃদ্ধি ঘটেছে না আপনি এতে ভুল করেছেন? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালামের পর সিজদা সাহু করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাবার্তার পর সিজদা সাহু করেছেন।[ইবনু মাজাহ ১২০৫, ১২১১, ১২১২, ১২১৮, বুখারি ও মুসলিম, তিরমিযি ২/৩৯২-৩৯৩]
         </p>
         <p class="three">
            ৪। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ নামাযের মধ্যে সন্দিহান হয়ে এমন অবস্থায় পতিত হবে যে, তিন না চার রাকাত আদায় করেছে তা ঠিক করতে পারে না, তখন সে আরো এক রাকাত নামায পূরণ করে বসা অবস্থায় সর্বশেষ সালামের পূর্বে ভুলের জন্য দুইটি সিজদা করবে। যদি শেষ রাকাত পঞ্চম রাকাত হয়, তবে এই দুটি সিজদা তার জের হিসাবে পরিণত হবে এবং যদি তা চতুর্থ রাকাত হয়, তবে এই দুটি সিজদা শয়তানকে অপমান করার জন্য হবে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ২/১০২৬]
         </p>
         <p class="exp">
            ( সাহু সেজদার পদ্ধতি দুই রকম। হয় সালামের পূর্বে না হয় সালামের পর দুইটি সেজদা দিতে হবে। আর এই দুই সেজদার পর বৈঠকে বসা তথা তাশাহ্‌হুদ বা দরূদ পাঠের প্রয়োজন নেই। )
         </p>
      </div>
      </li>
      <li>
         <input type="checkbox" name="accordion" id="twentyseven">
         <label for="twentyseven">মহিলাদের ঋতুঃস্রাবকালীন করনীয়<div class="dsp">mohila,mohilader,der,periods,menstruation,salat,namaz,roza,roja,ritu,masik</div></label>
      <div class="content">
         <p>
            ইসলামে নারীদেরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ্‌ তায়ালা কুরআনে বলেনঃ
         </p>
         <p class="two">
            وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَىٰ وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে।[৩১ঃ১৪]
         </p>
         <p class="two">
            মায়ের সম্মান করা নিয়ে মুসলিম শরীফের হাদীসঃ
         </p>
         <p class="three1">
            এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! মানুষের মধ্যে আমার সদ্ব্যবহারের সর্বাপেক্ষা হাকদার ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তারপরও তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপর তোমার পিতা।[সহিহ মুসলিম ৪৬/২৫৪৮]
         </p>
         <p class="two">
            মহিলাদের একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা পার হওয়ার পর তারা গর্ভধারণের উপযোগী হয়। এই সময় তাদের ঋতুস্রাব বা মাসিকের আবির্ভাব হয়। ইসলামে ঋতুস্রাবকালীন একজন মহিলার জন্য কিছু বিধি-বিধান রয়েছে। রাসুল(সঃ) এর হাদীস অনুযায়ী এগুলোঃ
         </p>
         <div class="subtopic">স্বামীর সাথে মেলামেশা করা</div>
         <p class="three">
            ১। মূসা ইবনু ইসমাঈল ..... আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের অবস্থা এই যে, তারা ঋতুবতী স্ত্রীদের ঋতুর সময় ঘর হতে বের করে দেয় এবং তাদের সাথে একত্রে পানাহার ও এক ঘরে বসবাস করে না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে আল্লাহ্ তাআলা এ ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ
         </p>
         <p class="two">
            وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ
         </p>
         <p class="one1">
            <u>অর্থ-</u> আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক।[২ঃ২২২]
         </p>
         <p class="three1">
            অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সংগম ছাড়া ঋতু চলাকালীন একত্রে এক ঘরে বসবাস এবং সব কিছুই করতে পার।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৫৮, বুখারি, মুসলিম, তিরমিযি, ইবনু মাজাহ্‌, নাসাঈ]
         </p>
         <p class="three">
            ২। মুসাদ্দাদ .... আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় হাড়ের মাংসের কিছু অংশ আহার করে বাকী অংশ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দিতাম। তিনি ঐ স্থানেই মুখ লাগিয়ে খেতেন, যেখান থেকে আমি খেয়েছি। আমি পানীয় পান করে ঐ পাত্র তাকে দিতাম। তিনি ঐ স্থানে মুখ লাগিয়ে পানীয় পান করতেন, যেখানে মুখ দিয়ে আমি পান করেছি।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৫৯, মুসলিম, ইবনু মাজাহ, নাসাঈ]
         </p>
         <p class="three">
            ৩।  মূহাম্মাদ ইবনু কাছীর .... আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার ঋতু চলাকালীন আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন মজীদ তিলাওয়াত করতেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৬০, বুখারী, মুসলিম, ইবনু মাজাহ, নাসাঈ]
            </p>
            <p class="one1">
            কুতায়বা (রহঃ) ..... আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে হাত বাড়িয়ে মসজিদ থেকে একটি চাটাই দিতে বললেন। আমি বললাম আমি তো হায়য বিশিষ্ট। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমার হাতে তো আর হায়েয নেই।[সহিহ তিরমিযি ১/১৩৪, ইবনু মাজাহ ৬৩২, মুসলিম, আবু-দাউদ] 
         </p>
         <p class="three">
            ৪। ইয়াযীদ .... মায়মূনা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ঋতুবতী স্ত্রীরদের কারো সাথে একত্রে মেলামেশা করতেন এমতাবস্থায়- যখন তাদের (স্ত্রীদের) উভয় রান বা অর্ধভাগ পর্যন্ত আবৃত থাকে।
            </p>
            <p class="one1">
            মুসলিম ইবনু ইব্রাহীম .... আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কেউ ঋতুবতী হলে তাকে পাজামা পরিধানের নির্দেশ দিতেন। অতঃপর তাঁর সাথে একত্রে শয়ন করতেন।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ (১/২৬৭,২৬৮), বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, নাসাঈ]
         </p>
         <div class="subtopic">নামায হতে বিরত থাকা</div>
         <p class="three">
            ৫। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এক মহিলার (হায়েয-নিফাসের জন্য নির্ধারিত সময়ের পরেও) রক্ত প্রবাহিত হত। উম্মে সালামা (রাঃ) ঐ স্ত্রীলোকের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট বিধান জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেন, <span class="highlight">ঐ স্ত্রীলোকটির কর্তব্য হল, ইতিপূর্বে প্রতি মাসের নির্ধারিত যে কয়দিন সে ঋতুবতী থাকত- তা নির্দ্ধারণ করা। অতঃপর সে ততদিন নামায আদায় করা থেকে বিরত থাকবে।</span> পূর্ব নির্দ্ধারিত পরিমাণ সময় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সে গোসল করে লজ্জাস্থানে মজবুত ভাবে কাপড়ের পট্টি বেঁধে নামায আদায় করবে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৭৪]
         </p>
         <p class="three">
            ৬। যখন কোন মহিলার হায়েয-নিফাসকালীন পূর্ব নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হবে- <span class="highlight">তখন সে গোসল করে নামায আদায় করবে।
            এরপর প্রত্যেক নামাযের জন্য কেবলমাত্র উযূ (ওযূ) করতে হবে।</span> একবার উযূ (ওযূ) করে এক ওয়াক্ত নামায আদায়ের পর যদি রক্ত প্রবাহিত হতে দেখা যায়- তবে পরের ওয়াক্তের নামায আদায়ের পূর্বে পুনরায় উযূ করবে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৭৫,২৯৭,৩০৫] 
         </p>
         <div class="subtopic">কাপড়ে রক্ত লাগলে</div>
         <p class="three">
            ৭।  মুসাদ্দাদ .... আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার হায়েয অবস্থায় আমি এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে একই চাঁদরের নীচে ঘুমাতাম আমার শরীর হতে নির্গত কোন কিছু অর্থাৎ <span class="highlight">হায়েযের রক্ত যদি তাঁর কাপড়ে লেগে যেত তবে তিনি শুধু ঐ স্থানটুকু ধুয়ে ফেলতেন। অতঃপর তা পরিবর্তন না করে সেই কাপড়েই নামায পড়তেন।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৬৯]
            </p>
            <p class="one1">
            ইবনু আবী উমর ..... আসমা বিনত আবী বকর রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক মহিলা <span class="highlight">কাপড়ে হায়যের রক্ত লাগলে</span> এর পাক করা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেছিলেনঃ <span class="highlight">প্রথমে তা খুচিয়ে তুলে ফেল, পরে পানি ভিজিয়ে আঙ্গলে রগড়ে নাও এরপর তাতে পানি ঢেলে দাও আর তা পরে সালাত আদায় করতে থাক।</span>[সহিহ তিরমিযি ১/১৩৮, ইবনু মাজাহ ৬২৯, বুখারি ও মুসলিম, আবু-দাউদ ১/৩৬১]
         </p>
         <div class="subtopic">মাসিক শেষে সালাত</div>
         <p class="three">
            ৮। মূসা .... মুআযা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করে যে, ঋতুবতী স্ত্রীলোকেরা ঋতুকালীন সময়ে পরিত্যক্ত নামাযের কাযা আদায় করবে কি? তিনি বলেন, তুমি কি হারূরা গ্রামের অধিবাসিনী? (জেনে রেখ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়ে আমরা ঋতুগ্রস্ত হলে, ঐ সময়ের কাযা নামায আদায় করতাম না এবং উক্ত সময়ের কাযা নামায আদায়ের জন্য আমরা আদিষ্টও হইনি। আল-হাসান ইবনু আমর ..... আয়িশা (রাঃ) এর সূত্রে উপরোক্ত হাদীছের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে এবং এই সূত্রে আরো আছে, আমাদেরকে <span class="highlight">আমাদের ঋতুকালীন সময়ের কাযা রোযা আদায়ের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং ঐ সময়ের কাযা নামায আদায়ের জন্য বলা হয়নি।</span>[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৬২-২৬৩, বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, নাসাঈ]
         </p>
         <p class="three">
            ৯। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় জনৈক মহিলা এস্তেহাযাগ্রস্ত<span class="highlight">(ঋতুস্রাব নয় বরং বিশেষ শিরা হতে রক্ত নির্গত) হলে তাকে নির্দেশ দেয়া হয় যে, সে যেন আসরের নামায তার প্রারম্ভিক সময়ে এবং যুহরের নামায তার শেষ সময়ে একই গোসলে আদায় করে।</span> একই ভাবে সে যেন মাগরিবের নামায বিলম্বিত করে এবং এশার নামায তার প্রারম্ভিক সময়ে একই গোসলে আদায় করে এবং ফজরের নামায আদায়ের জন্য একবার গোসল করে।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/২৯৪]
         </p>
         <p class="three">
            ১০। রক্তস্রাব হতে পবিত্রতা অর্জনের পর আমরা হলুদ ও মেটে রং-এর স্রাব দেখলে তাকে হায়েয হিসাবে গণনা করতাম না।[সহিহ সুনান আবু-দাউদ ১/৩০৭]
         </p>
         এই হলো ঋতুস্রাবকালীন মহিলাদের জন্য পারিবারিক মেলামেশা,নামায,রোযা ও পবিত্রতার নির্দেশনা।
      </div>
      </li>
   </ul>   
        </div>
    </div>
   </div> 
   <script>

          var list = document.getElementById("list");
          list.style.maxHeight = "0px";
          function togglemenu(){
      if(list.style.maxHeight == "0px")
            {
               list.style.maxHeight = "300px";
            }
       else
            {
               list.style.maxHeight = "0px";
            }                  
         }
   </script>
   <script>
      var loader = document.getElementById("container");     
      function closecontainer(){
            document.getElementById("container").style.display = 'none';
        }
        window.addEventListener("load",function(){
            setTimeout(closecontainer, 1000);
            
        });
   </script>
   <script>
      const cls = document.querySelector(".close");
      const bar = document.getElementById("search0");
      const insd = document.querySelector(".search-wrapper");
      const icn = document.getElementById("srch0");
      
      cls.addEventListener("click" ,(e) => {
         cls.classList.remove("close1");
         bar.classList.remove("animate");
         insd.classList.remove("plchldr");
         icn.classList.remove("active");
         e.preventDefault();
      })
   
   </script>
   <script>
      const rmv = document.querySelector(".close");
      const button = document.querySelector(".srch");
      const sch = document.getElementById("search0");
      const placeholder = document.querySelector(".search-wrapper");
      
      button.addEventListener("click", (e) => {
         rmv.classList.add("close1");
         button.classList.add("active");
         placeholder.classList.add("plchldr");
         sch.classList.add("animate");
         e.preventDefault();
      })
   </script>
</body>
</html>